সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শত্রুর নাম অ্যাডিনো ভাইরাস। এমন অদৃশ্য শত্রুর আক্রমণে দিশেহারা শিশুর পরিবার। কোলে একরত্তি, চোখে জল নিয়ে মা-বাবা ছুটে আসছেন শহরের হাসপাতালে। যত দিন যাচ্ছে ততই সংক্রমণ ছড়াচ্ছে শিশুদের মধ্যে। শুধু কলকাতা নয়, পশ্চিমবঙ্গের অন্তত ৫০ ভাগ শিশু যাদের বয়স ৩ মাস থেকে ৫ বছরের মধ্যে জ্বর, সর্দি, কাশি আর শ্বাসকষ্টে কাহিল। ৩৪ শতাংশ অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত। এছাড়াও নিউমনোকক্কাস ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ রয়েছে। একজন আক্রান্ত হলেই তার হাঁচি-কাশি থেকে অন্য শিশু আক্রান্ত হচ্ছে। দ্রুত বাড়ছে সংক্রমণ।
আপনার বাড়ির খুদে অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে কিনা, তা বুঝবেন কীভাবে? জেনে নিন অ্যাডিনো ভাইরাস আক্রমণের উপসর্গ।
- জ্বর
- কাশি
- সর্দি
- মাথাব্যথা
- শ্বাসকষ্ট
- পেটখারাপ
- বমি
[আরও পড়ুন: কলকাতাবাসীর ডায়রিয়ার জন্য দায়ী মস্কোর পরজীবী এন্টামিবা! উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা]
আপনার বাড়ির খুদের মধ্যে উপরোক্ত উপসর্গ দেখা দিলে, আগেভাগেই সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। চলুন জেনে নেওয়া যাক এইরকম পরিস্থিতিতে ঠিক কী করবেন।
- অসুস্থকে ঘনঘন জল, ওআরএস খাওয়াতে হবে।
- জ্বর হলে তাপমাত্রা মাপতে হবে বারবার।
- খেয়াল রাখা দরকার প্রস্রাবের মাত্রা।
- জ্বর, সর্দিতে খাওয়া যেতে পারে প্যারাসিটামল।
- বমি হলে খাওয়াতে পারেন ডোমপেরিডন, অন্ডানসেটরোনের মতো ওষুধ।
- শ্বাসকষ্ট তীব্র হলে অবশ্যই হাসপাতালে ভরতি করতে হবে।
স্কুল খুলে গিয়েছে। আর বাচ্চারা প্রতিনিয়ত সেখানে যাচ্ছে। স্কুলে আপনার দস্যি আরও পাঁচজনের সংস্পর্শ যে আসবেই, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তাই উপসর্গ দেখা দিলে শিশুকে স্কুলে না পাঠানোই ভাল। আপনার শিশু সংক্রমিত হলে তাকে কোয়ারেন্টাইনে রাখুন। যাতে সকলের সংস্পর্শে সে আসতে না পারে, সেদিকে অবশ্যই নজর রাখুন। সংক্রমণ রুখতে মাস্ক এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের মতো সতর্কতা অবলম্বন করুন।
ফি বছর ঋতু বদলের সময় বাচ্চাদের সর্দি-কাশি হয়। কিন্তু করোনা ভাইরাসের দাপট কাটতে না কাটতে এমন অবস্থা কেন? উত্তর খুঁজছে কেন্দ্রীয় সংস্থা নাইসেড। ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য ভবন প্রায় ৫০০ নমুনা নাইসেডকে পাঠিয়েছে। তবে কি অ্যাডিনো ভাইরাসের জিনের মিউটেশন ঘটেছে? নাইসেড অধিকর্তা ডা. শান্তা দত্তর কথায়, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া আর কোনও রাজ্যে শিশুদের মধ্যে অ্যাডিনো ভাইরাসের এমন মারমুখী চেহারা নেই। জিনের চরিত্র বদল হয়েছে কি না তা পরীক্ষা করাতে জিনোম সিকোয়েন্সিং করতে হচ্ছে।’’ ডা. দত্তর কথায়, ‘‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি থেকেও কোনও সতর্কতা জারি হয়নি। তাহলে কেন কলকাতা-সহ দুই ২৪ পরগনা, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, বর্ধমান এবং উত্তরবঙ্গের সাতটি জেলায় শিশুদের মধ্যে রোগ এত ছড়াচ্ছে তা জানতে সমীক্ষা শুরু হয়েছে।’’