সুনীপা চক্রবর্তী ও টিটুন মল্লিক: আশঙ্কা সত্যি করে তবে কি বঙ্গে ঢুকেই পড়ল পঙ্গপালের দল? ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল ব্লকের একটি গ্রামে চাষের জমিতে পঙ্গপালের হামলাতেই লাউ এবং আদা গাছের দফারফা বলে মনে করা হচ্ছে। আতঙ্ক ছড়িয়েছে স্থানীয় কৃষক মহলে। যদিও ঝাড়গ্রাম জেলা কৃষি দপ্তরের কাছে এরকম কোনও খবর নেই বলে দাবি কৃষি আধিকারিকের। তবে করোনা আর আমফান আতঙ্কের পর পঙ্গপালের উপদ্রবে ঘুম উড়েছে কৃষকদের।
সপ্তাহ দুই আগে আমফানের জেরে জেলায় চাষবাসের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বোরো ধান-সহ সবজির খেত কার্যত তছনছ হয়ে গিয়েছে। তার উপরে পঙ্গপালের দল এমন হামলা শুরু করলে সমূহ ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কায় কাঁটা কৃষকরা। সাঁকরাইল গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত জোড়াশাল গ্রামের চাষের জমিতে পঙ্গপাল দেখা গিয়েছে বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের। এখন বেশিরভাগ জমি থেকে ধান কাটা হয়ে গিয়েছে। তবে করলা, ঝিঙে, কুমড়ো, পটল, কুঁদরি-সহ বিভিন্ন ধরনের সবজি রয়েছে জমিতে। স্থানীয়দের একাংশের বক্তব্য, জমিতে বেশ কিছু পঙ্গপাল জাতীয় পতঙ্গ দেখা গিয়েছে। এগুলি সাধারণত জমিতে থাকে। খুব বড় সংখ্যায় এদের দেখা যায়নি। জোড়াশাল গ্রামের বাসিন্দা সত্যজিৎ দে বলেন, “গত দু, একদিন বিকেলে ধূসর রঙের পঙ্গপাল দেখা গিয়েছে। আদা, লাউ গাছের দফারফা করে দিয়েছে।”
[আরও পড়ুন: আনলক ওয়ানেই স্বাভাবিক ছন্দে ফিরল চা বাগান, ১০০ শতাংশ কর্মী নিয়ে শুরু কাজ]
দেশের বিভিন্ন রাজ্যে পঙ্গপালের হানায় বিঘার পর বিঘা জমির ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তবে ঝাড়গ্রাম জেলায় এখনো এরকম কিছু ঘটেনি বলে জানা গিয়েছে কৃষি দপ্তরের দাবি। ঝাড়গ্রাম জেলা কৃষি দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর মানস রঞ্জন প্রধান বলেন, “আমাদের জেলায় পঙ্গপালের কোনও খবর নেই। রাজ্য থেকে এখনও পর্যন্ত এই সংক্রান্ত বিষয়ে নির্দেশও আসেনি। জমিতে কীট-পতঙ্গ থাকেই। তবে আমরা খবর নিয়ে দেখব।” রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশে হামালা হানা দিয়ে ব্যাপক ফসলের ক্ষয়ক্ষতি করছে। তারপরে সেই পঙ্গপালের দল পূর্বের দিকে সরছে বলেও জানা গিয়েছিল। এমনকি ঝাড়খন্ড পর্যন্ত চলে এসেছে বলেও খবর ছিল। এবার ঝাড়গ্রামের জোড়াশাল গ্রামে সেই পঙ্গপালের দলই ঢুকে পড়ল কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হচ্ছে কৃষি দপ্তরের দাবিতে।
[আরও পড়ুন: আমফানের দাপটে লণ্ডভণ্ড ফল বাগান, সরকারি সাহায্যের আরজি জানিয়ে বিডিওর দ্বারস্থ চাষিরা]
আমফানে করলা, ঝিঙে-সহ আরও নানা ধরনের সবজি চাষের ক্ষতি হয়েছে। তারউপর এসব এলাকায় সারা বছর ধরেই লেগে থাকে দলমার দাঁতালদের তাণ্ডব। তার উপর সত্যিই যদি পঙ্গপালের দল হামলা চালায় তাহলে জঙ্গলমহলের কৃষকদের অনেক ক্ষতি সাধন হবে বলে আশঙ্কা।
এদিকে, বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের রাধানগর গ্রাম সংলগ্ন এলাকায় লাখেশোল শালবাগানে পঙ্গপাল জাতীয় পতঙ্গ দেখে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। রবিবার বিকেলের পর থেকে এই শালবনের একাধিক সাল গাছে ঝাঁকে ঝাঁকে এই পতঙ্গ গুলিকে পাতা খেতে দেখা যায় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় মানুষজন। শালবনে পতঙ্গদের এই পাতা খাওয়ার দৃশ্য বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন তাঁরা। যদিও বনদপ্তরের তরফ এ বিষয়ে কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি। স্থানীয় রাধানগর রেঞ্জের রেঞ্জার নবীন লোহার জানিয়েছেন, ”স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়েছি। খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
ছবি: প্রতীম মৈত্র।
The post বঙ্গে ঢুকে পড়ল পঙ্গপালের দল? একাধিক জেলায় জমিতে ফসলের দফারফা, তুঙ্গে আতঙ্ক appeared first on Sangbad Pratidin.