সৈকত মাইতি, তমলুক: ভোটের খরচ সামাল দিতে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে টাকা চেয়ে বিতর্কই নতুন করে উসকে দিলেন সিপিএমের (CPM) পূর্ব মেদিনীপুর জেলা নেতৃত্ব। ইতিমধ্যে এমনই বিতর্ক উসকে দিয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদকের বিরুদ্ধে সোশাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন দলেরই এক প্রাক্তন যুবনেতা। যদিও ওই যুবনেতার অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়েছেন সিপিএমের জেলা নেতৃত্ব।
প্রসঙ্গত, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha Election 2024) মধ্যেই নির্বাচনী বন্ড নিয়ে শোরগোল পড়েছে দেশজুড়ে। শাসক ও বিরোধী প্রায় সমস্ত দল এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা চাঁদা গ্রহণ করলেও প্রতিবাদে মুখর হয় বামেরা। লোকসভা নির্বাচনের মধ্যেই সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়েও সরব হন বামেরা। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের এই বিপুল খরচ কিভাবে সামাল দেওয়া যাবে, তা নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে জেলা নেতৃত্বরা। এমন অবস্থায় পরিস্থিতি সামাল দিতে বিপুল এই অর্থ সাহায্যের আবেদন জানিয়ে দলীয় কর্মী থেকে শুরু করে সমর্থকদের কাছে আবেদন জানান সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি। আর সেখানেই উঠেছে অভিযোগ। দলীয় কর্মীদের একাংশ দাবি, লোকসভা নির্বাচনের খরচ মেটাতে জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি যে চিঠি দিয়েছেন তাতে দলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের পরিবর্তে নিজের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করার আবেদন জানিয়েছেন। আর তাতেই নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
[আরও পড়ুন: নেশাই কাড়ল প্রাণ! সকাল থেকে রেললাইনে বসে মদ্যপান, ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু ২ বন্ধুর]
ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সোশাল মিডিয়ায় (Social Media) সরব হয়েছেন তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের অন্তর্গত সৌভিক নামে দলের এক প্রাক্তন সদস্য। যা নিয়ে রীতিমতো সরগরম হয়ে উঠছে জেলার রাজনৈতিক মহল। ভোটের যাবতীয় খরচ মেটাতে নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করায় দলের কাছেও বেশ খানিকটা অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে বর্ষীয়ান ওই নেতাকেও। যদিও এ বিষয়ে সিপিএমের জেলা নেতৃত্বের দাবি, পার্টির যাবতীয় কাজকর্ম চালাতে গিয়ে দলের নির্দিষ্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের পাশাপাশি জেলা সম্পাদকের ব্যক্তিগত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। দলের জেলা কমিটির এক সদস্যের দাবি, স্বেচ্ছায় অনুদান দেওয়া নেওয়ার ক্ষেত্রে বহু ক্ষেত্রেই দাতারা পার্টি ফান্ডের পরিবর্তে ব্যক্তিগত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই টাকা পাঠাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তাছাড়া পার্টির বিভিন্ন সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রেও রেজুলেশন এর মাধ্যমেই কার্যকারী জেলা সম্পাদকের ব্যক্তিগত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট (Bank Account) ব্যবহার হয়ে থাকে। তাই এমনটা নতুন কিছু নয়। ফলে যে বা যাঁরা এমন অভিযোগ করছেন তাঁরা আসলে দল পরিচালনার ক্ষেত্রে নিজেদের অজ্ঞতা থাকায় এমন বিভ্রান্তিমূলক মন্তব্য করছেন।
[আরও পড়ুন: বীর্যের বিস্ফোরণ ঘটবেই! পর্নস্টারকে সঙ্গে নিয়ে ফের যৌনতার টিপস দিলেন রণবীর সিং]
দলের যুবনেতা পরিতোষ পট্টনায়ক বলেন, ‘‘যিনি এই বিষয়টি নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন, তাঁকে বছর কয়েক আগেই দল বিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়েছিল। তাই প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই এই ভিত্তিহীন অভিযোগ। কারণ, চিঠিতে যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হয়েছে সেটি নিয়মিতভাবেই যাবতীয় হিসেব নিকেশ সংক্রান্ত দলের কাছে লিপিবদ্ধ রয়েছে। নিরঞ্জনবাবু নিজেই ইতিমধ্যে তাঁর সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি পার্টির নামেই দান করে দিয়েছেন।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, ‘‘নির্বাচনী বন্ডের (Electoral Bond) বিরোধিতা করেই বহু আগে থেকেই প্রতিবাদে মুখর হয়েছিল বামেরা। তাই নির্বাচনের খরচ সামাল দিতে বুথে বুথে সাধারণ, কর্মী-সমর্থকদের থেকে অর্থ সংগ্রহের জন্য চিঠি দিয়ে আবেদন জানানো হয়েছিল। তাতে অনেকটাই সাড়াও মিলেছে। তবে ব্যক্তিগত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা নিয়ে যে অভিযোগ উঠছে, তা একেবারেই ভিত্তিহীন।’’