শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: দিল্লির ভোট বলে কথা! সক্কাল সক্কাল চলে গিয়েছিলেন ভোট দিতে। কিন্তু ভোটকেন্দ্রে গিয়ে শুনলেন, তিনি নাকি মৃত! কাগজে-কলমে তিনি মৃত। তাই ভোটাধিকার নেই। জলজ্যান্ত মানুষটা সামনে দাঁড়িয়ে, অথচ ভোটকর্মীরা বলছেন, তিনি নেই! কী আর করেন? ভোট না দিতে পেরে চোখে জল নিয়েই বাড়ি ফিরে এলেন বাসন্তী দাস নামে ওই বৃদ্ধা। শুক্রবার প্রথম দফার ভোটে এই ঘটনা ঘটেছে জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) কেন্দ্রের ধূপগুড়ি পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে।
ধূপগুড়ির (Dhupguri) বৈরাতিগুড়ি হাই স্কুলে ভোটকেন্দ্র ছিল বাসন্তী দাসের। শুক্রবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ ১৫/১৮৬ নম্বর বুথে ভোট দিতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ভোটের ডিউটিতে থাকা প্রিসাইডিং অফিসার জানান, তাঁর কিছু করার নেই। ভোটার তালিকায় (Voter List) তাঁর নাম 'ডিলিট' হয়েছে। তাই ভোট দিতে পারবেন না তিনি। ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে ওই বৃদ্ধাকে। তাঁর ছেলে উজ্জ্বল দাস বলছেন, “মা একাই ভোট দিতে গিয়েছিল। কিন্তু ওখান থেকে বলে, ওরা বলছে আমার নাম নেই, তুমি মৃত। মা বাইরে এসে আমাদের জানায়। ফের কথা বললে জানায় নামের জায়গায় মৃত লেখা আছে। আমরা পরে বুঝে নেব। মা প্রায় দেড় ঘণ্টা ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল। তার পরেও ভোট দিতে পারেনি। আমরা তো প্রতিবার তো এখানেই ভোট দিই। এবারে কী হল জানি না।”
[আরও পড়ুন: কল্যাণ প্রকল্প মুছেছে বিড়ি শ্রমিকদের দুঃখের দিনলিপি]
অন্যদিকে, চোখ জল নিয়ে বাসন্তী দেবী বললেন, “আমি তো ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সাড়ে সাতটার সময় ভোট দিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ লাইনে থাকার পরেও ভোট দিতে পারিনি। সরকারের খাতায় নাম নেই বলছে। অনেকক্ষণ ধরে ওরা কোথায় কোথায় সব ফোন করল। জেলাশাসকের অফিসেও ফোন করেছিলাম। তার পর বলল, আপনি এখন যান। এই বছর আর হবে না। আমাদের এলাকার লোকজনও অনেক চেষ্টা করল। কিন্তু ভোট দিতে পারলাম না। খুবই খারাপ লাগছে। মনে হচ্ছে আমি মরে গিয়েছি। আমি তো প্রতিবারই ভোট দিই। কিন্তু এই লোকসভা ভোটে (Lok Sabha Election 2024) আর পারলাম না।”