বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: বিজেপির ‘পরিবর্তন যাত্রা’র রথে ছিল না শ্রীচৈতন্যদেবের কোনও ছবি। অথচ চৈতন্যভূমি নবদ্বীপধাম থেকেই তা শুরু হয়েছে। আর তাতেই চৈতন্যদেব ও নবদ্বীপের মানুষকে অপমান করা হয়েছে বলে সরাসরি অভিযোগের আঙুল তুললেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। নদিয়ার নবদ্বীপে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার সভার পরের দিন রবিবার সরকারপাড়া নিশান ক্লাবের মাঠে ছিল তৃণমূলের জনসভা। সেখান থেকেই বিজেপির বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছেন তিনি।
এদিন সভা শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখী হয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, ”শ্রীচৈতন্যদেবের স্মৃতিবিজড়িত নবদ্বীপ ধামকে জেপি নাড্ডার (JP Nadda) নেতৃত্বে বিজেপি রাজনৈতিক মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করেছে। চৈতন্য মহাপ্রভুকে অপমান করা হয়েছে। নবদ্বীপধাম থেকে যে রথ বেরিয়েছে, তাতে চৈতন্যদেবের ছবিই নেই। কয়েকজন নেতার ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। ওরা যে বাস বা লরি যাত্রা বার করেছে, সেখানে চৈতন্যদেবের ছবি, তাঁর বার্তা, শিক্ষা, সংস্কৃতি, তাঁর সামাজিক ঐক্যের বার্তা, এগুলি সামনে রাখা উচিত ছিল। নাড্ডাজির ভাষণে এসবের কোনও স্থান ছিল না। বরং কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি করা হয়েছে। ফলে চৈতন্যদেব ও নবদ্বীপের মানুষকে অপমান করা হয়েছে।” তাঁর আরও অভিযোগ, এর আগে নেতাজির জন্মদিনে তাঁরা ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিয়ে আপত্তিকর, অসম্মানজনক পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। সেই সময় নেতাজিকে অপমান করা হয়েছিল। আর এখন নাড্ডার উপস্থিতিতে শ্রী চৈতন্যদেবকে অপমান করা হয়েছে। এরপর কুণাল ঘোষের দাবি তোলেন, ”নাড্ডার উচিত, অবিলম্বে নবদ্বীপের মানুষের কাছে ক্ষমা চাওয়া। উনি যেখানেই থাকুন, বিবৃতি দিয়ে ক্ষমা চান। কারণ, এটা গোটা নবদ্বীপের সেন্টিমেন্ট। নবদ্বীপের ঘরে ঘরে আওয়াজ উঠেছে।”
[আরও পড়ুন: ‘মতুয়াদের ভাঁওতা দিতে আসছেন’, ঠাকুরনগরে অমিত শাহর সভা নিয়ে কটাক্ষ মমতা ঠাকুরের]
কৃষি আইন বাতিল, কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতির প্রতিবাদে নবদ্বীপ শহর তৃণমূল কংগ্রেসের ডাকে আয়োজিত ওই জনসভায় উপস্থিত হয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার-সহ অন্যরা। ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক পুন্ডরীকাক্ষ সাহা ও নবদ্বীপ পুরসভার মুখ্য প্রশাসক বিমান কৃষ্ণ সাহা। সভা শেষে সাংবাদিকদের সৌগত রায় দুই সভার তুলনা করে বলেন,”নাড্ডার সভায় ৫টি জেলা থেকে লোক আনা হয়েছিল। ওই সভায় ২০ হাজারের মত লোক হয়েছিল। আমাদের সভায় তার থেকে বেশি লোক হয়েছে।ওরা চৈতন্যদেবের নামের সুবিধা নিতে এসেছিল। কিন্তু কিছু সুবিধা পাবে না। ভোট ঘোষণা হওয়ার আগেই হনুমানের মত এ রাজ্যে বিজেপি নেতারা লাফিয়ে লাফিয়ে আসছেন।”
[আরও পড়ুন: উধাও স্বস্তি, সংক্রমণ কমলেও ফের রাজ্যে বাড়ল করোনায় মৃতের সংখ্যা]
হলদিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির সভা প্রসঙ্গে সৌগত রায়ের বক্তব্য, ”হলদিয়া যে প্রজেক্ট হচ্ছে, তা শেষ হতে ১০ বছর সময় লাগবে। যদিও সেটা দেখানোর সুযোগ নিয়ে মোদি বাংলায় এসেছেন। ওঁর লজ্জাও হয় না । দেশের ২৯ টি রাজ্যের কোথাও না গিয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়ে শুধু এই রাজ্যেই বারবার আসছেন।”