সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পকসো আইন অনুযায়ী শারীরিক সম্পর্কে সম্মতি দেওয়ার ক্ষেত্রে ন্যূনতম বয়স হতে হবে ১৮ বছর। তা কমানোর ব্যাপারে ইদানীং বিক্ষিপ্তভাবে দাবি উঠছিল। কিন্তু এ বিষয়ে সম্পূর্ণ উলটো পথে হাঁটল আইন কমিশন। সরকারের কাছে তাদের সুপারিশ, ন্যূনতম বয়স বর্তমানের তুলনায় কমানো ঠিক হবে না। তাদের মতে, সম্মতির বয়স যদি কমানো হয়, তবে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। বাল্যবিবাহ ও শিশুপাচার বাড়তে পারে।
আইন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, কিছু পরিস্থিতিতে সম্মতির বয়স ১৮ থেকে ১৬ বছর করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে আইন সংশোধন প্রয়োজনীয়। ওই বিশেষ ক্ষেত্রগুলিতে বিচার বিভাগের পথ নির্দেশিকার প্রয়োজন। প্রসঙ্গত, কোনও নাবালক বা নাবালিকার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের ব্যাপারে পকসো আইনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সেখানে বয়সের ব্যাপারটি সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, কমিটি এই সুপারিশ করেছে যে ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সি নাবালিকা বা নাবালক, শারীরিক সম্পর্কে প্রকারান্তরে সম্মতি দিয়ে থাকলে সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি অনুযায়ী অবস্থান নেওয়া যেতে পারে। রায় ঘোষণার সময়ে এক্ষেত্রে বিচারক বা বিচারপতির ওই বিষয়টা বিবেচনা করে দেখতে পারেন।
[আরও পড়ুন: ‘রাস্তায় বসে চা খাই, আমার বসার চিন্তা কী?’, রাজ্যদপ্তরের ঘর ভাঙা নিয়ে ‘অভিমানী’ দিলীপ]
গত বছরই ডিসেম্বরে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেছিলেন, পকসো আইনের অধীনে নানা ঘটনায় সম্মতির বয়স নিয়ে যেভাবে প্রশ্ন উঠছে, সেক্ষেত্রে সম্মতির বয়স ১৮ বছর থেকে কমিয়ে ১৬ বছর করা যায় কি না, তা সংসদের বিবেচনা করে দেখা উচিত। আইন কমিশনের মতে, বহু ক্ষেত্রেই জোর করে অথবা ভুল বুঝিয়ে সম্মতি আদায় করা হয়। কারণ, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, নির্যাতনকারী নির্যাতিতা শিশুটির পরিচিত, এমনকী, একই পরিবারের সদস্য। সেক্ষেত্রে সম্মতি দানের বয়সসীমা কমিয়ে দেওয়া হলে পকসো আইন তার কার্যকরিতা হারিয়ে শুধুমাত্র খাতায় কলমে থেকে যাবে বলেই মনে করছে আইন কমিশন।
তার উপরে, তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ অথবা তদন্তকারী সংস্থা যদি জানতে পারে যে নির্যাতিতার সম্মতি আদায় করা হয়েছিল, তাহলে আদালতে বিচারের আগে পুলিশই নির্যাতনের ঘটনাকে প্রেম বা ঘনিষ্ঠতার পরিণতি বলে ধরে নেবে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘কমিশন মনে করছে পকসো আইনের কিছু সংশোধনের প্রয়োজন, যেখানে ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সিদের আইনত সম্মতি না থাকলেও, বাস্তবে সম্পূর্ণ সম্মতি রয়েছে। আইন ভারসাম্যপূর্ণ হলে শিশুদের সুরক্ষা ও স্বার্থ সর্বোত্তমভাবে রক্ষা হবে।’ পাশাপাশি, আইন কমিশন সুপারিশ করেছে, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি সংক্রান্ত নিয়ম সমলিঙ্গ বিয়ের ক্ষেত্র থেকে বাদ দেওয়া হোক।