তারক চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি: বিয়ে ঠিক হয়েছিল এক বান্ধবীর। খবরটা একেবারেই মেনে নিতে পারেননি অন্যজন। একজন অপরজনকে ছেড়ে থাকতে পারবেন না। তাই শেষমেশ নিজেদের শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল দুই অভিন্নহৃদয় বান্ধবী। বাড়ি থেকে একই ওড়নায় গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় উদ্ধার হল দুই বান্ধবীর দেহ। সোমবার সন্ধেবেলা ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি (Siliguri) পুরনিগমের ৪২ নং ওয়ার্ডের বিবেকানন্দ নগর এলাকায়।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম প্রিয়াঙ্কা বর্মন এবং দীপ্তি রায়, তাঁদের বয়স ১৮ বছর। তাঁরা একে অপরের প্রতিবেশী ও বন্ধু ছিলেন বলেই দাবি করেছেন দুই পরিবারের সদস্যরা। তাদের ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া একটি সুইসাইড নোট (Suicide Note) থেকে দু’জনের সমকামী সম্পর্কের ইঙ্গিত মিলেছে বলেই দাবি করছে পরিবার ও প্রতিবেশীদের একাংশ। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে ভক্তিনগর থানার পুলিশ। এরপর মৃতদেহ উদ্ধার করে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় তাঁরা।
[আরও পড়ুন: আলিয়ার পর ভাইরাল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিডিও, তৃণমূলকে ‘পুড়িয়ে মারা’র নিদান বাম ছাত্রর]
দীপ্তির ঠাকুরদাদা রজত রায় বলেন, “আমি বাড়ি ছিলাম না। আচমকা বাড়ি থেকে জানানো হয় আমাদের মেয়ে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। ওঁরা দু’জনে একই ওড়নায় ফাঁসি দিয়েছে।” প্রতিবেশী নীলিমা রায়ের কথায়, “ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। সেটাতে প্রিয়াঙ্কা লিখেছে যে সে আর দীপ্তি একে অপরকে ছাড়া থাকবে পারবে না বলেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে।”
জানা গিয়েছে, ছোটবেলা থেকেই এই দুই বান্ধবী একসাথে বড় হয়েছেন। দু’জনে প্রায় সব সময় একসঙ্গে থাকতেন। আগামী ২১ এপ্রিল ফাড়াবাড়ি এলাকার এক বাসিন্দার সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়েছিল দীপ্তির। এদিন দীপ্তি রায়ের বাড়িতে কেউ ছিল না। দুই বান্ধবী একাই বাড়িতেই ছিলেন। সন্ধে নাগাদ দীপ্তির বাবা-মা বাড়িতে এসে শোবার ঘরে তাঁদের দুজনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেন। সুইসাইড নোটে লেখা রয়েছে, “সরি, আমাদের ক্ষমা করে দিন। আমাদের কেউ একে অপরকে ছাড়া থাকতে পারব না। আমাদের কেউ আলাদা করতে পারব না। আমরা আমাদের স্বপ্নপূরণ করলাম।”