shono
Advertisement

এবার শীতে আপনার গন্তব্য হোক ‘লাজুক’কুমাই

মখমলি সবুজ কার্পেটের উপর দিয়ে একবার হাঁটবেন নাকি? The post এবার শীতে আপনার গন্তব্য হোক ‘লাজুক’ কুমাই appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 07:12 PM Dec 08, 2018Updated: 07:12 PM Dec 08, 2018

সৌমেন জানা: আদিগন্ত আকাশের সীমানা জুড়ে হিমেল হিমালয়ের বিস্তার। তারই বুকে মখমলি সবুজ কার্পেট বিছানো চা-বাগান। ভ্রমণপ্রেমীর কাছে এই অল্প চেনা নিসর্গের নাম কুমাই। ডুয়ার্সের এই পাহাড়ি গ্রামটি যেন নিজেকে লুকিয়ে রেখেছে আধুনিক জগৎ থেকে। সামসিং এবং রকি আইল্যান্ডের ডানদিকে পাহাড়ের মাথার ওপর এই ছোট্ট গ্রামটি। নিউ মাল স্টেশন থেকে কুমাই যাওয়ার প্রতিটি বাঁকে অপেক্ষা করে রোমাঞ্চ। যাওয়ার পথে পড়বে চাপড়ামারি অভয়ারণ্য। ডুয়ার্সের চা-বাগানগুলো পেরিয়ে জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে শাল, সেগুনের গন্ধমাখা পথ। গাড়ি থামিয়ে একবার নামলে আর ফিরতে ইচ্ছে করবে না। একটু এদিক-ওদিকচোখ বোলালেই দেখা মিলতে পারে হরিণ, ময়ূর আর বানরের।

Advertisement

[রামায়ণের পর ‘পঞ্জ তখত এক্সপ্রেস’, শিখ তীর্থযাত্রীদের জন্য রেলের নয়া ট্রেন]

নাম না জানা ঝোরার জলের কলকল শব্দ গাড়ি থামাতে বাধ্য করবে। পায়ে পায়ে এগিয়ে গেলে সামনে দেখা মেলে মূর্তি নদীর। পাথরে ধাক্কা খেয়ে বয়ে চলেছে আপনমনে। চালসা রেঞ্জের সিপচু বিট, জলঢাকা রেঞ্জের খুমানি বিট। এসব পেরিয়েই যেতে হয় কুমাই। জঙ্গলের বুক চিরে চলে গিয়েছে কালো পিচের রাস্তা, পাশে ছোট ছোট গ্রাম। বেশ খানিকটা চড়াই পথ পেরিয়ে আপনি পৌঁছে ‌যাবেন ছোট্ট ছিমছাম কুমাইতে। কুমাই বর্তমানে কালিম্পং জেলার (আগে দার্জিলিং জেলার ছিল) মধ্যে পড়ে এবং ঝালং থানার অন্তর্ভুক্ত। গ্রামটিতে প্রায় দশ হাজার লোকের বসবাস। খুবই সুন্দর ছবির মতো পরিষ্কার-পরিছন্ন গ্রাম। দূরে পূর্বদিকে দেখা যায় ভুটানের পাহাড় এবং বাংলার বিভিন্ন সমভূমির বনাঞ্চল। দূর থেকে সমতলভূমির জলঢাকা নদীকে সাপের মতো দেখতে লাগে। পশ্চিমদিকে অনেকটা নীচে আছে সামসিং এবং রকি আইল্যান্ড। এখানকার সানসেট ভিউ পয়েন্ট থেকে খুব সুন্দর সূর্যাস্ত দেখা যায়। সন্ধের পর মনে হয় কেউ যেন হাজার বাতি জ্বালিয়েছে আকাশের বুকে। আকাশে এত তারা আছে! শহরে থেকে বুঝতে পারি না। তারাগুলো মনে হয় যেন কত কাছে!

সময় যেন থেমে গিয়েছে এখানে এসে। শহুরে কোলাহল মুখর কর্মব্যস্ত জীবন এখানে এসে প্রাণ ভরে শ্বাস নেয়, পাখা মেলে উড়তে চায় আকাশে। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা, পাহাড়ের কোলে ঘুরে বেড়ানো, নদীতে মাছ ধরা-হাজারো অ্যাক্টিভিটি, সঙ্গে পেটপুরে খাওয়াদাওয়া, দেদার আড্ডা আর গোর্খা সংস্কৃতির সঙ্গে মিলেমিশে ‌যাওয়া। আপনি বুঝতেই পারবেন না সময় কীভাবে কেটে ‌যাচ্ছে। কুমাই পার্ক, লালি গুড়াস পয়েন্ট, গ্রিন ভ্যালি, ২০০ বছরের প্রাচীন গুম্ফা এবং দূরে নীলচে ভুটানের নানা ভ্যালি ভিউ দেখে আবিষ্কার করুন এক অনন্য ডুয়ার্সকে।

[বিপদসীমা বোঝাতে দিঘার সমুদ্রে বেলুন ভাসাবে প্রশাসন]

কীভাবে যাবেন: শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে নিউ মাল জংশন। নিউ মাল জংশন থেকে আপার কুমাইয়ের দূরত্ব ৩৫ কিলোমিটার। এখান থেকে শেয়ার জিপ পেয়ে যাবেন। এছাড়া প্রচুর প্রাইভেট গাড়ি পাবেন, যা বুক করে পৌঁছে যেতে পারেন। মেটেলি হয়ে সামসিং-এর রাস্তায় কিছুটা গিয়ে ডানদিকে ঘুরলেই কুমাইয়ের রাস্তা পড়বে। আরও একটা রাস্তা আছে চাপড়ামারি জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে। দুটো রাস্তার সৌন্দর্য দু’রকম। দূরত্ব কম-বেশি প্রায় সমান।

কোথায় থাকবেন: এখানে থাকার জন্য আপার কুমাইতে রয়েছে কুমাই গোর্খা হোমস্টে। কুমাইয়ের প্রথম হোমস্টে এটি। এছাড়াও রয়েছে সাহিল হোমস্টে।

কখন যাবেন: ডুয়ার্সের রূপ দেখতে দেখতে সারা বছরই যাওয়া যায়। বর্ষাকালে বর্ষণমুখর ডুয়ার্স অনন্য। সদ্যস্নাত কিশোরীর মতো সে লাজুক। গ্রীষ্মে সবুজ পাহাড়ির মধ্যে দিয়ে তিরতির করে বয়ে যায় খরস্রোতা নদী। এই সময় পরিবেশ আরও মোহময় আরও মধুর। তবে বর্ষাকালে রাস্তা খারাপ থাকে, ধসেরও সম্ভাবনা থাকে। এই সময় না যাওয়াই ভাল।

মনে রাখবেন, কুমাই একটি গ্রাম। মূলত সবাই নেপালি। গ্রামবাসীরা অত্যন্ত অতিথিবৎসল। ভাষাগত সমস্যা এখানে আপনার বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। সবাই যেন আপনার অতি পরিচিত পরমাত্মীয়। গ্রামটি অত্যন্ত পরিষ্কার। যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলবেন না।

The post এবার শীতে আপনার গন্তব্য হোক ‘লাজুক’ কুমাই appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement