মণিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: ফের বাম-রাম (Left front-BJP) জোট বেঁধে উলুবেড়িয়া আদালতের বার অ্যাসোসিয়েশনের দখল নিল। মোট ১৮ টি আসনের মধ্যে ১১টিতে জয়ী বিরোধীরা। দেওয়ানি ও ফৌজদারি দুই বিভাগেই সভাপতি, সম্পাদক-সহ সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে বিরোধীদের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। শাসক পক্ষের সমর্থিত প্যানেলে প্রার্থীদের মধ্যে সাতজন জয়ী হয়েছেন। তাঁরা দেওয়ানি বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট, দুটি সহ-সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ এবং ফৌজদারি বিভাগের একটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি, কোষাধ্যক্ষ ও একটি কালচারাল সেক্রেটারি পদে জয়ী হয়েছেন।
সাগরদিঘি উপনির্বাচনের (Sagardighi By Election) ফলাফলের পর গত শনিবার বার কাউন্সিলের নির্বাচন হয়েছিল। সোমবার সেই নির্বাচনের ফল ঘোষণা হয়। আর তাতেই দেখা যায়, উলুবেড়িয়া বার কাউন্সিল বিরোধীরা ছিনিয়ে নিল শাসক শিবিরের কাছ থেকে। যদিও শাসকপক্ষের নেতারা বিরোধীপক্ষের এই জয়কে ‘রামধনু জোট’ বা ‘রাম বামের জোট’ বলেই কটাক্ষ করেছেন। উলুবেড়িয়া পুরসভার চেয়ারম্যান অভয় দাস বলেন, ”আমাদের সাতজন জয়ী প্রার্থীদের শুভেচ্ছা জানাই। পাশাপাশি বার কাউন্সিলের ক্ষমতায় আসা নবনির্বাচিত বোর্ডকেও শুভেচ্ছা জানাই। আমরা তাঁদের পাশে আছি। তবে ফের এটা প্রমাণিত হল, রাম-বাম একত্রিত। রাম-বাম একে অপরের পরিপূরক।”
[আরও পড়ুন: ‘মোদি আসলে শয়তানের বশে থাকা হিন্দু’, প্রধানমন্ত্রীকে তীব্র কটাক্ষ পাক ক্রিকেট অধিনায়কের]
যদিও এই জোটকে এইভাবে দেখতে রাজি নয় জয়ী প্রার্থীরা। বার অ্যাসোসিয়েশনের ফৌজদারি বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী প্রার্থী খাইরুল বাশার। তিনি বলেন, ”এখানে সিম্বল ছাড়াই ভোটাভুটি হয়েছে। মোট কথা বর্তমান বোর্ডের যে সকল ত্রুটি বিচ্যুতি ছিল তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ আইনজীবীরা সম্মিলিতভাবে প্রার্থী দিয়েছিল। এটা তাই ওই সকল ক্ষুব্ধ আইনজীবীদের সবার জয়। আমরাও সকলকে শুভেচ্ছা জানাই এবং আগামী দিনে সকল সদস্যদের সঙ্গে নিয়েই আমরা বোর্ড পরিচালনা করব।”
প্রসঙ্গত, উলুবেড়িয়া (Uluberia) বার অ্যাসোসিয়েশনের দেওয়ানি এবং ফৌজদারি বিভাগে মোট ন’টি করে ১৮ টি আসন। শাসকপক্ষ দু’টি বিভাগ মিলিয়ে মোট ১৮টি প্রার্থী দিয়েছিল। আর বাম বিজেপি একসঙ্গে জোট করেছিল বার বাঁচাও কমিটি নামে। বিগত বোর্ড ছিল শাসক পক্ষের আইনজীবীদের দখলে। ১৮টি আসনের মধ্যে ১৬ টি আসন ছিল শাসক পক্ষের সমর্থিত প্যানেলের পক্ষে। আর মাত্র দুটি ছিল বিরোধী প্যানেলের পক্ষে। এবারে নতুন বোর্ডে ১১ জন জয়ী হলো বিরোধী পক্ষের আর সাতজন জয়ী হলো শাসক পক্ষের সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা।
[আরও পড়ুন: দোলের দিন সকাল থেকে তুঙ্গে ভাংয়ের চাহিদা, খদ্দেরের আবদারে কী জানাল Zomato?]
ভোটের আগেই বিরোধীপক্ষ অভিযোগ করেছিল, শাসকদল নির্বাচনে গোলমাল করতে চাইছে এবং অভিযোগ উঠেছিল খোদ উলুবেড়িয়া পুরসভার চেয়ারম্যান অভয় দাস লোক নিয়ে এসে বিরোধী পক্ষের প্রার্থীদের হুমকি দিয়ে তাঁদের কোণঠাসা করতে চাইছে এবং বার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে অগণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে। এই ব্যাপারে তৃণমূলপন্থী আইনজীবী নেতা নিধুরাম নন্দী বলেন, বিরোধীপক্ষ ভোটের আগে দাবি করেছিল শাসকপক্ষ বার কাউন্সিলের ভোটে অগণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে। আসলে এই ফল তাদের এই দাবিকে মিথ্যা প্রমাণিত করল। এটা প্রমাণিত হল যে আদালতে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রয়েছে।