shono
Advertisement

রাজ্যের আলোচনার প্রস্তাব ফেরালেন কুড়মিরা, অবরোধস্থল থেকেই ভারচুয়াল বৈঠকের দাবি

আরও জটিল হচ্ছে কুড়মি আন্দোলন। রবিবার আদ্রা ডিভিশনে বাতিল বহু ট্রেন।
Posted: 09:57 PM Apr 08, 2023Updated: 09:57 PM Apr 08, 2023

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া ও খড়গপুর: রাজ্যের তরফে মুখ্যসচিবের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে নিজেদের দাবিতেই অনড় কুড়মিরা। উৎসবের মুখে জঙ্গলমহলের জনজীবন বিপর্যস্ত করে পুরুলিয়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরে আদিবাসী কুড়মি সমাজ ও কুড়মি সমাজ যথাক্রমে যে রেল ও সড়ক অবরোধ করছে তা শনিবার চতুর্থ দিনে পড়ে। এই অবরোধ আন্দোলন চার দিন গড়িয়ে যেতেই জঙ্গলমহলের সাধারণ মানুষজনের কথা ভেবে পুরুলিয়ার জেলাশাসক রজত নন্দা ও পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে রাজ্যের আলোচনার প্রস্তাব কুড়মিদের কাছে পাঠানো হয়। সেই আলোচনা প্রস্তাবে রাজ্য জানিয়েছিল, কর্মসূচি তুলে নেওয়া হলে কলকাতায় মুখ্যসচিব তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। কিন্তু এই প্রস্তাবে রাজি হননি তাঁরা।

Advertisement

বরং প্রশাসন তথা রাজ্যকে আরও চাপে ফেলে তাঁরা জানিয়েছেন, বৈঠক করতে হলে পুরুলিয়ার কুস্তাউর ও পশ্চিম মেদিনীপুরের খেমাশুলিতে দুই অবরোধ স্থলে উপস্থিত থেকেই
মুখ্যসচিবের সঙ্গে তাঁরা ভারচুয়াল বৈঠকে অংশ নেবেন। এই বৈঠক ফলপ্রসূ হলে রাজ্য সিআরআই (কালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট) রিপোর্টের উপর কমেন্ট- জাস্টিফিকেশন যা পাঠিয়েছে তার প্রতিলিপি তাঁদের হাতে দিতে হবে। ওই প্রতিলিপি হাতে পাওয়ার পর এক ঘণ্টা তাঁদের সময় প্রয়োজন। যদি তাঁদের দাবি পূরণের পক্ষে যায়, তাহলে তাঁরা এই কর্মসূচি (Kurmi Protest) প্রত্যাহার করবেন। নতুবা তা অনির্দিষ্টকাল ধরে চলবেই।

[আরও পড়ুন: ‘আদালতে দেখা হবে’, আদানি ইস্যুতে রাহুল গান্ধীর টুইটে রাগে অগ্নি শর্মা হিমন্ত]

আদিবাসী কুড়মি সমাজের মূল মানতা (প্রধান নেতা) অজিতপ্রসাদ মাহাতো বলেন, “প্রশাসন আমাদের প্রস্তাব দিয়েছিল অবরোধ তুলে কলকাতায় গিয়ে মুখ্যসচিবের সঙ্গে আলোচনায় বসুন। আমরা ওখানে গিয়ে আলোচনায় বসব না। আমাদের কর্মসূচি যেখানে চলছে অর্থাৎ দুই জেলার অবরোধস্থল থেকেই মুখ্যসচিবের সঙ্গে ভারচুয়ালি বৈঠক করতে চাই।” রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “আমরা বারবার বলছি, রাজ্যের যা যা করার সবটাই করছে। বাকিটা তো রাজ্যের এক্তিয়ারে নেই। সেটা কেন্দ্রের ব‌্যাপার। তাদের নেতৃত্ব যদি বিবেচনা করেন সেটা ভাল হয়। কিন্তু এভাবে রেল, বাস সড়ক স্তব্ধ করে যদি আন্দোলন হয়, তবে মানুষকে কষ্ট দেওয়া হচ্ছে। দয়া করে অবরোধের রাজনীতি তুলে নিয়ে অন‌্য পন্থা নিন। আইনমাফিক যাতে সবটা কেন্দ্রের কাছে পৌঁছায়, রাজ‌্য পাশে থেকে তার সবটা দেখবে।” কুণাল ঘোষ আরও বলেন, “শুভেন্দু বলছে, কুড়মিদের সঙ্গে রাজ‌্য কথা বলছে না। এ তো মহা ফাজিল ছেলে। যেখানে রাজ্যের কোনও দায়িত্ব নেই, সেখানে এইসব বলছে। কেন্দ্রের যা করার করবে। ওর ইচ্ছে হলে গিয়ে বলুক। এটা নিয়ে বিভ্রান্তিকর বিকৃত রাজনীতি।”

অথচ এই আন্দোলনের শুরুর আগে থেকে পুরুলিয়ার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার আদিবাসী কুড়মি সমাজের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করে। তবুও নিজেদের দাবি থেকে সরে আসতে চাইছে না কুড়মি সমাজ। আর এই অবরোধের জেরে কাল রবিবার আদ্রা ডিভিশনে ৮৭ টি ট্রেন বাতিল করেছে রেল। শনিবার খড়গপুর ডিভিশনে বাতিল হয়েছে ৫৫ টি ট্রেন।

[আরও পড়ুন: ‘ধোনি ভীষণ বিরক্তিকর অধিনায়ক’, ক্যাপ্টেন কুলকে কাঠগড়ায় তুললেন প্রাক্তন সতীর্থ]

এদিকে গোয়েন্দারা পুলিশকে জানিয়েছে, আড়াল থেকে এই আন্দোলনকে উস্কানি দিচ্ছে একটি বিরোধী রাজনৈতিক দল। আন্দোলনরত সংগঠনের সদস্যদের একাংশ থেকে জানা গিয়েছে, কুড়মিরা ভৌগোলিক দিক থেকে জনবিচ্ছিন্ন, এই জনজাতির মানুষজন আমজনতার কাছে আসতে ভয় পান। এই বিষয়গুলো কমেন্ট- জাস্টিফিকেশনে রাখতে হবে বলে তাদের দাবি। কিন্তু বাংলায় এই জনজাতিদের ক্ষেত্রে বাস্তব পরিস্থিতি তা নয়। তবুও রাজ্য সেই পালাবদলের পর থেকে কুড়মিদের এই দাবিটিকে সহানুভূতির সঙ্গে দেখে বারে বারে কেন্দ্রের কাছে দরবার করেছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement