রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: জলঙ্গি নদীর প্রবাহপথের মাঝখানে ও তীরে আবারও মাটি দিয়ে উঁচু করে অবৈধভাবে তৈরি করা হয়েছে চাষের জমি। যা নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ পরিবেশপ্রেমীরা। তেহট্ট ১ ব্লকের নিশ্চিন্তপুর তারানগর-সহ বিভিন্ন এলাকায় এই দৃশ্য নজরে এসেছে। প্রতি বছর একই দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়। তা সত্ত্বেও সেচ বিভাগ কোনও পদক্ষেপ করেনি বলেই অভিযোগ।
তেহট্ট ১ ও ২ ব্লকের পাশাপাশি তেহট্ট মহকুমার একটা বড় অংশের প্রধান নদী জলঙ্গি। তবুও এই নদীকে ঘিরে বারবার অবহেলার ছবি সামনে এসেছে। সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে পুরোপুরিভাবে এই নদীর প্রাণ ফিরিয়ে আনতে কঠোর ব্যবস্থা নিতে মোটেও দেখা যায় না ব্লক বা মহকুমা প্রশাসনের তরফে। আর এই কারণে সমাজের এক শ্রেণির মানুষ, এমনটাই অভিযোগ পরিবেশ কর্মীদের। যার উদাহরণ বর্তমানে নিশ্চিন্তপুর ও তারানগরে গেলেই দেখা যাবে। এর আগেও এই এলাকায় একই পদ্ধতিতে চাষের জমি তৈরি করে চাষের ঘটনা ঘটেছে। গরম পড়ামাত্রই জল কমে নদীর মাঝখানে হালকা চর পড়েছে।
সেখানেই নদীর গতিপথ আটকে আগের থেকে বেশি মাটি দিয়ে উঁচু করে চাষের জমি তৈরি করে শুরু হয়েছে চাষ। এই জলঙ্গি নদী বাঁচাতে এগিয়ে এসেছে জেলার একাধিক সংগঠন। প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে নদী বাঁচাতে দেওয়া হয়েছে একাধিক আবেদনপত্র ও স্মারকলিপি। পরিবেশ কর্মীরা জানিয়েছেন, বেশ কয়েকমাস আগে নদীতে অবৈধভাবে নির্মিত বাঁধ তুলতে সরব হয়েছিল তারা। কিন্তু ওই পরিবেশ কর্মীদের অভিযোগ, নদী বাঁচাতে এতকিছুর পরেও সমাজের একশ্রেণির মানুষ নিশ্চিন্তপুরের নদীর মাঝখানে সামান্য চরের উপর
মাটি ফেলে সেই জমি উঁচু করে রীতিমতো চাষাবাদ শুরু করেছে।
জানা গিয়েছে, তারানগর কুলিতলাপাড়া থেকে নিশ্চিন্তপুর দক্ষিণ হালদারপাড়া পর্যন্ত এই নদী যেন চাষের জমিতে পরিণত হয়েছে। যা অন্যায়, এমনকী অবৈধ। এতে নদীর গতিপথ সংকীর্ণ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নানা দিক দিয়ে ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁদের। তাঁদের দাবি, ওই এলাকায় গেলে প্রথমে দেখলে মনে হবে চাষের জমি। কিন্তু একটু এগোলেই বোঝা যাবে, নদীবক্ষে চাষ হচ্ছে। কোথাও কোথাও নদীর নাম নিশানা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আবার কোথাও নদী যেন নিকাশি নালায় পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নিশ্চিন্তপুরের এই এলাকা নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক হয়েছিল। যেখানে ব্লক আধিকারিকের পাশাপাশি সেচ ও মৎস্যবিভাগের কর্তারা ছিলেন। পরিবেশ কর্মীদের অভিযোগ, জল কমতেই যখন এমন দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়, সেখানে সব কিছু জানার পরেও ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না সেচ বা মৎস্যবিভাগকে। এবিষয়ে দেবগ্রাম সেচ বিভাগীয় সহকারী ইঞ্জিনিয়র মহম্মদ সামসুদ্দিন বলেন, প্রশাসনিকভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করব।