সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জেল থেকে মুক্তি পেয়ে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের (Arvind Kejriwal) করা একটি মন্তব্য। তাই নিয়েই এখন যত কথা জাতীয় রাজনীতিতে। দলের অঘোষিত 'অবসর নীতি' মেনে মোদিও কি ৭৫ বছরের পর অবসর নেবেন? প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে জাতীয় রাজনীতিতে। বিজেপি বলছে, অবসরের প্রশ্ন নেই। মোদি প্রধানমন্ত্রী থাকবেন ২০২৯ সাল পর্যন্ত এবং তার পরেও। বিরোধীরা বলছেন, এ তো দ্বিচারিতা! ক্ষমতার মোহে নিজের তৈরি নিয়মই ভাঙছেন মোদি।
শনিবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন, সেপ্টেম্বরেই দিল্লির মসনদে মোদির (Narendra Modi) বদলে বসবেন তাঁর 'অনুচর' অমিত শাহ। কারণ, মোদির বয়স ৭৫ বছর হচ্ছে আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর। তিনি নিজেই নিয়ম করেছেন ৭৫ বছর বয়স হলেই দলের নেতারা অবসর নেবেন। লালকৃষ্ণ আডবানী, মুরলী মনোহর জোশী, সুমিত্রা মহাজন, যশবন্ত সিনহারা এই নিয়মের বলি হয়েছেন। এবার তাহলে ১৭ সেপ্টেম্বর মোদিও অবসর নেবেন। সেই সঙ্গে কেজরি কৌশলে প্রশ্ন ছুড়েছেন, মোদি অবসর নিলে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন? মোদির গ্যারান্টি কে পূরণ করবেন? অমিত শাহ করবেন কী?
[আরও পড়ুন: মধ্যপ্রাচ্যে এবার পরমাণু যুদ্ধ? ইরানের হুঁশিয়ারির পর বাড়ছে আশঙ্কা]
বিজেপি মনে করছে, এ সবই বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা। লোকসভা নির্বচনে (Lok Sabha 2024) বিজেপির সবচেয়ে বড় ইউএসপিই হল মোদির ভাবমূর্তি। বিরোধীরা সেই অস্ত্রটাই কেড়ে নিতে চাইছে। তড়িঘড়ি আসরে নেমেছেন খোদ অমিত শাহ। তিনি সাফ বলে দিয়েছেন, “৭৫ বছর বয়সেই অবসর নিতে হবে, এমন কোনও কথা বিজেপির সংবিধানে লেখা নেই। ক্ষমতায় ফিরলে মোদি ২০২৯ সাল পর্যন্তই প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। আগামী দিনেও দেশকে নেতৃত্ব দেবেন। মোদিজিই আমাদের নেতা। বিজেপির অন্দরে এ নিয়ে কোনও সংশয় নেই। এভাবে মিথ্যা ছড়িয়ে কোনও লাভ হবে না। ইন্ডি জোটের স্বপ্ন কোনও দিন পূরণ হবে না।”
[আরও পড়ুন: মোদির সফরের মাঝেই ফাঁস সন্দেশখালি স্টিং পার্ট-২, ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে কে? নীল নকশা কার?]
শাহের এই ঘোষণার মধ্যেও দ্বিচারিতা দেখছে আম আদমি পার্টি। আপ নেতা সঞ্জয় সিং মনে করিয়ে দিচ্ছেন, এই অমিত শাহই ২০১৯ সালে লোকসভার প্রার্থী ঘোষণার সময় স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, ৭৫ বছর বয়স পেরিয়ে যাওয়ার জন্য অনেককে টিকিট দেওয়া যায়নি। সেই বাদের তালিকায় ছিলেন মোদির সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীরাও। আবার গুজরাটের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আনন্দীবেন প্যাটেলের কথাও মনে করাচ্ছে বিরোধী শিবির। যাকেও কিনা এই বয়সের অজুহাতে পদত্যাগে বাধ্য করেছিলেন এই মোদি-শাহই। আডবানী-মুরলী মনোহরদের মার্গদর্শক মণ্ডলীতে পাঠানোর কাহিনী তো সবারই জানা। আপ-সহ বিরোধীদের প্রশ্ন, ক্ষমতার মোহে নিজে তৈরি নিয়মই ভাঙছেন মোদি-শাহ। এর চেয়ে বড় দ্বিচারিতা কী হতে পারে।