ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: জুনের শুকনো, চড়া রোদ। সেই দাবদাহ সরিয়ে মাথা-মুখ গামছায় ঢেকে নাসিকের গ্রামে কৃষকদের বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন এক দল মানুষ। তাঁদের একজনের নাম যদি হয় অশোক ধাওয়ালে। অপরজন তপন সেন বা হান্নান মোল্লা। কৃষক, খেতমজুরদের থেকে সই সংগ্রহ করছেন। বলছেন দিল্লি অভিযানের মূল কথা। লক্ষ্য, ৬-১২ মার্চের ‘লঙ মার্চের’ থেকেও বড় অভিযান দিল্লিতে সংগঠিত করা।
[জেলে মাদক-মোবাইল রুখতে পদস্থ কর্তাদেরও তল্লাশি শুরু আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে]
মার্চের লং মার্চের স্মৃতি এখনও সজীব। কৃষকের চৌকাঠ ডিঙিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে সমীহ আদায় করেছিল সেই সমাবেশ। শুধু দেশের মিডিয়াই নয়। বিদেশের সংবাদমাধ্যমে ফলাও করে ছাপা হয়েছে মহারাষ্ট্রের কৃষকদের খবর। অবস্থা এমন জায়গায় পৌঁছেছিল যে কৃষকসভার কর্মসূচিকে খোলাখুলি সমর্থন জানিয়েছিল শিবসেনা। সমর্থন জানিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। সিপিএমের কৃষক সংগঠনের সব দাবি মেনে নিয়েছিল মহারাষ্ট্রের বিজেপি সরকার। শুধুমাত্র লং মার্চ সফল হওয়ার জন্যই রাতারাতি সিপিএমের ‘পোস্টার বয়’ হিসাবে সব আলো কেড়ে নিয়েছিলেন চিকিৎসক কৃষকনেতা অশোক ধাওয়ালে। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটিতে এসেছেন তিনি। তাঁর মতো সিপিএম চায় লোকসভা ভোটের ঠিক আগে বিজেপি বিরোধী শক্তিকে আরও বাড়াতে। আর সেই লক্ষ্যেই লং মার্চকে আরও বড় আকার দিতে চায় কৃষকসভা। কৃষক সংগঠনের সঙ্গেই তাল ঠুকছে সিটু ও মহিলা সমিতি। তিন সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্বের বক্তব্য, লোকসভা ভোটের আগে এই তিন সংগঠন আরও একবার কেন্দ্রকে নিজেদের বার্তা দিতে চায়।
[আঘাত ঠোঁটে, যৌনাঙ্গে অস্ত্রোপচারের জন্য শিশুকে ক্যাথিটার পরালেন চিকিৎসক]
ঠিক এখনই নাসিকে খেতমজুর সংগঠনের সম্মেলন চলছে। সেখানেও আলোচ্য বিষয় ৫ সেপ্টেম্বরের সমাবেশ। খেতমজুর সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিজয় রাঘবন বুধবার নাসিক থেকে জানিয়েছেন,“কৃষক সংগঠনের শরিক হিসাবেই ওই সমাবেশে অংশ নেবে খেতমজুর ইউনিয়ন। অন্তত ৩ লক্ষ মানুষের জমায়েত হবে দিল্লিতে।” এতো গেল সেপ্টেম্বরের প্রস্তুতি। তিন সংগঠন নিজেদের ‘শক্তি’ যাচাই করতে ৯ আগস্ট জেল ভরো কর্মসূচি করবে। দেশের অন্তত ৫০০ জেলায় জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। পাশাপাশি জেলভরো কর্মসূচি। সিপিএমের পলিটবু্যরো সদস্য হান্নান মোল্লার কথায়,“জেল ভরো কর্মসূচিতেই বোঝা যাবে ৬-১২ মার্চ লং মার্চ কর্মসূচির আবেগ কতটা বেড়েছে বা হেরফের হয়েছে।” হান্নান মোল্লার কথায়,“এটা ঠিক আবেগ দিয়ে সব হয় না। কিন্তু এটাও ঘটনা আবেগ ছিল বলেই মার্চের কৃষক সমাবেশ সফল।”
৯ আগস্ট বা সেপ্টেম্বরের সমাবেশের খবর বিস্তারিত প্রকাশের জন্য তিন সংগঠনই সোশ্যাল মিডিয়াকে ঢেলে সাজাচ্ছে। পেশাদার তথ্যপ্রযুক্তিবিদদের ব্যবহার করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি বাড়ি বাড়ি প্রচার। বিষয়টিকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে সিপিএম। আগামী মাসে কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে বলে দলীয় সূত্রে খবর। রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, লোকসভা ভোটের আগে ভিন রাজ্যে সিপিএমের শক্তি কতটা এই সমাবেশ থেকেও যাচাই করা যাবে।
The post লং মার্চের ধাঁচে দিল্লি অভিযানের প্রস্তুতি বামেদের appeared first on Sangbad Pratidin.