স্টাফ রিপোর্টার: হাত-পায়ে র্যাশ, ধুম জ্বর। মুখের ভিতরেও ঘা। গরমের ছুটির মুখে ঘরে ঘরে ছোটদের শরীর খারাপ। চিকিৎসকরা বলছেন, ফের বাড়ছে 'হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ'। তা নিয়ে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের চেম্বারে উপচে পড়ছে ভিড়। কীভাবে সুস্থ রাখবেন সন্তানদের? জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
ডা. নিশান্তদেব ঘটক সম্প্রতি মাত্র বাহাত্তর ঘণ্টায় চারজন 'হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজে'র রোগী পেয়েছেন। অসুখের সময়কাল বলছে, ফি বছর এই এপ্রিল-মে মাসেই মাথাচাড়া দিচ্ছে হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ। এ অসুখ ভাইরাস ঘটিত। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এর নেপথ্যে 'কক্স্যাকই ভাইরাস'। সে ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করলেই হাত-পায়ে র্যাশ। ধুম জ্বর। "এই উপসর্গ দেখা দিলে শিশুকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। এটা ভাইরাস ঘটিত অসুখ। কোনওভাবেই নিজে দোকান থেকে অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খাওয়াবেন না," সতর্ক করেছেন চিকিৎসকরা। বি সি রায় শিশু হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আবু ওবায়েদ বলছেন, "মারাত্মক ছোঁয়াচে এই অসুখ। আক্রান্ত হলেই শিশুকে আলাদা রাখুন। আর পাঁচজনের সঙ্গে মিশতে দেবেন না।"
অনেকেই হাত-পায়ে র্যাশ দেখে চিকেন পক্সের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন। কিন্তু হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজে হাতের তালু-পায়ের পাতায় র্যাশ বেরোয়। এমনটা দেখা যায় না পক্সের ক্ষেত্রে। লালারস, শিশুর মল, এমনকী আক্রান্তকে ছুঁয়ে দিলে ছড়াতে পারে অসুখ। ডা. নিশান্তদেব ঘটকের কথায়, "চেষ্টা করুন শিশুকে আলাদা রাখতে। স্কুলে কিংবা কোচিংয়ে যদি শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ শুরু হয়, তবে আক্রান্ত শিশুর সংস্পর্শে আসা অন্য শিশুদের মধ্যে মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়তে পারে হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ। আক্রান্ত হলে শিশুকে বাড়িতেই রাখুন।"
কিন্তু কতদিন? চিকিৎসকদের কথায়, এই রোগে আক্রান্ত হলে সারতে সময় লাগে সাত থেকে ১৪ দিন। বাড়ির বয়স্করা অধিকাংশ সময় দেখভাল করেন শিশুকে। ডা. নিশান্তদেব ঘটক জানিয়েছেন, যেহেতু অসুখ মারাত্মক ছোঁয়াচে দাদু-ঠাকুরমাকে এই সময় শিশুর কাছে আসতে না দেওয়াই ভালো। বিসি রায় শিশু হাসপাতাল, ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথেও আসছে অগুনতি হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজে আক্রান্ত শিশু। চিকিৎসকরা বলছেন, "আক্রান্ত শিশুকে প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়ান। গায়ে অতিরিক্ত র্যাশ বেরোলে ত্বকের লোশন ব্যবহার করতে হবে। এ অসুখে শরীরে জিঙ্কের অভাব দেখা দেয়। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে জিঙ্ক ট্যাবলেট খাওয়ারও নিদান দিয়েছেন চিকিৎসকরা।"
