সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভোটের মুখে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথের ভাইপোর বাড়িতে আয়কর দপ্তরের হানা নিয়ে কম জলঘোলা হচ্ছে না৷ তারই মধ্যে সমালোচনা আরও উসকে দিল আয়কর দপ্তরের পেশ করা সাম্প্রতিক হিসেব৷ কর্তাদের দাবি, ২৮১ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়েছে কমল নাথের ভাইপোর বাড়ি থেকে৷ তার মধ্যে সাড়ে চোদ্দ কোটি টাকা নগদ, ২৫২টি মদের বোতল উদ্ধার হয়েছে৷ তার কিছুটা অংশ বাঘের চামড়ার মধ্যে লুকনো ছিল বলেও জানাচ্ছেন আয়কর কর্তারা৷
[ আরও পড়ুন : বর সেজে ঘোড়ায় চেপে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে বিপাকে প্রার্থী]
রবিবার থেকে দেশজুড়ে মোট ৫২টি জায়গায় আয়কর দপ্তর হানা দিয়েছে৷ বিভিন্ন সম্পদশালী ব্যক্তিদের বাড়ি, অফিস-সহ একাধিক স্থানে চলছে অভিযান৷ আয়কর দপ্তরের দাবি, সব জায়গা থেকে উদ্ধার হচ্ছে মোটা অঙ্কের বেহিসেবি সম্পত্তি৷ মঙ্গলবার মধ্যপ্রদেশ পুলিশের স্পেশাল অফিসার প্রবীণ কক্করের ঘনিষ্ঠ অশ্বিনী শর্মার দিল্লির বাড়িতেও চলে তল্লাশি৷ সূত্রের খবর, সেখান থেকেও ১১০ কোটি টাকার সম্পত্তি উদ্ধার হয়েছে৷ সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডিরেক্ট ট্যাক্স বা সিবিডিটি-র তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ‘এই টাকার বেশ খানিকটা অংশ গিয়েছে দিল্লিতে এক রাজনৈতিক দলের সদর দপ্তরে, তুঘলক রোডে৷’ বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, হাওয়ালার মাধ্যমে বিপুল টাকা লেনদেন হত৷ নাম উঠছে আরও বেশ কয়েকজন নেতার৷
যথারীতি ঘটনার তীব্র নিন্দায় সরব হয়েছেন বিরোধীরা৷ মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ভোটের মুখে এই হানা পুরোপুরি বিজেপি দ্বারা প্রভাবিত৷ বিরোধী দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এই কাজ৷ মধ্যপ্রদেশ সরকার একে আয়কর অপারেশন নয়, ‘রাজনৈতিক অপারেশন’ হিসেবেই দেখছে৷ অন্যদিকে, মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপির প্রবীণ নেতা শিবরাজ সিং চৌহানের কটাক্ষ, সরকারে বসেই আর্থিক দুর্নীতির মুখে পড়ে নিজের ইমেজ হারাচ্ছেন কমল নাথ৷ সরকারের ভূমিকা অত্যন্ত নিন্দনীয় বলেই মনে করছেন তিনি৷
[ আরও পড়ুন : ভোটের আগে স্বস্তি, মুক্ত দেশদ্রোহে অভিযুক্ত মণিপুরী সাংবাদিক]
গত রবিবার সন্ধেবেলা মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের বাড়িতে আয়কর দপ্তরের আচমকা অভিযানে গিয়ে রাজ্য পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয়৷ ফেব্রুয়ারির শুরুতে ঠিক যেমনটা ঘটেছিল কলকাতায়, পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাসভবনে অভিযানের সময়৷ দুই জায়গায় ঘটনার এত মিল দেখেই বিরোধীরা সুর চড়াচ্ছেন৷ বলছেন, বেছে বেছে বিরোধী দল যেখানে সরকারে রয়েছে, সেসব জায়গায় বিজেপির মদতে অযথা আয়কর হানা চলছে৷ তবে মধ্যপ্রদেশের ঘটনা সদ্য সরকার তৈরি করা কংগ্রেস এবং মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথের পক্ষে যে বেশ কিছুটা মানহানিকর, তাতে সংশয় নেই৷