আকাশ মিশ্র: নায়কের নাম লাইগার! মানে একেবারে মিশ্র প্রজাতির। কিছুটা লায়ন, আর কিছুটা টাইগার! না না, দেখতে শুনতে মানুষের মতনই, স্বভাবটাই বাঘ ও সিংহের মিশ্রণ! অন্তত, নায়কের মা বালামণি সবাইকে চিৎকার করে এরকমটাই বলে বেরান! তা এই লাইগারকে এমন বলার কারণ কী? সেটাই পরিচালক পুরী জগন্নাথের নতুন ছবি ‘লাইগার’-এর উদ্দেশ্য ও বিধেয়। সঙ্গে রয়েছে এক গরীব ছেলের আন্তর্জাতিক বক্সিং প্রতিযোগিতা জেতার স্বপ্ন। তবে এই নায়ক মারকুটে হলেও, কথা বলতে গিয়েই কথা আটকে যায়। ভাবুন তো কী বিপদ! এসবই মোটামুটি ‘লাইগার’ ছবির আড়াই ঘণ্টার গল্প। যা কিনা সহজ কথায় অত্যাচার।
ছবি শুরু থেকেই বিনা কারণে লাইগার (Liger) চিৎকার করতে থাকে। প্রেমে পড়লেও চিৎকার, ব্রেকআপেও চিৎকার। চিৎকারে লাইগারকে ছাপিয়ে যায় তাঁর মা বালামণি। বুক চিতিয়ে বার বার একই সংলাপ, আমার ছেলে একাধারে বাঘ ও সিংহ!
করণ জোহর প্রযোজিত এই ছবি দেখতে ঝকঝকে, কিন্তু একেবারেই অন্তঃসারশূন্য। ছবিটা দেখতে বসে বার বার ‘কবীর সিং’ বা ‘অর্জুন রেড্ডি’ ছবির কথা মনে পড়তে বাধ্য। কারণ, ‘লাইগার’ ছবিতে বিজয়ের ম্যানারিজম অর্জুন রেড্ডির থেকে খুব একটা আলাদা নয়।
[আরও পড়ুন: কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের মাস্টারস্ট্রোক, ‘লক্ষ্মী ছেলে’র মতো ছবি গত ৫ বছরে তৈরি হয়নি]
‘লাইগার’ ছবির মূল সমস্যা হল গল্প। এই ছবি বস্তাপচা গল্পকেই নতুন মোড়ক দিতে চেয়েছে। যেখানে বদলা ও গরীব ছেলের স্বপ্নপূরণ এক ঢালে বয়ে যায়। যাঁরা অ্যাকশন ছবি দেখতে ভালবাসেন, তাঁদের ‘লাইগার’ ভাল লাগবে। তবে এই অ্যাকশন অতিমাত্রায় হওয়ার ফলে মাথাব্যথার কারণ হতে পারে।
অভিনয়ের দিক থেকে বিজয় দেবারাকোন্ডা (Vijay Deverakonda) চেষ্টা করেছেন। তবে অভিনয়ের থেকে তাঁর সুঠাম চেহারাই বেশি নজর কাড়ে। অনন্যা পাণ্ডের (Ananya Pandey) বেশি কিছু করার ছিল না। বিজয়ের মায়ের চরিত্রে রামাইয়া যথাযথ। ট্রেনারের চরিত্রে রনিত রায়ও ভাল। আসলে, ‘লাইগার’ ছবির চিত্রনাট্যেই গণ্ডগোল। ঝকঝকে উপস্থাপনার দিকে তাকাতে গিয়ে পরিচালক চিত্রনাট্যের দিকে মন দেননি। আর তাই ‘লাইগার’ একেবারেই মধ্যমানের ছবি। এমনকী, কিংবদন্তি বক্সার মাইক টাইসনের ছোট্ট উপস্থিতি ও নায়কের সঙ্গে মুষ্ঠিযুদ্ধও এই ছবিকে উচ্চমানের করতে ব্যর্থ।