অর্ক দে, বর্ধমান: বাণিজ্যিকভাবে বিদেশে পাড়ি দিতে চলেছে বর্ধমানের মিহিদানা (Mihidana)। শুধু তাই নয়, মিহিদানার সঙ্গে পূর্ব বর্ধমানের আরও দুই মিষ্টান্ন সীতাভোগ ও ল্যাংচা পরীক্ষামূলকভাবে পাঠানো হচ্ছে। জিওগ্রাফিক্যাল আইডেন্টিফিকেশন বা জিআই ট্যাগ পাওয়ার পর বিদেশের বাজারে সীতাভোগ (Sitabhog)-মিহিদানা প্রশংসিত হয়েছে। উচ্ছ্বসিত বর্ধমানের মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীরা। গত সপ্তাহে পরীক্ষামূলকভাবে মধ্যপ্রাচ্যের বাহরিনে পাড়ি দিয়েছিল মিহিদানা। সোমবার বর্ধমান সীতাভোগ- মিহিদানা ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সীতাভোগ রপ্তানি করার কথা জানানো হয়। মঙ্গলবার সকালেই ৫০ কেজি মিষ্টি বাহরিন দেশের উদ্দেশে রওনা দেবে।
২০১৭ সালে বর্ধমানের সীতাভোগ- মিহিদানা জিআই ট্যাগ পায়। তারপর থেকেই বিদেশে রফতানির জন্য চেষ্টা করে আসছেন ব্যবসায়ীরা। তবে রপ্তানির জন্য উপযুক্ত প্যাকেজিংয়ের অভাবে এতদিন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা সম্ভব হয়নি। পরে ব্যবসায়ীরা নিজেদের উদ্যোগে প্যাকেজিং করে কোল্ড চেনের মাধ্যমে রফতানির ব্যবস্থা করেন। এরপরই কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থা ‘অ্যাপেডা’-র সহায়তায় গত সপ্তাহে প্রথমবারের জন্য ‘স্যাম্পল’ হিসেবে বিদেশে পাড়ি দেয় মিহিদানা। তা খেয়ে তৃপ্ত বাহরিন। পরীক্ষামূলকভাবে মিহিদানা সফল হওয়ার পরই বরাত মিলেছে বলে জানিয়েছে বর্ধমানের মিষ্টি ব্যবসায়ী সংগঠন। তাই এবার মিহিদানার সঙ্গে সীতাভোগ ও শক্তিগড়ের বিখ্যাত ল্যাংচা পাঠাচ্ছেন তাঁরা। এমনকী, জিআই ট্যাগ পাওয়া দুই বিখ্যাত মিষ্টি সীতাভোগ-মিহিদানার কম্বো প্যাক তৈরি করে পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: ফুচকার ভিতরে আলু নয়, রয়েছে বাটার চিকেন! স্বাদ কেমন? ]
বর্ধমান সিতাভোগ-মিহিদানা ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রমোদ কুমার সিং বলেন, “গত সপ্তাহে মোট ১২ কেজি মিহিদানা পাঠানো হয়েছিল। এবার ২৫ কেজি মিহিদানা ও ২৫ কেজি সীতাভোগ পাঠানো হচ্ছে। এছাড়া ৫০ পিস ল্যাংচা পাঠানো হচ্ছে। মোট ১০০ প্যাকেট মিষ্টি রফতানি করা হচ্ছে। একই পদ্ধতিতে ৪০০ গ্রামের প্যাকেটে নির্দিষ্ট তাপমাত্রার মধ্যে রেখে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। কম্বো প্যাকেটের ক্ষেত্রে ২০০ গ্রাম করে সীতাভোগ ও মিহিদানা প্যাকেট করা হয়েছে। এই মিষ্টি দমদম বিমান বন্দরের মাধ্যমে সরাসরি মধ্য প্রাচ্যের বাহরিন গিয়ে পৌঁছবে।”
তিনি আরও জানান, এই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে মিহিদানা বিদেশে রফতানি করা হল। ভবিষ্যতে এর চাহিদা বাড়লে আরও রফতানি বাড়বে। তবে উপযুক্ত প্যাকেজিংয়ের ব্যবস্থা না হলে বেশি পরিমাণে রফতানি করা সম্ভব হবে না। কোল্ড চেনের মাধ্যমে সর্বাধিক ১২ ঘন্টা পর্যন্ত গুণগত মান বজায় রাখা যাবে। তাই এই পদ্ধতিতে প্যাকেজিংয়ের মাধ্যমে অল্প দূরত্বের মধ্যে মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলিতে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে। ইউরোপ বা আমেরিকার দেশগুলিতে পাঠাতে গেলে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে উন্নত প্যাকেজিং ব্যবস্থার প্রয়োজন। তিনি বলেন, “জিআই পাওয়ার পর এই প্রথমবার বিদেশে বর্ধমানের মিষ্টি পৌঁছে গেল। এটা আমাদের কাছে খুবই আনন্দের খবর।”