সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল মাত্র ৮ বছর বয়সি এক বালিকার। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাটের আহমেদাবাদে। গোটা ঘটনার ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় প্রকাশ্যে এসেছে। যেখানে দেখা গিয়েছে, স্কুলের মধ্যেই বুকে যন্ত্রণা নিয়ে চেয়ারে বসে ছিল ওই বালিকা। হঠাৎ চেয়ার থেকে গড়িয়ে পড়ে সে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে।
স্কুলের তরফে জানা গিয়েছে, অন্যান্য দিনের মতো শুক্রবার সকাল ৮টায় স্কুলে এসেছিল ওই বালিকা। সিঁড়ি দিয়ে ওপরে ওঠার সময় বুকে তীব্র ব্যাথা অনুভব করে সে। যার জেরে স্কুলের লনে এক চেয়ারে বসে পড়ে সে। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই চেয়ার থেকে গড়িয়ে পড়ে মৃত্যু হয় তার। স্কুলের প্রিন্সিপাল শর্মিষ্ঠা সিনহা জানান, ঘটনার পরই অ্যাম্বুল্যান্সে ফোন করা হয়। অ্যাম্বুল্যান্সে আসতে দেরি হওয়ায় স্কুলের গাড়িতে করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। যদিও চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। জানা গিয়েছে, ওই বালিকার মা-বাবা মুম্বইয়ের বাসিন্দা। আহমেদাবাদে দাদু-ঠাকুমার কাছে থাকত সে।
এই ঘটনা অবশ্য প্রথমবার নয়, গত বৃহস্পতিবার একই ঘটনা ঘটেছিল কর্নাটকে। সেখানে চামরাজনগর জেলায় প্রায় একইরকম ঘটনা সামনে আসে। ৮ বছরের বালিকা তেজস্বিনী স্কুলে ক্লাস চলাকালীন শিক্ষিকাকে খাতা দেখাতে যাচ্ছিল। সেই সময় হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে যায় সে। দেওয়াল ধরে ফের ওঠার চেষ্টা করলেও উঠতে পারেনি। অজ্ঞান হয়ে যায় সেখানেই। তড়িঘড়ি তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এক্ষেত্রেও জানা যায় মৃত্যুর কারণ হৃদরোগ। দেশের নানা প্রান্তে এত কম বয়সি শিশুদের এমন ভয়াবহ মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ বাড়ছে।
এত অল্প বয়সে এমন মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এই ঘটনা ব্যতিক্রমী হলেও একেবারেই বিরল নয়। শারীরিক জটিলতার কারণে কোনও কোনও ক্ষেত্রে শিশুদের হৃদপিণ্ডের পেশি ও দেওয়াল অনেকটাই পুরু হয়ে যায়। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর হয় যে তা হৃদপিণ্ডে রক্তপ্রবাহে বাধা দিতে শুরু করে। বড়দের ক্ষেত্রে এমনটা প্রায়শই দেখা গেলেও শিশুদের ক্ষেত্রে তা অত্যন্ত কম। চিকিৎসকদের দাবি, ২ লক্ষ শিশুর মধ্যে একজনের ক্ষেত্রে এমনটা হয়। এর কিছু উপসর্গও রয়েছে। যেমন সদ্যজাতদের ক্ষেত্রে দুগ্ধপানে সমস্যা, শিশুর মধ্যে চঞ্চলতার অভাব, শিশুর অত্যধিক ঘাম হওয়া, বমি হওয়া, ক্লান্তি, ক্ষুধামন্দ, শরীরে ফ্যাকাশে ভাব ও শ্বাসকষ্ট। এই ধরনের লক্ষণ শিশুর মধ্যে দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হওয়া উচিত।