চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর প্রথমবার বিদ্যুতের আলোয় ঝলমল করে উঠল হলদিয়ার দুই গ্রাম-বিষ্ণুরামচক এবং সাউতানচক। সোমবার বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাসের আবহে গ্রামের বিদ্যুৎ সংযোগ ঘটালেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। প্রথম আলো প্রাপ্তির আনন্দে চওড়া হাসি দেখা গেল দুটি গ্রামের পাঁচ হাজার মানুষের মধ্যে। নেতাজির জন্মবার্ষিকীতে বিদ্যুৎ এল নন্দীগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায়।
যাঁর উদ্যোগে এমন এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হলেন গ্রামবাসীরা, সেই বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এদিন গ্রামে হাজির থাকতে পারেননি। তবে তিনি শিলিগুড়ি থেকে ফোনে বক্তব্য রেখেছেন। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জানান, ”ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ চালু হল। সোমবার, ২৩ জানুয়ারি নেতাজির জন্মদিনে হলদিয়ার বিষ্ণুরামচক ও সৌতনচক গ্রামে বাড়ি বাড়ি বিদ্যুতের আলো জ্বলল। স্বাধীনতার পর এই প্রথম এল বিদ্যুৎ। গ্রামে ঘুরলাম। উৎসবের পরিবেশ। বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস শিলিগুড়ি থেকে ফোনে ভাষণ দিলেন। পরের মাসে তিনি এখানে আসবেন। বহু বাড়িতে গেলাম। হইহই কাণ্ড। গত পুরভোটে বিজেপির প্রার্থী জয়ন্তী মল্লিকের বাড়িতেও গেলাম। সেই দিদিও উচ্ছ্বসিত।”
[আরও পড়ুন: ‘কুলদেবতা’ নেতাজি, জন্মবার্ষিকীতে দেওয়া হয় সিঙারা ভোগ, জানেন পূর্বস্থলীতেও গিয়েছেন সুভাষ বসু?]
৪ ডিসেম্বর মাখনবাবুর বাজার মোড়ে চায়ের দোকানে বসে গ্রাম দু’টিতে বিদ্যুৎ না থাকার কথা জানা মাত্র বিষ্ণুরামচকে যান কুণাল ঘোষ। সেই গ্রামে দাঁড়িয়ে বিদ্যুৎ মন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে বিদ্যুৎ আনার প্রক্রিয়া শুরু করেন। নতুন বছরের ১ জানুয়ারি বিষ্ণুরামচকে দু’টি ঘরে আলো জ্বালিয়েছেন তিনি। মাত্র ২৭ দিনে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছিল সেই বিদ্যুৎ। আর সোমবার সাউতানচক এবং বিষ্ণুরামচকের ৫০০ ঘরে পৌঁছে দিলেন বহু কাঙ্খিত আলো। সেই সঙ্গে নন্দীগ্রামের ভার্জিন মৌজার দশটি ঘরেও এদিন তৃণমূল রাজ্য সম্পাদকের হাতে বিদ্যুৎ সংযোগ ঘটল।
[আরও পড়ুন: ‘দিদির দূত, নেতা-মন্ত্রীদের গ্রামে ঢোকা নিষেধ’, ভোটের আগে দেওয়াল লিখনে ছয়লাপ মালদহের গ্রাম]
এদিন কুণাল ঘোষ বলেন,”হলদিয়ার বিষ্ণুরামচক এবং সাউতানচক গ্রাম দু’টিতে এতদিন কেবল প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অনেকে। বামেরা চৌত্রিশ বছরে পারেনি। শুভেন্দু অধিকারী ভুয়ো কাগজ দেখিয়ে বিদ্যুতের নামে মিথ্যাচার করেছে। এখন বিদ্যুৎ দিতে গিয়ে হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষের বাধা ছিল। কিন্তু আধিকারিকদের একাংশের সদিচ্ছা এই উদ্যোগের পিছনে ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার মানুষের পাশে উন্নয়নের ডালি নিয়ে রয়েছে। মানুষের পাশে আছে বলেই বিদ্যুৎহীন গ্রামে বিদ্যুৎ দিয়েছে ।” হলদিয়া পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে এক সময় বিজেপি প্রার্থী ছিলেন জ্যোৎস্না মণ্ডল। কুণালবাবু এদিন তাঁর বাড়িতে গিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ ঘটিয়েছেন । জ্যোৎস্নাদেবী তাতে আপ্লুত। তিনি প্রতিক্রিয়ায় বলেন,”উন্নয়নে রাজ্যের তৃণমূল সরকার রাজনীতি করে না। আমি তার জ্বলন্ত উদাহরণ ।” এলাকায় সিপিএমের বাড়িতেও বিদ্যুৎ গিয়েছে।