সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চোখে চোখ রেখে, উচ্চকণ্ঠে শানিত প্রশ্নে সংসদে শাসকদলকে বেকায়দায় ফেলা সাংসদকে নিয়ে এখন যত মাথাব্যথা তৃণমূলের (TMC)। এক শিল্পপতির থেকে ‘ঘুষ’ নিয়ে বিজেপি ঘনিষ্ঠ আরেক শিল্পপতির বিরুদ্ধে লোকসভায় সরব হওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রর (Mahua Moitra) বিরুদ্ধে। বিষয়টি আপাতত এথিক্স কমিটির আওতায়। এ নিয়ে দলের কী বক্তব্য, তা জানার জন্য কৌতূহল ক্রমশই বাড়ছে রাজনৈতিক মহলে। কারণ, কাজ আর বিজেপি (BJP) বিরোধিতা – দুটোতেই সমান পটু কৃষ্ণনগরের এই সাংসদ। তৃণমূল নেত্রীর বিশেষ স্নেহভাজন। কিন্তু মহুয়ার বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ ওঠার পর থেকে দল এখনও অবস্থান স্পষ্ট করেনি। এই পরিস্থিতিতে অবশ্য দলের জাতীয় মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন জানিয়েছেন, দল বিষয়টির দিকে দৃষ্টি রেখেছে। সময়মতো উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এদিকে আবার মহুয়ার পাশে দাঁড়িয়েছেন কলকাতার মেয়র তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। তাঁর মন্তব্য, মহুয়া বেশি সরব বলেই এই ষড়যন্ত্র।
মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে সংসদে প্রশ্ন তোলার অভিযোগ প্রথম আনেন বিজেপি সাংসদ (BJP MP) নিশিকান্ত দুবে। তাঁর অভিযোগ ছিল, টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন তুলে মহুয়া স্বাধিকার ভঙ্গ করেছেন। এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রও করেছেন। বিজেপি সাংসদকে নাকি ওই সব অভিযোগের স্বপক্ষে প্রমাণ দিয়েছেন জনৈক আইনজীবী জয় অনন্ত দেহাদরি। কানাঘুষোয় শোনা যায়, ইনি মহুয়ার একসময়ের বিশেষ বন্ধু।
[আরও পড়ুন: ভোটে টিকিট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি, বৃদ্ধের ২ কোটি টাকা নিয়ে উধাও দুই বিজেপি নেতা]
শনিবার তদন্তের দাবি জানিয়ে মহুয়ার বিরুদ্ধে লোকপালকে চিঠি দিয়েছেন বিজেপি সাংসদ। ওই চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, সংসদে প্রশ্ন করার জন্য ২ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন কৃষ্ণনগরের (Krishnanagar) তৃণমূল সাংসদ। কবে এবং কোথায় অর্থ বিনিময় হয়েছে তাও জানেন বলে দাবি করেছেন নিশিকান্ত। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন মহুয়া। পালটা মানহানির মামলা করেছেন তিনি। তবে এই বিষয়ে ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়েছে দল। রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা কুণাল ঘোষের স্পষ্ট বক্তব্য ছিল, দল এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করবে না। যা বলার, মহুয়াই বলছেন।
[আরও পড়ুন: মহুয়াকে বরখাস্ত করা হচ্ছে না কেন? তৃণমূলের নীরবতায় তীব্র কটাক্ষ বিজেপির]
তবে রবিবার তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও ব্রায়েন (Derek O Brien) জানিয়েছেন, মহুয়ার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তসাপেক্ষ। দল সময়মতো যথাযথ পদক্ষেপ নেবে। অন্যদিকে, এই পরিস্থিতিতে কার্যত মহুয়ার পাশেই দাঁড়িয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। তাঁর মন্তব্য, ”আমি মনে করি, মহুয়ার কণ্ঠরোধ করার জন্য একটা ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। মহুয়া যেহেতু ভোকাল বেশি, তাই এরকম হচ্ছে। মহুয়া নিজে যথেষ্ট সাবলীল এই বিষয় থেকে বেরিয়ে আসার জন্য।”