সম্যক খান এবং অংশুপ্রতিম পাল: মাটির তলায় কেউ যেন অস্ত্র কারখানা বানিয়েছে! অজানা কোনও মিশন সফল করতে গ্রামের রাস্তার নিচে লুকিয়ে রেখে গিয়েছে অস্ত্র! মাটি খুঁড়লেই মিলছে সেই আগ্নেয়াস্ত্র। বুধবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতার গোয়ালতোড় এলাকায়।
গড়বেতার গোয়ালতোড় থানার অন্তর্গত বড়ডাঙ্গা গ্রামের একশো দিনের কাজ চলছিল। স্থানীয় পঞ্চায়েতের নজরদারিতে চলছিল মাটি কাটা। এদিন সেই মাটি কাটার কাজ শুরু হতেই শয়ে-শয়ে আগ্নেয়স্ত্রের সন্ধান মেলে বলে দাবি গ্রামবাসীদের। এত আগ্নোয়াস্ত্র গ্রামে কোথা থেকে এল, কারা লুকিয়ে রেখেছিল, তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন।
[আরও পড়ুন: পাকিস্তানের নির্যাতন থেকে আমাদের বাঁচান, মোদিকে কাতর আরজি PoK কাশ্মীরের বাসিন্দার]
স্থানীয় সূত্রে খবর, এদিন মাটি খুঁড়তেই প্লাস্টিকের প্যাকেটে মোড়া কয়েকটি বন্দুক উঠে আসে। যা দেখে রীতিমতো ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায় এলাকাবাসী। ফের মাটি খুঁড়তে আবার উঠে আসে প্যাকেটবন্দি প্রচুর বন্দুক। সঙ্গে প্রচুর কার্তুজও। গ্রামবাসীদের দাবি, কয়েক শো বন্দুক মিলেছে রাস্তার নিচ থেকে। সঙ্গে শ পাঁচেক কার্তুজ। যদিও সবক’টিই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কিন্তু গ্রামের রাস্তার নিচে এত গুলি-বারুদ, আগ্নেয়াস্ত্র কোথা থেকে এল, তা ঘিরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
এদিকে বড়ডাঙ্গা গ্রামে এহেন কীর্তির খবর পৌঁছে যায় থানায়। কী ঘটেছে, তা জানতে গ্রামে আসে পুলিশ বাহিনী। তাঁরা উদ্ধার হওয়া বন্দুক ও গুলি উদ্ধার করে নিয়ে যায় থানায়। এ প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার জানান, “গোয়ালতোড় থানা এলাকার বড়ডাঙ্গা গ্রামে মাটি কাটার সময় প্লাস্টিকবন্দি অবস্থায় পুরনো আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ৩৫ টি নষ্ট বন্দুক এবং প্রায় ৪০০-৪৫০ নিষ্ক্রিয় কার্তুজ উদ্ধার করে।”
[আরও পড়ুন: পাকিস্তানের নির্যাতন থেকে আমাদের বাঁচান, মোদিকে কাতর আরজি PoK কাশ্মীরের বাসিন্দার]
স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, বাম আমলে সিপিএমের হার্মাদরা তাদের শক্তঘাঁটি গড়বেতার মাটিতে এই আগ্নেয়াস্ত্র লুকিয়ে রেখেছিল। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার অভিযোগ করেছেন, বামেরা অস্ত্রের কারবার করত। সে কথা আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল। তাদের আরও দাবি, এদিন উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রগুলি সিপিএমের লাল পতাকায় মোড়া ছিল। যদিও এ নিয়ে স্থানীয় সিপিএম নেতারা কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। যদিও পুলিশের সন্দেহ, অস্ত্র লুকিয়েছিল মাওবাদীরা।