সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্নিগ্ধ, শুভ্র চাঁদের (Moon) রূপে আমরা কতই না মুগ্ধ। কিন্তু তার বুকেও যে অজস্র ঘাত-প্রতিঘাত ঘটে চলে, তৈরি হয় নতুন ক্ষত – সে খবর কে রাখে? পৃথিবী থেকে তার যেই অংশ কোনওদিন দৃশ্যমান হলো না, সে বিষয়ে তো আমরাও অন্ধকারে। কিন্তু প্রকৃত অনুসন্ধিৎসু যাঁরা, তাঁদের কাজই অন্ধকারাচ্ছন্ন দিকে আলো ফেলে তার সবটুকু জানার চেষ্টা। নাসার (NASA) একদল বিজ্ঞানী তাইই করলেন। Lunar Reconnaissance Orbiter Camera দিয়ে চাঁদের ক্লুট ক্রেটারকে দেখার চেষ্টা করলেন। আর তাতেই উঠে এল ‘ভূমিধসের’ তত্ত্ব। তবে এ ভূমিধস প্রাকৃতিক কারণে নয়। দেখা যাচ্ছে, ক্রমাগত মহাকাশে নিক্ষিপ্ত বর্জ্র, ধূমকেতুর টুকরো অংশ, সৌর বিকিরণের কারণে চন্দ্রপৃষ্ঠের ওই অংশের মাটি ক্রমশ খয়ে গিয়েছে।
তবে নাসার শক্তিশালী ক্যামেরায় ধরা পড়া চাঁদের ক্লুট ক্রেটারের অংশ পর্যবেক্ষণ করে দেখা গিয়েছে, বোল্ডার ভেঙে পাড়ের অংশ যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, অনেকটা তেমনই ছবি চাঁদের এই অংশের। বিজ্ঞানীদের মত, টেকটনিক প্লেটের সরণের (tectonic movement) কারণে মাটিতে এই আঘাত। পাশাপাশি, মহাকর্ষজ টানের ফলে এখানকার নুড়ি-পাথরের স্থানান্তর হয়েও অনেক সময়ে চাঁদের বুকে ক্ষত তৈরি করেছে। চাঁদের এই প্রাকৃতিক ঘটনাকে বিজ্ঞানীরা বলছেন ‘মাস ওয়েস্টিং’। বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা, এটি সাধারণ ভূমিক্ষয়ের প্রক্রিয়া। ক্লুট ক্রেটার অংশে বারবার নানা ধরনের শক্ত মহাজাগতিক বস্তু এতটাই জোরে এখানে আছড়ে পড়েছে, যাতে টেকটনিক প্লেটের সরণ ঘটেছে।
[আরও পড়ুন: বালকের হাতে ধরা দৈত্যাকার ব্যাঙ! ছবি দেখে বিস্মিত নেটদুনিয়া]
LROC চাঁদের সম্পূর্ণ অনালোকিত অংশে ভূপ্রকৃতি অতটা স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে। ছবিগুলি বিশ্লেষণ করলে হয়ত আরও নানা দিক উঠে আসবে। এ বিষয়ে খুবই আশাবাদী নাসার বিজ্ঞানীরা। এবার এই LROC তাঁরা মঙ্গলের মাটিতেও পাঠানোর কথা ভাবছেন। শক্তিশালী এই ক্যামেরায় হয়ত লালগ্রহের নয়া দিক ধরা পড়তে পারে। সেক্ষেত্রে চাঁদ, মঙ্গল – দুই অভিযানের পরিকল্পনাই আরও ভালভাবে করা যাবে। এমনই মনে করছে বিজ্ঞানীমহল। তবে এই মুহূর্তে চন্দ্রপৃষ্ঠের না দেখা অংশকে প্রকাশ্যে আনাই মূল কাজ LROC-র।