সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বশাসিত সংস্থাগুলিও চলছে সরকারের ইশারায়। বারবার অভিযোগ উঠেছে মোদি জমানায়। অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের সূচি ঘোষণার পর ফের সেই অভিযোগ জোরাল হওয়া শুরু করল। বিরোধীদের ধরনা, লোকসভা ভোটের সূচি এত দীর্ঘায়িত করায় আসলে বাড়তি সুবিধা পাবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। সেই ব্যবস্থাই করার চেষ্টা করছে নির্বাচন কমিশন (Election Commission)।
চলতি লোকসভা ভোট (Lok Sabha 2024) হচ্ছে ৭ দফায়। প্রথম দফার ভোটগ্রহণ ১৯ এপ্রিল। শেষ দফার ভোটগ্রহণ হবে ১ জুন। সব মিলিয়ে ৪৪দিন ধরে চলবে ভোটগ্রহণ পর্ব। যা ভারতের সাধারণ নির্বাচনের ইতিহাসে নজিরবিহীন। চব্বিশের লোকসভা নির্বাচন দেশের প্রথম সাধারণ নির্বাচনের পর দীর্ঘতম সময়কাল ধরে চলা ভোট হতে চলেছে। ভোট গণনার সময় ধরলে সময়পর্ব আরও খানিক বাড়বে। এর আগে একবারই এর চেয়ে বেশিদিন ধরে নির্বাচন হয়েছে, সেটা ১৯৫১-৫২ সালের প্রথম সাধারণ নির্বাচন।
এখন প্রশ্ন হল এত দীর্ঘ নির্বাচন কেন? এতে কি বাড়তি সুবিধা পেলেন নরেন্দ্র মোদি? বিরোধীরা বলছেন নিশ্চয় বাড়তি সুবিধা পাবেন প্রধানমন্ত্রী। বিরোধী শিবিরের আপত্তি মূলত দুই জায়গায়। এক, এত দিন ধরে নির্বাচনে অবশ্যই সেই দল অ্যাডভান্টেজ পাবে যাঁদের ট্যাঁকে কড়ি বেশি আছে। কারণ ভোট যত দীর্ঘদিন ধরে চলবে, প্রচারের খরচ তত বাড়বে। ভোট প্রচারের জন্য জনসভার খরচ, সোশাল মিডিয়ার প্রচারের খরচের, সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপনের খরচ, সবটাই দীর্ঘদিন ধরে চালাতে হবে। যা বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির জন্য সমস্যার।
[আরও পড়ুন: বাংলায় ৭ দফায় নির্বাচন, কোন লোকসভা কেন্দ্রে কবে ভোট? রইল পূর্ণাঙ্গ তালিকা]
দীর্ঘ নির্বাচন প্রসঙ্গে কংগ্রেসের (Congress) বক্তব্য, নরেন্দ্র মোদি যাতে দেশের সব প্রান্তে প্রচারে যাওয়ার সুযোগ পান, সেকারণেই এই দীর্ঘ ভোট সূচি। এতদিন সাধারণত দুই দফার নির্বাচনের মাঝে সময় দেওয়া হত ৩-৫ দিন। কিন্তু এবার অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সময় দেওয়া হচ্ছে ৫ দিনের বেশি। খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রধানমন্ত্রী তথা বিজেপির তারকা প্রচারকরা প্রচারের সময় অনেক বেশি পাবেন। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠতে পারে, সেই সুযোগ তো বিরোধীরাও পাবেন। কিন্তু তাতেও পালটা যুক্তি আছে। বিরোধীরাও একবাক্যে মেনে নিতে বাধ্য হবেন মোদির জনসভা অন্তত লোকসভা ভোটে যা প্রভাব ফেলবে, সেটা বিরোধীদের কোনও নেতার সভাতেই পড়বে না।
[আরও পড়ুন: প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার পরিস্থিতি কেমন? চিনের মোকাবিলায় কতটা তৈরি ফৌজ? জানালেন সেনাপ্রধান]
বিরোধীরা আরও মনে করছেন, ভোটের সূচি এমনভাবে তৈরি হয়েছে যাতে যে যে এলাকায় বিরোধীরা শক্তিশালী বা যে যে রাজ্যে বিরোধীরা শক্তিশালী জোট গঠন করতে পেরেছে সেখানে বিজেপি (BJP) প্রচারের সুযোগ বেশি পায়। স্বাভাবিক ভাবেই ভোট নিয়ে আশঙ্কার একটা জায়গা তৈরি হয়েছে। তবে একই সঙ্গে বিরোধীরা বলছে, গণতন্ত্র বাঁচানোর এটাই শেষ সুযোগ। তাই মানুষের উচিত গণতন্ত্রের পক্ষে ভোট দেওয়া।