কৃষ্ণকুমার দাস: ইচ্ছে থাকলেও যাঁরা এবার পুজোয় কাশ্মীরে বেড়াতে যেতে পারেননি তাঁদের কাছে সুখবর। কারণ ঘরের পাশে উঠে এল ভূস্বর্গের ‘রত্ন’ ডাললেকের ভাসমান বিশ্রামতরী–হাউসবোট। তাও আবার একটি-দুটি নয়, চাইলে একসঙ্গে আটটি পরিবার ভূরিভোজ খাওয়া-দাওয়ার সঙ্গে রাত্রিবাস করে আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন সর্বাধুনিক এই হাউসবোটে। সৌজন্যে রাজ্য সরকারের পর্যটন দপ্তর।
কলকাতার কাছেই বারাকপুরের পলতায় গঙ্গাবক্ষে চালু হচ্ছে ডাললেকের ধাঁচে দু’টি বিশাল ভাসমান হাউসবোট। প্রতিটি হাউসবোটে চারটি করে ডাবল বেড ডিলাক্স-এসি রুম রয়েছে। থাকছে প্রশস্ত ডাইনিং হল, কমোড-বাথরুম থেকে শুরু করে আধুনিক নাগরিক জীবনের যাবতীয় পরিকাঠামো ও পরিষেবা। প্রতিটি রুম থেকেই প্রশস্ত কাঁচের জানলা দিয়ে বহমান গঙ্গার সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকরা। কমবয়সী সন্তানকে নিয়ে একটি দম্পতি অনায়াসে থাকতে পারবেন কাশ্মীরি পরিমন্ডলের উষ্ণতা ঘেরা ওই হাউসবোটে।
[আরও পড়ুন: পুজোয় উত্তরবঙ্গের ট্রেনে টিকিট নেই, বেসরকারি বাসের ভাড়া ৩ গুণ! মুশকিল আসান NBSTC]
রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন জানিয়েছেন,”পুরোটাই অনলাইনে বুকিং দেওয়া হচ্ছে পর্যটন উন্নয়ন নিগমের ওয়েবসাইট মারফত। প্যাকেজে প্রাতঃরাশ মিলবে বিনামূল্যে।” অবশ্য অর্ডার দিলেই মিলবে মনপসন্দ কন্টিনেন্টাল, চাইনিজ ও মোগলাই ডিস। পর্যটন নিগম সূত্রে খবর, ভাসমান এই ডাবল বেডের ভাড়া রুম পিছু চার হাজার টাকা। বৃহস্পতিবার থেকেই অনলাইনে বুকিং শুরু হয়ে যাচ্ছে। পৌঁছতে হবে মুখ্যমন্ত্রীর নামকরণ করা ‘মুক্তধারা’ উদ্যান লাগোয়া গঙ্গার ঘাটে। এলাকার বাসিন্দা মালঞ্চ পার্ক বলেই বেশি চেনেন। রাজ্যের অন্যতম প্রাচীন নিউ বারাকপুর পুরসভার পাশে ও পলতা জলপ্রকল্পের মধ্যবর্তী ঘাটে জোড়া ভাসমান বিশ্রাম তরী লাগানো থাকছে। বছর তিনেক আগেই ইন্দ্রনীল সেন পর্যটন দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী হয়ে চন্দননগর ঘাটে ‘জলশ্রী’ নামে প্রথম ভাসমান রেস্তোরা চালু করেছিলেন।
ডাললেকের পরিমন্ডলে ঘেরা কাশ্মীরি হাউসবোটের পাশাপাশি এবার মুকুটমনিপুরের বারোভুতু, বীরভুমের বাউলবিতান এবং চন্দনগরের কেএমডিএ পার্কেও চালু হচ্ছে নয়া সরকারি পর্যটক আবাসন। বারোভুতুতে ১২টি, বাউলবিতানে ২৮টি এবং চন্দননগরে ৩২টি ডিলাক্স রুম থাকছে পর্যটকদের জন্য। এর সঙ্গে চন্দননগরে ওই রুমগুলির পাশে ইকো পার্কের মিস্টিকার ধাঁচে আরও একটি আধুনিক ব্যাংকোয়েট চালু হচ্ছে। যেখানে ভিতরে ৬০০ এবং বাইরে ৪০০ জন অতিথিকে আপ্যায়ন করতে পারবেন বুকিং করা আয়োজকরা।
[আরও পড়ুন: হাতির পিঠে চেপে গন্ডার দর্শন! পুজোর মুখেই গরুমারায় শুরু ‘এলিফ্যান্ট রাইডিং’]
মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনের কথায়, “৩০ নভেম্বরের মধ্যে তিনটি নয়া পর্যটক আবাস চালু হয়ে যাবে। বুকিং অন্যগুলির মতো পর্যটন নিগমের পোর্টাল থেকেই করতে হবে।” পর্যটন দপ্তরের এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, দপ্তরের দায়িত্ব নিয়েই গত ১৫ দিনে ১৫ মাসের থমকে থাকা কাজে রকেটের গতি এনে দিয়েছেন ইন্দ্রনীল সেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে পুজোয় এবার দেশ-বিদেশের দর্শনার্থীদের জন্য স্পেশাল প্যাকেজও আনছে রাজ্য পর্যটন নিগম।