ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: বাংলায় সবুজ ঝড়। ঘাসফুলের দাপটে বঙ্গে প্রায় ফিকে পদ্ম। তবে ভিনরাজ্যে ভিন্ন ছবি। উত্তরপ্রদেশে জয় না পেলেও। মার্কশিট বলছে, যোগীরাজ্যে প্রায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে মোটের উপর ভালোই ছাপ ফেলেছেন তৃণমূল প্রার্থী। তবে অসম, মেঘালয়ে সেভাবে দাঁতই ফোঁটাতে পারল না বাংলার শাসক শিবির।
রাজ্যের বাইরে উত্তরপ্রদেশ, অসম আর মেঘালয়ে প্রার্থী দিয়েছিল তৃণমূল। উত্তরপ্রদেশের ভাদোহি কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী করেছিল ললিতেশপতি ত্রিপাঠীকে। তাঁকে সমর্থন দিয়েছিলেন অখিলেশ যাদব। সেখানে দ্বিতীয় স্থান পেয়েছেন ললিতেশ। বিজেপি প্রার্থীর কাছে প্রায় ৪৪ হাজার ভোটে পরাজিত হয়েছেন। ললিতেশপতি পেয়েছেন ৪ লক্ষ ১৬ হাজার ভোট। সে অর্থে চমকে দিয়েছেন ললিতেশ।
অসমে ৪টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল তৃণমূল। বরপেটায় ১ শতাংশ ভোট পেয়ে চতুর্থ হয়েছে তৃণমূল। প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ পেয়েছেন ১৬ হাজার ৫০০ ভোট। ওই আসনে জিতেছে অসম গণপরিষদ। কোকরাঝাড়ে পেয়েছে ১.৯ শতাংশ ভোট। তৃণমূল প্রার্থী গৌরীশংকর শরনিয়া পেয়েছেন ২৩ হাজার ৫০০ ভোট। প্রার্থী হয়েছেন ষষ্ঠ। লখিমপুরের প্রার্থী ঘনকান্ত পেয়েছেন ১৪ হাজার ১৯৭টি ভোট। চতুর্থ হয়েছেন ১.২ শতাংশ ভোট পেয়ে। বাঙালি অধ্যুষিত শিলচর আসনে তৃণমূল প্রার্থী রাধেশ্যাম বিশ্বাস পেয়েছেন ২০ হাজার ৫০০ ভোট। ১.৯ শতাংশ ভোট পেয়ে হয়েছেন তৃতীয়।
[আরও পড়ুন: কীভাবে জমি দখল করে টাকা হাতাতেন শাহজাহান? নয়া তথ্য ইডির চার্জশিটে]
সে রাজ্যে দলের পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যসভার সাংসদ সুস্মিতা দেব একটা গুরুতর বিষয় উল্লেখ করেছেন। এই রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রার্থী হিসাবে পরিচিতি পেয়েছেন সব প্রার্থীই। কিন্তু বিজেপি বিরোধী বেশিরভাগ ভোটই গিয়েছে কংগ্রেস বা অন্য দলে। তার কারণ পর্যালোচনা করতে গিয়ে সুস্মিতা উল্লেখ করেছেন, ইভিএমে ২ বা ৩ নম্বরে দলের প্রার্থীর নাম না থাকার বিষয়টি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা নেই। অথচ, বিরোধী প্রার্থী হিসাবে বিশেষ পরিচিতি না থাকা সত্ত্বেও দ্বিতীয় বা তৃতীয় স্থানে নাম থাকায় ভোট পড়েছে তাদের খাতাতেই। অনেক ক্ষেত্রে সেই ভোট পেয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী। অথচ, প্রার্থী হিসাবে তাঁরা বিশেষ পরিচিতই নন।
ইভিএমে নিচের দিকে তৃণমূল প্রার্থীর নাম থাকা ভোট কম পাওয়ার একটা অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন সুস্মিতা। সেক্ষেত্রে ইভিএমের নামের তালিকায় উপরের দিকে প্রার্থীর নাম তোলা নিয়ে সওয়াল করছেন তিনি। মেঘালয়ের তুরায় শুধু প্রার্থী দিয়েছিল তৃণমূল। সেখানে ৪৮ হাজার ৭০০ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন প্রাক্তন বিধায়ক জেনিথ সাংমা। তাঁর ভোট মোট ভোটের ৭.২৩ শতাংশ। এই দুই রাজ্যেই ভোট নিয়ে পর্যবক্ষণে বসেছে তৃণমূল। রিপোর্ট দিয়েছেন দলের নেতৃত্বকে। সেখানে পরবর্তী রণকৌশল সাজিয়ে পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন সে রাজ্যের পর্যবেক্ষক বাংলার মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া।