সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২৪ ঘন্টা আগে বার্সেলোনা (FC Barcelona) ছাড়ার কথা প্রকাশ্যে বলেছিলেন লিওনেল মেসি (Lionel Messi)। এবার নাকি সরাসরি পেপ গুয়ার্দিওলাকে (Pep Guardiola) ফোন করে বসলেন। জানিয়ে দিলেন, আমি যেতে চাই। এভাবেই মেসিকে নিয়ে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্ব ফুটবলে।
মেসির বার্সা ছাড়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিশ্ব ফুটবল মহল স্তম্ভিত। কারণ বার্সা আর মেসি হয়ে গিয়েছিল সমার্থক শব্দ। সেই জায়গায় মেসির বিদায় মোটামুটি নিশ্চিত হওয়ায় বিশ্ব ফুটবল মহল তোলপাড় হতে শুরু করেছে। এখনও জল্পনা-কল্পনার অন্ত নেই যে, মেসি আসলে যাবেন কোথায়? চার-পাঁচটা ক্লাবের নাম সামনে চলে আসছে। ইন্টার মিলান, পিএসজি, জুভেন্তাস থেকে শুরু করে ম্যাঞ্চেস্টার সিটি, প্রতিটি দল মেসিকে নেওয়ার জন্য প্রচণ্ড আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে অন্যান্য দলের তুলনায় এগিয়ে সিটি। কেন? একটাই কারণ কোচ পেপ গুয়ার্দিওলা। আসলে মেসির উত্থানের মূলে গুয়ার্দিওলার অবদান অনেকখানি। তাই মেসি চান পুরোন কোচকে সঙ্গী করে ফুটবলে পুর্নজীবন ঘটাতে। এমনই অভিব্যক্তি নাকি ফোনে ব্যক্ত করেছেন মেসি। গুয়ার্দিওলাকে তিনি নাকি বলেছেন, আমার ইচ্ছে আপনার অধীনে ফের খেলা। যদি আপনি আমাকে খেলার সুযোগ করে দেন।
[আরও পড়ুন: IPL ফ্র্যাঞ্চাইজি থেকে বিজেপি! কোথায় যোগ দেবেন মেসি? সোশ্যাল মিডিয়ায় মিমের বন্যা]
মেসি বলছেন বটে কিন্তু বার্সা ছাড়া তাঁর পক্ষে সম্ভব হবে কি? প্রশ্ন উঠেছে এই কারণেই, তিনি বার্সা ছাড়লে যে ট্রান্সফার ফি নতুন ক্লাবকে দিতে হবে তা এককথায় চক্ষুচড়ক গাছ হওয়ার জোগাড়। তাঁর চুক্তিতে উল্লেখ করা আছে, ৮৩০ মিলিয়ন ইউরো দিতে হবে। তার উপর মেসির বেতন আছে। যা বছরের শেষে বিশাল অর্থ গিয়ে দাঁড়াবে। ম্যাঞ্চেস্টার সিটি যদি শেষমেশ মেসির দিকে ঝোঁকে তাহলে ছেড়ে দিতে হবে বেশ কয়েকজন তারকাকে। এই ভয়ের সঙ্গে গ্রাস করেছে কোভিড-১৯ (COVID-19)। এই সময় ঝুঁকি নিয়ে মেসিকে নেওয়া উচিত হবে কিনা তাই নিয়ে সিটি কর্তারা দারুন চিন্তায়। তাই মেসি-গুয়ার্দিওলা জুটি দেখা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা তুঙ্গে। তবে এও শোনা যাচ্ছে, বার্সা শেষমেশ ৮৩০ মিলিয়ন ইউরোর বদলে ২২০ মিলিয়ন পেলেই নাকি মেসিকে ছেড়ে দিতে রাজি আছে। ক্লাবকর্তারা মনে করছেন, ৩৩ বছরে পা দেওয়া মেসির কাছ থেকে নতুন করে কিছু আর পাওয়ার নেই।
প্রশ্ন হল, প্রিয় ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্ত মেসি নিলেন কেন? কতকগুলো ফ্যাক্টর নাকি আর্জেন্টাইন তারকাকে নাড়া দিয়ে গিয়েছে। কি? এক, ক্লাব প্রেসিডেন্ট সেভাবে নাকি মেসিকে পাত্তা দিতেন না। দলের একজন সিনিয়রকে যেভাবে সম্মান দেওয়া উচিত তা নাকি দেননি বার্তোমিউ। নেইমারকে না এনে গ্রিজম্যানকে নিয়ে আসাই তার বড় প্রমাণ। এদিকে ক্যাটালিয়ানরা চান মেসি থাকুন কিন্তু ক্লাব থেকে সরে যান বার্তোমিউ। দুই, সেতিয়েনকে কোচ করে আনা। মেসি মন থেকে নাকি কখনও চাননি সেতিয়েন কোচ হয়ে আসুন। তাছাড়া তাঁর কোচিং স্ট্র্যাটেজি কখনও সেভাবে ভাল লাগেনি মেসির। তিন, নতুন কোচ কোম্যানের শুরুতেই কিছু মন্তব্য। বেশ কিছু ফুটবলারকে সরাসরি না বলে দেওয়া। এতদিনের সতীর্থদের থেকে দূরে সরে যাওয়াকে মানতে নাকি নারাজ বার্সা তারকা। তাছাড়া কোমানের সঙ্গে তাঁর কিছু কথা প্রকাশ্যে চলে আসা। যা মনে প্রচণ্ড তাঁকে আঘাত দিয়েছে। মেসির বার্সা ছাড়ার খবর শুনে কার্লোস পুওল টুইট করে বলেছেন, “তোমার প্রতি শ্রদ্ধা, সমর্থন চিরজীবন থাকবে।” যা দেখে সুয়ারেজ আবার হাততালির একটা ছবি পোস্ট করেছেন। সব মিলিয়ে ফুটবল বিশ্বের খবরে শীর্ষে ছিলেন, থাকবেনও মেসি।