বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: বঙ্গসন্তানের সাফল্যের মুকুটে জুড়ল নয়া পালক। বিশ্বের ২ শতাংশ সেরা বিজ্ঞানীদের মধ্যে জায়গা করে নিলেন কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের (Krishnanagar Government College) অধ্যাপক কালীদাস দাস। ন্যানো ফ্লুইডের উপরে গবেষণা করে এই জায়গা দখল করেছেন তিনি। তাঁর ন্যানো ফ্লুইড সংক্রান্ত গবেষণা বিশ্বব্যাপী প্রশংসা কুড়িয়েছে।
ন্যানো ফ্লুইড (Nano Fluid) এক ধরনের তরল পদার্থ। গাড়ি, কম্পিউটার, মোবাইলের মতো যন্ত্রাংশের পাশাপাশি চিকিৎসা ক্ষেত্রেও ন্যানো ফ্লুইড নানা কাজে লাগানো হয়। আগে মোবাইল, কম্পিউটার বেশিক্ষণ চালালে গরম হয়ে যেত। তবে বর্তমানে ন্যানো ফ্লুইড চিপ আকারে ব্যবহারের ফলে সেই সম্ভাবনা কমে গিয়েছে অনেকটাই। আবার চিকিৎসা ক্ষেত্রেও ন্যানো ফ্লুইডের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। টিউমার কিংবা ক্যানসারের চিকিৎসায় সঠিক কোষে ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার জন্য ন্যানো ফ্লুইডের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এই ন্যানো ফ্লুইড নিয়ে গবেষণা অধ্যাপক কালীদাস দাসের (Professor Kalidas Das)। ২০০৮ সাল থেকে সে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এ সম্পর্কিত গাণিতিক মডেল তৈরি করেছেন ওই অধ্যাপক। ঠিক কীভাবে ন্যানো ফ্লুইড ব্যবহার করা যায় সফটওয়্যারের মাধ্যমেও তা প্রকাশ করেছেন তিনি। তাঁর গবেষণা গত বছর পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশিত হয়েছে। যা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। আর ওই গবেষণাপত্র অনুযায়ীই বিশ্বের সেরা ২ শতাংশ বিজ্ঞানীদের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছেন কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের অধ্যাপক।
[আরও পড়ুন: মহাকাশে ঢিল ছোঁড়া দুরত্বে চলে এসেছিল ভারত ও রাশিয়ার উপগ্রহ! অল্পের জন্য এড়াল সংঘর্ষ]
নদিয়ার ধানতলা থানার এড়ুলির কৃষক পরিবারে জন্ম কালীদাস দাসের। সরিষাডাঙা শ্যামাপ্রসাদ হাই স্কুলে পড়াশোনা করেন তিনি। তারপর মাস্টার্স। ফ্লুইড ডায়নমিকসের উপর পিএইচডি করেন। এরপর চাকদহের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। কয়েক বছর পর কল্যাণীর এক কলেজ দিয়েই অধ্যাপনায় হাতেখড়ি। ২০১৪ সালে কোচবিহারের আচার্য ব্রজেন্দ্রনাথ শীল কলেজে অধ্যাপনা করতেন। ২০১৮ সাল থেকে কৃষ্ণনগর গর্ভমেন্ট কলেজে অধ্যাপনা করছেন তিনি। পড়ুয়াদের পড়াশোনা, কলেজের অন্যান্য দায়দায়িত্ব সামলেই চালিয়ে যান গবেষণা। কলেজ শেষ হওয়ার পর সেখানে বসেই গবেষণার নেশায় বুঁদ হয়ে যেতেন বলেই জানান অধ্যাপক। তাঁর সাফল্যে বেজায় খুশি টিচার কাউন্সিল অফ কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের সম্পাদক পিন্টু বন্দ্যোপাধ্যায়। অধ্যাপক কৃষ্ণদাস দাসের জন্য গর্বিত বলেই জানান তিনি।