সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নন্দীগ্রামের (Nandigram) নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) করা মামলা বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে কেন? প্রশ্ন তুলে হাই কোর্টে বিক্ষোভ আইনজীবীদের একাংশের। তাঁদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর মামলা যে বিচারপতির এজলাসে দেওয়া হয়েছে, সেই কৌশিক চন্দ আগে বিজেপির ‘সক্রিয় সদস্য’ ছিলেন। তাই তাঁর এজলাসে নন্দীগ্রাম মামলা উঠলে বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। নন্দীগ্রাম মামলা বিচারপতি চন্দের এজলাসে পাঠানোর প্রতিবাদে মুখে কালো মাস্ক এবং হাতে পোস্টার নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন আইনজীবীরা। পোস্টারে লেখা ছিল, “বিচারব্যবস্থার সঙ্গে রাজনীতি করবেন না”।
ঘটনাচক্রে শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর করা মামলার শুনানি হয়নি। তা এক সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি চন্দ জানিয়েছেন এক সপ্তাহ পর আগামী বৃহস্পতিবার এই মামলার পূর্ণাঙ্গ শুনানি হবে। সেদিন মামলাকারী অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রীকে আদালতে উপস্থিত থাকতে হবে। আইনি মহলের একাংশের ব্যাখ্যা, এই মামলাটি যেহেতু নির্বাচন (WB Assembly Elction 2021) সংক্রান্ত, তাই মামলাকারীকে শুনানির সময়ে উপস্থিত থাকতে হয়। না থাকতে পারলে আদালতকে তার কারণ জানাতে হয়। এই পদ্ধতির জন্য বিচারপতি কৌশিক চন্দ এক সপ্তাহ সময় দিয়েছেন বলে খবর। তবে, শুনানি পিছিয়ে যাওয়ার পরও আদালত চত্বরে আইনজীবীদের বিক্ষোভ চলতে থাকে। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, বিচারপতি কৌশিক চন্দ (Kaushik Chanda) একসময় বিজেপির সদস্য ছিলেন। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক মামলা তাঁর বেঞ্চে গেলে বিচারব্যবস্থা নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন উঠবে। তাই মামলাটি অন্য এজলাসে যাওয়া উচিত।
[আরও পড়ুন: নন্দীগ্রামে ভোট পুনর্গণনা মামলা: মমতার আবেদনের শুনানি পিছিয়ে গেল আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত]
বস্তুত, শুধু আইনজীবীরা নন, মুখ্যমন্ত্রীর করা নন্দীগ্রাম মামলার এজলাস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলে নেতাদের একাংশও। তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও ব্রায়েন (Derek O Brien) শুক্রবার দুপুরে দুটি ছবি টুইট করেন। যে ছবিতে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সভায় দেখা গিয়েছে বিচারপতি চন্দকে। ডেরেকের প্রশ্ন, “বিচারব্যবস্থা আর কতটা নিচে নামবে?” আরেকটি টুইটে তৃণমূল নেতা দাবি করেছেন, বিচারপতি চন্দ আইনজীবী হিসেবে বিজেপির হয়ে বহু মামলা লড়েছেন। মমতা সরকারের ইমাম ভাতা চালুর বিরোধিতা করা থেকে শুরু করে অমিত শাহর সভার অনুমতি নিয়ে জটিলতার মতো মামলায় বিজেপির পক্ষ নিয়ে লড়তে দেখা গিয়েছে বিচারপতি তাঁকে। বিচারপতি চন্দের এজলাসে মামলাটি পাঠানো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষও। তিনি বলছেন,”বিচার ব্যবস্থার প্রতি পূর্ণ আস্থা রেখেই বলতে চাই, যে বিষয়টি সামনে আসছে, সেটা নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক।”
সূত্রের খবর, বিচারপতি কৌশিক চন্দর বেঞ্চ থেকে মামলাটি সরানোর আরজি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যপাধ্যায়ের আইনজীবী সঞ্জয় বসু। এই মর্মে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলকে তিনি একটি চিঠিও দিয়েছেন।