সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গণরোষে দেশছেড়ে পালিয়েছিলেন তিনি। প্রায় সাত সপ্তাহ পরে সেই ‘খলনায়ক’ প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজপক্ষে দেশে ফিরলেন। শুক্রবার বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানানোর জন্য উপস্থিত ছিলেন বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও রাজনীতিবিদরা। মালা পরিয়ে গোতাবায়াকে দেশে স্বাগত জানান তাঁরা।
সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে খবর, এদিন বন্দরনাইকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রাজাপক্ষেকে মালা পরানোর জন্য কার্যত হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। বিশ্লেষকদের মতে, জনতার ভয়ে দেশ ছেড়ে পালালেও দ্বীপরাষ্ট্রটির রাজনীতিতে রাজপক্ষে এখনও প্রাসঙ্গিক। শুধু তাই নয়, নিজর দলের উপর তাঁর রাশও সেই অর্থে আলগা হয়নি। এক সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন, ৫২ দিনের স্বেচ্ছা নির্বাসনের পর ব্যাংকক থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে দেশে ফিরেছেন বছর তেয়াত্তরের গোতাবায়া (Gotabaya Rajapaksa)।
শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনীর এক আধিকারিককে উদ্ধৃত করে এএফপি জানিয়েছে, থাইল্যান্ডের একটি হোটেলে কার্যত গৃহবন্দি হয়ে ছিলেন রাজাপক্ষে। দেশে ফেরার জন্য আকুল হয়ে পড়েছিলেন তিনি। রাজাপক্ষের সুরক্ষার জন্য সেনা ও পুলিশ কমান্ডোদের নিয়ে একটি বিশেষ দল তৈরি করা হয়েছে। বলে রাখা ভাল, শ্রীলঙ্কার সংবিধান অনুসারে একটি বাসভবন, গাড়ি ও দেহরক্ষী পাবেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে।
[আরও পড়ুন: পিছিয়ে গেল চিনা জাহাজের শ্রীলঙ্কায় প্রবেশ, ভারতের চাপে পিছু হঠল কলম্বো]
উল্লেখ্য, অপশাসন ও অর্থনৈতিক ভুল পদক্ষেপে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া এবং তাঁর ভাই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের আমলে তীব্র অর্থনৈতিক সঙ্কটের সম্মুখীন হয়েছে শ্রীলঙ্কা। স্বাধীনতার পর এই প্রথম এত বড় বিপর্যয়ের জন্য গোতাবায়ার ভ্রান্ত অর্থনৈতিক নীতিকেই দুষেছেন শ্রীলঙ্কাবাসী। প্রবল গণরোষে দেশ যখন জ্বলছে, তখনই সেনাবাহিনীর বিশেষ বিমানে চেপে গোপনে দেশ ছাড়েন গোতাবায়া। সস্ত্রীক পৌঁছে যান আর এক দ্বীপরাষ্ট্র মলদ্বীপে। সেখান থেকে সিঙ্গাপুরে পৌঁছেছিলেন গোতাবায়া। জল্পনা ছিল, সিঙ্গাপুর ছেড়ে তিনি সংযুক্ত আরব আমিরশাহী হয়ে আমেরিকা যেতে পারেন। কিন্তু সেই জল্পনার জল ঢেলে তিনি শেষ পর্যন্ত দেশেই ফিরলেন।
এদিকে, গোতাবায়া দেশে ফিরলেও তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে বলেই মনে করছেন রাজনীতির কলাকুশলীরা। প্রশ্ন উঠছে, দুর্নীতি ও অপশাসনের অভিযোগে জনতার দাবি মেনে কি প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে গ্রেপ্তার করা হবে? গত ১৫ জুলাই শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিসভায় গোতাবায়ার পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়। তাঁরই দলের সমর্থনে প্রেসিডেন্ট হন রনিল বিক্রমসিংহে। ফলে তিনি আদৌ কি কোনও পদক্ষেপ করবেন, তা সময়ই বলবে।