সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একনায়ক মোয়াম্মার গদ্দাফির হত্যার পর থেকেই গৃহযুদ্ধে জর্জরিত লিবিয়া (Libya)। দেশটিতে শান্তিস্থাপনের চেষ্টা চালিয়েও সফল হয়নি রাষ্ট্রসংঘ। এহেন পরিস্থিতিতে এবার লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবদুল হামিদ দেইবার উপর হামলা চালায় গুপ্তঘাতকরা। তবে অল্পের জন্যে প্রাণে বেঁচে যান তিনি।
[আরও পড়ুন: কোয়াড গোষ্ঠীর বৈঠকে ইঙ্গিতে চিনকে কড়া বার্তা বিদেশমন্ত্রী জয়শংকরের]
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার ত্রিপোলিতে প্রধানমন্ত্রী দেইবার কনভয়ে হামলা চালায় বন্দুকধারীরা। গাড়ি লক্ষ্য করে ছোঁড়া অসংখ্য বুলেটের মধ্যে একটি বুলেট সামনের কাচ ভেদ করে ঢুকে যায়। যদিও চালক ও প্রধানমন্ত্রী অক্ষত রয়েছেন বলেই জানা গিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে অত্যাধুনিক রাইফেল থেকেই গুলি ছুঁড়েছিল হামলাকারীরা। ঠিক কে বা কারা গুলি চালিয়েছিল, সেই বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। উঠে এসেছে একাধিক সন্দেহভাজনের নামও। যদিও এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে এখনও কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
এদিকে, লিবিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। দেশের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রাক্তন অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী ফথি বাশাগার নাম ঘোষণা করেছে তবরুক শহরের পার্লামেন্ট। তাদের অভিযোগ, নতুন করে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে ব্যর্থ হয়েছেন আবদুল হামিদ দেইবা। তাই তারা এহেন পদক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছে। এদিকে, কোনও সমান্তরাল সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী দেইবা। ফলে দেশটিকে এক সরকারের ছাতার তলায় এনে শান্তিস্থাপন করার রাষ্ট্রসংঘের চেষ্টা আবারও ব্যর্থ হতে চলেছে বলেই মনে করছেন অনেকে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে ন্যাটো সামরিক জোটের মদতে মোয়াম্মার গদ্দাফিকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। তারপর থেকেই অশান্তি চলছে লিবিয়ায়। ২০১৪ সালে দেশটি পূর্ব ও পশ্চিম দু’টি সমান্তরাল শাসনব্যবস্থায় ভাগ হয়ে যায়। ২০২১ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রসংঘ-সমর্থিত রাজনৈতিক দল ‘গভর্নমেন্ট অব ন্যাশনাল ইউনিট’এর পক্ষ থেকে দেশটির অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হয় আবদুল হামিদকে। তাঁর দায়িত্ব ছিল, গত ডিসেম্বরে লিবিয়ায় যে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল তার পরিকল্পনা করা। শর্ত ছিল, তিনি নিজে প্রার্থী হতে পারবেন না। কিন্তু সব শর্ত ভঙ্গ করে নভেম্বর নাগাদ নিজেকে প্রার্থী ঘোষণা করেন আব্দুল হামিদ। তার পরেই প্রতিবাদে মুখর হন রাজনীতিকেরা।