অরূপ বসাক, মালবাজার: প্রকৃতির কোলে নিরিবিলিতে দিন দুয়েক কাটাতে চাইছেন? কিংবা ডুয়ার্সের কোনও অফবিট ডেস্টিনেশনের খোঁজ করছেন? তাহলে আপনার পরবর্তী ট্যুর ডেস্টিনেশন হতে পারে কালিম্পং জেলার শিকারিটার গ্রাম। একঘেয়েমি কাটাতে নিঃসন্দেহে ঘুরে আসতে পারেন পাহাড়ি এই গ্রামে। বেশ মনোরম পরিবেশ।
কালিম্পং জেলার এক নম্বর ব্লকের নিমং গ্রাম পঞ্চায়েতের দলবচান্দ গ্রামের শিকারিটার এলাকা। নতুন করে তৈরি হচ্ছে এই পর্যটন কেন্দ্র। পিকনিক স্পট হিসেবেও একেবারে আদর্শ জায়গা কালিম্পং জেলার শিকারটার। পর্যটকদের থাকার জন্য রয়েছে মোট ১০টি টেন্ট। চাইলে তাঁবুতে রাত কাটানোর সুবিধেও পাবেন পর্যটকরা। পাশাপাশি ছোট হোমস্টেও রয়েছে। স্থানীয় যুবকরাই ধীরে ধীরে এই পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তুলছে। সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে নিমং গ্রাম পঞ্চায়েত।
কীভাবে যাবেন? নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে এই শিকারটার গ্রামের দূরত্ব মাত্র ৪০ কিলোমিটার। যে কোনও গাড়ি খুব সহজেই পৌঁছে দেবে। পর্যটকদের থাকার সুব্যবস্থাও রয়েছে। থাকা-খাওয়া সবমিলিয়ে জনপ্রতি খরচ পড়বে ১২০০ টাকা। পাশাপাশি এই অঞ্চলে পিকনিক স্পটও রয়েছে। পর্যটকেরা ঘিস নদীতে ধারে অনায়াসেই পরিবার বা বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে সময় কাটাতে পারবে। এখানে থাকলে ঘুরে আসতে পারেন উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু টিরিস্ট স্পটও। যেমন- গরুবাথান, ঝান্ডি, লাভা, লোলেগাঁও এখান থেকে খুব কাছে। ওদলাবাড়ি, পথরঝোড়া হয়েও এখানে আসা যাবে।
[আরও পড়ুন: নিজেদের হাতে তৈরি হোম-স্টে, পর্যটকদের আকর্ষণে সেজে উঠছে টোটোপাড়া]
এই টুরিজম স্পটের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ঘিস খোলা। নেপালি শব্দ খোলার অর্থ নদী। ঘিস খোলার জলের কলকলানি শব্দে মুগ্ধ হবেন পর্যটকরা। চারদিকে পাহাড়ে ঘেরা এই পর্যটনকেন্দ্র রবিবার উদবোধন করেন নিমং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দেবি ডোলমা তামাং। উপস্থিত ছিলেন অন্যান্য অতিথিবৃন্দ এবং পর্যটকেরাও। এদিন নেপালী নৃত্য এবং সঙ্গীতের মাধ্যমেই মুখরিত হয়ে ওঠে দলবচান্দ গ্রাম। উদ্যোক্তাদের তরফে দীলিপ তামাং জানালেন, ডুয়ার্সে আগত পর্যটকদের নতুন গন্তব্য হিসেবে শিকারটার একেবারে উপযুক্ত। নিভৃতে, নিরালায় দিন দুয়েক কাটাতে চাইলে এখানে চলে আসতেই পারেন।
নিমং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দেবী ডোলমা তামাং বলেন, রাস্তাঘাট একটু খারাপ রয়েছে। তাই বিভিন্ন দপ্তরের জানিয়েছি, পর্যটকদের যাতায়াতের সুবিধার্থে রাস্তাগুলো যাতে মেরামত হয়। শিকারটার টুরিজমের জন্য এলাকার বেকারত্ব কমবে। বহু যুবক-যুবতি কাজের সন্ধানে বিভিন্ন রাজ্যে চলে গিয়েছেন। তাঁরা এবার নিজের গ্রামে ফিরবেন। গ্রাম পঞ্চায়েত থেকেও সহযোগিতা করা হবে। ঘুরতে আসা পর্যটক যশোপ্রকাশ দেব দাস, দেবপ্রিয় দত্ত গুপ্ত, সৌরভ চৌধুরীরা জানান, শিকারটার সত্যিই অসাধারন জায়গা। এক বার না এলে বোঝানো যাবে না, কী অপুর্ব জায়গা এই শিকারটার স্পট।