স্টাফ রিপোর্টার: আইএসএফের সঙ্গে জোট ভেস্তে যাওয়ায় তাদের কাঁধে দোষ চাপিয়েছে সিপিএম আর কংগ্রেস। শাসকদলের দিকে আঙুল তুলেছে বিজেপি। সমস্ত অভিযোগ খারিজ করে প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেল তৃণমূল কংগ্রেস। সিপিএম জোটের নামে আইএসএফের কাঁধে বন্দুক রেখে নির্বাচনে লড়তে চাইছিল বলে পাল্টা অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। সেই সঙ্গে বিজেপিকে নিশানা করে তাদের তোপ, কে ডায়মন্ড হারবারে প্রার্থী দিল, কে দিল না, তাতে বিজেপির কী? বিজেপিই তো এখনও ডায়মন্ড হারবারে প্রার্থী দিতে পারেনি। নিজেদের প্রার্থীটা ওরা দিক না।
শ্রীরামপুর কেন্দ্রকে সামনে রেখে সিপিএম আইএসএফের সঙ্গে আসন সমঝোতায় গেল না বলে দাবি করেছেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। তাঁর অভিযোগ তার কারণ খোলসাও করা হয়নি। পাল্টা বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর দাবি, আইএসএফ জোট আলোচনা নিয়ে কখনওই সিরিয়াস ছিল না। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক তথা মুর্শিদাবাদে দলের প্রার্থী মহম্মদ সেলিম কটাক্ষ করেছেন আইএসএফের লড়াইয়ের মুরোদ নেই বলে। প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরি নওশাদকে ‘বিজেপির ভোটকাটুয়া ছোট ওয়েইসি’ বলে তির্যক মন্তব্য করেছেন। এর প্রেক্ষিতেই বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডার দাবি, এর পিছনে তৃণমূলের সঙ্গে আইএসএফের সেটিং।
[আরও পড়ুন: তীব্র গরমে বাড়ছে ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমোনিয়া, অ্যাডিনো, বাচ্চাদের সুস্থ রাখতে ভরসা মাস্ক]
সেই অভিযোগ খারিজ করেছেন তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ। বিজেপিকে তাঁর পালটা জবাব, “সব বালখিল্য কথা। টাকা পয়সার ব্যাপার ও ভাল বলতে পারবে। ওকেই তো দেখা গিয়েছিল কাজ করিয়ে দেবে বলে টাকার শেয়ার চাইছে। ওর অবচেতন মনে ওই সেটিং, ডিল, টেবিলে বসা-এগুলো চলতে থাকে।” তাঁর কথায়, “এতদিন ধরে নওশাদ, আইএসএফ এসব নিয়ে বড় বড় কথা বলে যাচ্ছিল বিজেপি। হঠাৎ ওদের গালাগালি করছে কেন? বিজেপির প্রার্থী দেওয়ার কথা, প্রার্থী দিয়ে লড়ুক। আইএসএফ কী করছে, না করছে তাতে আত্মারাম খাঁচাছাড়া হয়ে যাচ্ছে? কতটা আত্মার টান ছিল? আইএসএফ কী করছে তাতে ওদের কী?”
জোটের আলোচনা থেকে নওশাদ বেরিয়ে যেতেই সেলিম খোলাখুলি তাঁকে আক্রমণ করেন। বলেন, “আমি তো লড়াইয়ের ময়দানে আছি। সবার মুরোদ হয় না লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত থাকার।” তাঁর কথায়, “লড়াইটা হচ্ছে বিজেপির বিরুদ্ধে। কেউ কেউ বিজেপির বিরুদ্ধে বলছে, কেউ কেউ সিপিএমের বিরুদ্ধে। বুঝতে হবে কে কার পক্ষে।” সেলিমকে কুণালের জবাব, “সিপিএম আর সেলিম নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে নওশাদ, নওশাদ করছিল। এখন নওশাদ বামেদের অবসাদে পরিণত হয়েছে।” অন্যদিকে, প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরি নওশাদকে বলেছেন, “বিজেপির ভোটকাটুয়া। বিজেপির পয়সায় ময়দানে নেমেছে!” নওশাদের জবাব, “কংগ্রেসের জেলা সভাপতিরা বলছেন উনি (অধীর চৌধুরী) নিজে জেতার জন্য বাংলার কংগ্রেসকে শেষ করার শপথ নিয়েছেন। আমি দলের কথা ভেবেছি, ব্যক্তি নওশাদের নয়।”
নওশাদ আরও বড় অভিযোগ তুলেছেন। বলেছেন, “বাম এবং কংগ্রেসের মধ্যেই আরএসএস আছে।” এই প্রসঙ্গে কুণালের বক্তব্য, “নওশাদ নিশ্চয়ই অনুধাবন করছেন তাঁর সঙ্গে বা আইএসএফের সঙ্গে আমাদের নীতিগত মতপার্থক্য। আমরা ওদের বিরুদ্ধে, ওরা আমাদের বিরুদ্ধে। কিন্তু সিপিএমই যে বিজেপিকে ভোট দিয়ে দিয়ে বাড়িয়েছে, রাম-বাম যে হাত মিলিয়ে আছে এটা তো আমরা গোড়া থেকে বলছি। আইএসএফ নেতৃত্ব যদি বুঝতে পারেন তাহলে ভালো।” এই জোটের ক্ষেত্রে সিপিএম যে ‘সুবিধাবাদী নীতি’ নিয়েছিল নওশাদের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সে কথা উল্লেখ করেও তোপ দাগেন কুণাল।