বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: প্রথম দফার লোকসভা নির্বাচন (Lok Sabha 2024) পর্বের জন্য মনোনয়ন জমা শুরু হয়ে যাওয়ার পর বেশ কয়েকদিন পার হয়ে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত যে বিজেপি বাংলার সবকটি আসন তো দূর অস্ত, এমনকী, জলপাইগুড়ির প্রার্থীর নাম পর্যন্ত যে ঘোষণা করতে পারেনি, তা নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বঙ্গ বিজেপির মনোমালিন্য চলছেই। চলতি সপ্তাহেই দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ একঝাঁক বঙ্গ বিজেপি নেতা কেন্দ্রীয় কোর কমিটির সঙ্গে একদফা আলোচনার পরেও যে প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করা সম্ভব হয়নি, তা নিয়ে বঙ্গ বিজেপিতে ক্ষোভ লাগাতার বাড়ছে।
শনিবার রাতে দিল্লিতে বিজেপির (BJP) কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির বৈঠক ছিল। সেখানে সুকান্ত মজুমদার হাজির থাকলেও, ছিলেন না শুভেন্দু। বৈঠকে মঙ্গল পাণ্ডে, সতীশ ধন্দ ও অমিতাভ চক্রবর্তীরও হাজির ছিলেন বলেই জানা গিয়েছে। মূল নির্বাচন কমিটির বৈঠকের আগে আরও একবার কোর কমিটির সঙ্গে বাংলার নেতাদের প্রার্থী নিয়ে আরেক প্রস্থ আলোচনা হয়েছে। রাতে বাংলার তালিকায় চূড়ান্ত সিলমোহর বসলেও বাকি থাকা ২২টি আসনেরই প্রার্থীর নাম এই পর্বেও ঘোষণা হবে কি না তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে বলেই বিজেপি সূত্রের খবর। লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় সুকান্ত না কি শুভেন্দু, কার পছন্দের প্রার্থীদের তালিকার পাল্লা ভারী থাকবে তা নিয়ে রীতিমতো যুদ্ধ চলেছ বঙ্গ বিজেপির অন্দরে।
[আরও পড়ুন: কার হাতে প্রচারের রাশ? TMC প্রার্থীর সামনেই বিধায়ক-ব্লক সভাপতি অনুগামীদের ধুন্ধুমার]
অন্যদিকে, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বাংলার বিভিন্ন আসনের জন্য নামকরা মুখের সন্ধান করতে বলেছিল বঙ্গ বিজেপিকে। সূত্রের খবর, বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্টদের বঙ্গ বিজেপির তরফে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হলেও প্রায় সকলেই তা খারিজ করে দিয়েছেন। তাতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ভীষণই ক্ষুব্ধ। রাজ্যের ধনী এবং অবাঙালি ব্যবসায়ীদের মধ্যে কয়েকজন বিজেপির প্রার্থী হওয়ার জন্য ইচ্ছাপ্রকাশ করলেও তাতে নারাজ কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
[আরও পড়ুন: পুলিশ ভ্যানে ইন্দিরা! জনতা সরকারের ‘ঐতিহাসিক ভুলে’ রাজনৈতিক পুনর্জন্ম প্রিয়দর্শিনীর]
বস্তুত, প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে তাঁদের জয়ের সম্ভাবনা কতটা সেই হিসাবের অঙ্ক মিলিয়ে নিতে চান শাহ-নাড্ডারা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সংসদের অন্দরে দাঁড়িয়ে ‘অব কি বার, চারশো পার’ স্লোগান দিয়েছেন। তিনি বিজেপি ৩৭০ আসন পাবে বলে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দেওয়ার পরে চাপে পড়ে গিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রীরাও। কীভাবে লক্ষ্যপূরণ হবে সেই চিন্তায় ব্যস্ত তাঁরাও। বাংলা থেকে যাঁরা বিজেপির হয়ে জয় আনতে পারবে, তাঁদেরই প্রার্থী করা হোক– এই মর্মে আগেই শুভেন্দু-সুকান্তকে কড়া নির্দেশ দিয়ে দিয়েছিলেন শাহ-নাড্ডারা। বঙ্গ বিজেপির পক্ষ থেকে প্রতিটি আসনের জন্য চার জন করে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম দেওয়া হলেও তাঁদের জেতার সম্ভাবনা কতটা, সেই প্রশ্ন উঠতে সন্তোষজনক জবাব পাননি কেন্দ্রীয় নেতারা। আর সেই গেরোতেই আটকে রয়েছে বাংলার প্রার্থীতালিকা।