অমিত সিং দেও, মানবাজার: এক কাজে দুই লক্ষ্যপূরণ। জঙ্গল বাঁচাতে বিকল্প আয়ের পথ দেখাচ্ছে মাশরুম (Mashrrom)। আর সেই চাষের ফলে মাশরুমের নানা পদে এবার সেজে উঠবে পর্যটকদের পাত। শীতের পুরুলিয়ায় (Purulia)অসীম সৌন্দর্যের পাশাপাশি এবার পর্যটকদের রসনাতৃপ্তিতেও বাড়তি নজর দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি মাশরুম চাষে জোর দিয়ে জঙ্গল বাঁচানোর পাঠও দেওয়া হচ্ছে সেখানে।
পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে যৌথ বন পরিচালন সমিতির সদস্যদের মহিলাদের মাশরুম চাষাবাদের (Farming) পাঠ দিচ্ছে বনদপ্তর। এই চাষাবাদের মাধ্যমেই এবার থেকে নতুন বছরে পাহাড়ে আসা পর্যটকদের ডিশে থাকতে চলেছে অযোধ্যার মাশরুমের নানা পদ। পুরুলিয়া বিভাগের ডিএফও দেবাশিস শর্মা বলেন, “মাশরুম চাষের মাধ্যমে প্রতিটি পরিবার মাসিক ছ’ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত রোজগার করতে পারবেন। ফলে তাঁদের আর জঙ্গল থেকে কষ্ট করে জ্বালানির কাঠ কেটে হাটে-বাজারে নিয়ে যেতে হবে না। প্রথম ধাপে ছ’টি যৌথ বন পরিচালন সমিতির সদস্যদের এই পাঠ দেওয়া হয়। ধাপে ধাপে বাকিগুলি করা হবে।”
বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, অযোধ্যা রেঞ্জ এলাকায় মোট ২৫ টি যৌথ বন পরিচালন সমিতি আছে। প্রথম ধাপে ছ’টি সমিতির সদস্যদের পরিবারকে দুর্গাপুর থেকে মাশরুম চাষের বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। বাকিগুলিকেও ধাপে ধাপে কর্মশালার মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। শনিবার কর্মশালায় হাজির হয়ে মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেন ডিএফও। জানা গিয়েছে, প্রতি কেজি বীজ থেকে প্রায় চার থেকে পাঁচ কেজি মাশরুম চাষ হয়। ফলত প্রথম ধাপে এই চাষাবাদের জন্য বিনামূল্যে বীজ ও অন্যান্য সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। পরবর্তী ক্ষেত্রে নিজেরাই এই চাষ বাড়িতে করতে পারবে বলে আশাবাদী বনদপ্তর।
[আরও পড়ুন: ভিন রাজ্য থেকেও দেওয়া যাবে ভোট, নয়া ইভিএম যন্ত্র আনার প্রস্তাব নির্বাচন কমিশনের]
শুধু তাই নয়, এই উদ্যোগের সাফল্যে অযোধ্যা পাহাড়ের (Ayodhya Hill)বিভিন্ন হোটেল, পর্যটক আবাসে পর্যটকদের মেনুতে (Menue) যুক্ত হতে চলেছে অযোধ্যার পাহাড়ে চাষ হওয়া মাশরুমের হরেক পদ। পুরুলিয়া বনবিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, পাহাড়ের প্রচুর মানুষ জঙ্গল থেকে জ্বালানির জন্য কাঠ কেটে তা কয়েক কিলোমিটার পায়ে হেঁটে পাহাড়তলির হাটে, বাজারে বিক্রি করে সামান্য টাকা উপার্জন করেন। এই মাশরুম চাষ সফল হলে তাঁদের আর জঙ্গলের কাঠের উপর নির্ভর করতে হবে না। বিকল্প আয়ের উৎস হবে মাশরুম। সেই সঙ্গে রসনাতৃপ্তি (Taste)।