বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: শরীর দিচ্ছে না। কিন্তু তার পরও কর্মী-সমর্থকদের চাগিয়ে তুলতে ৭৭ বছরের মানুষটার জুড়ি আজও নেই। ২৮ ফেব্রুয়ারির সমাবেশে ব্রিগেডের মঞ্চে না থেকেও তাই প্রবলভাবে থাকছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (Buddhadeb Bhattacharjee)। কিন্তু কী ভাবে মাঠভরা জনতার কাছে উপস্থিত করা হবে অসুস্থতায় শয্যাশায়ী, চিকিৎসকের নির্দেশে গৃহবন্দি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে? আলিমুদ্দিন সূত্রে খবর, সেই পথ বার করতেই এখন ব্যস্ত রাজ্য নেতারা। পরিকল্পনায় ভারচুয়াল মঞ্চ। অডিও বার্তা। অথবা লিখিত বার্তা।
চিকিৎসকদের বারণ ছিল। সেই নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করেই হাজির হয়েছিলেন। কিন্তু বামেদের ডাকা শেষ ব্রিগেডে হাজির হয়েও মঞ্চে ওঠা হয়নি। গাড়ি থেকেই নামতে পারেননি। বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল কর্মী-সমর্থকদের উন্মাদনা ও ব্রিগেডের ধুলো। গাড়িতে বসেই ছিলেন। সর্বসাকুল্যে ছিলেন কুড়ি মিনিট। এবার বাড়ি থেকে কোনওভাবেই বেরনো যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে কর্মীদের মনোভাব ভালই বোঝেন আলিমুদ্দিনের ভোট ম্যানেজাররা। তাঁরা জানেন একবারটি চোখের দেখা দেখবার জন্য আকুল হবে পার্টির নিচুতলা। তাই যে কোনওভাবে বুদ্ধবাবুকে ব্রিগেডে আনতে উদগ্রীব লালপার্টির ম্যানেজাররা।
[আরও পড়ুন: নাড্ডা যেখানে আক্রান্ত হয়েছিলেন সেই শিরাকল দিয়েই যাবে বিজেপির রথ, উদ্বোধনে শাহ]
জীবিত অবস্থায় শেষ ব্রিগেডে অডিও বার্তা শোনানো হয়েছিল জ্যোতিবাবুর (Jyoti Bose)। কর্মী-সমর্থকদের চাপেই এই পদ্ধতি নিতে হয়েছিল। এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। করোনা পরিস্থিতিতে ব্রিগেডে সভা। সুস্থ থাকলেও তাঁকে আনা সম্ভব নয়। কিন্তু ভোট বড় বালাই। তাঁর জনপ্রিয়তাকে ভোট ময়দানে কাজে লাগাতে হবে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর একটি বার্তাই পার্টির কর্মী—সমর্থকদের কাছে যথেষ্ট। এক্ষেত্রে চেষ্টা হবে প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে ভিডিও বার্তা দেওয়ার। জানা যাচ্ছে, পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়ির ভারচুয়াল মঞ্চ থেকে ব্রিগেডের উপস্থিত বাম জনতার উদ্দেশে ভাষণ দেবেন বুদ্ধবাবু। সেই চেষ্টা ব্যর্থ হলে দ্বিতীয় ভাবনা, তাঁর অডিও বার্তা শোনানো হবে। তাতেও রাজি না হলে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর লিখিত ভাষণ পাঠ করা হবে মঞ্চে। রাহুল গান্ধী বা সর্বভারতীয় নেতাদের সম্মতি পাওয়ার পর কংগ্রেসের (Congress) সঙ্গে কথা বলে বক্তা তালিকা তৈরি করতে চায় আলিমুদ্দিন। সেখানে বুদ্ধবাবুকে ভোট-ময়দানে ব্যবহারের কৌশল নিয়েও আলোচনা হতে পারে বলে সূত্রের খবর। অর্থাৎ ডিজিটাল পর্দা বা লিখিত ভাষণ, যে পথেই হোক, ভোটযুদ্ধে ময়দানে নামা কর্মীদের উজ্জীবিত করতে ব্রিগেডের মঞ্চে বুদ্ধবাবুকে যে চা-ই, তা নিয়ে দ্বিমত নেই বিমান-সূর্যকান্ত-সুজন চক্রবর্তীদের।