অর্ণব আইচ: চিনা সার্ভার ব্যবহার করে একটি বেসরকারি সংস্থার ভুয়ো ই-মেল আইডি খুলে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উধাওয়ের পিছনে সাইবার জালিয়াত। তদন্ত শুরু করে মহারাষ্ট্রে হানা দিয়ে সাইবার জালিয়াতিতে অভিযুক্ত রিহান আমির খানকে গ্রেপ্তার করলেন লালবাজারের সাইবার থানার আধিকারিকরা। ধৃত যুবকের কাছ থেকে ৫৫টি মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। বহু সংখ্যক ব্যক্তিকে জালিয়াতির জন্যই এতগুলি মোবাইল ব্যবহার করা হয়। গোয়েন্দাদাবি, এর পিছনে আন্তর্জাতিক চক্র। ওই চক্রের মাথা এক বা একাধিক নাইজেরীয় বলেই ধারণা গোয়েন্দাদের।
পুলিশ জানিয়েছে, সাইবার জালিয়াতরা একটি সংস্থা ও তার অধিকর্তার ভুয়ো ই-মেল আইডি তৈরি করে। ওই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত অন্য একটি সংস্থাকে ওই ভুয়ো আইডি থেকে একটি মেল পাঠায়। সংস্থাটির অধিকর্তার নাম করে জানায়, অত্যন্ত জরুরি একটি কারণে কিছু টাকার প্রয়োজন। তাই পাওনা টাকা যেন একটি বিশেষ অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। দ্বিতীয় সংস্থাটি বিশ্বাস করেই সেই অ্যাকাউন্টে ৩৫ হাজার ১৫০ টাকা পাঠিয়ে দেয়। ওই অ্যাকউন্ট থেকে অন্য একটি অ্যাকাউন্টে লেনদেন হয় ওই টাকার। কিছুদিন পরই দ্বিতীয় সংস্থার কর্তারা প্রথমটির সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারেন যে, তাঁদের পক্ষ থেকে কোনও টাকাই মেল করে চাওয়া হয়নি। এই ব্যাপারে সংস্থাটির পক্ষ থেকে লালবাজারের সাইবার থানায় অভিযোগ জানানো হয়। গোয়েন্দারা তদন্ত করে জানতে পারেন যে, চিনা সার্ভার ব্যবহার করেই ওই ভুয়ো মেল আইডি খোলা হয়। এবার ওই ভুয়ো মেলের আইপি লগ, আইপি অ্যাড্রেস, মোবাইল ও অন্য বেশ কিছু তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, সাইবার জালিয়াত রয়েছে মহারাষ্ট্রে।
[আরও পড়ুন: ‘নির্দেশ মানার ইচ্ছা আছে?’, সিবিআইয়ের অভিযোগে মুখ্যসচিবকে তোপ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের]
মহারাষ্ট্রের নাল্লাসোপারার টুলিনি থানা এলাকার প্রগতি নগরে একটি আবাসনের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে রিহান আমির খানকে গোয়েন্দারা গ্রেপ্তার করেন। তার কাছ থেকে ৫৫টি মোবাইল, একটি অ্যাপল ট্যাব, ১১২টি এটিএম কার্ড, প্রচুর ব্যাঙ্কের নথি, চেকবই উদ্ধার করা হয়। ওই ১১২টি এটিএম কার্ড ব্যবহার করে টাকা তুলে নেওয়া হত। ধৃতকে কলকাতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। গোয়েন্দাদের ধারণা, রিহান আরও কয়েকজনকে কাজে লাগিয়ে সাইবার জালিয়াতি করাত। চক্রের অন্য সদস্য ও মাথাদের সন্ধানে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।