বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: প্রদেশ কংগ্রেসের পাহাড়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিনয় তামাংকে নিয়ে রীতিমতো চাপে কংগ্রেস নেতৃত্ব। দলীয় পদ থেকে ইস্তফা না দিয়ে এমনকী দলত্যাগ না করেই বিনয় তামাং দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের সাধারণ মানুষের কাছে বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তাকে পদ্মফুল চিহ্ন ভোটদানের আবেদন জানিয়েছেন। মঙ্গলবার তাঁর এই ভিডিও বার্তা ভাইরাল হওয়ার পরও কংগ্রেস নেতৃত্ব কড়া পদক্ষেপের কোনও কথাই স্পষ্ট করতে পারছে না। ভয়, পাছে পাহাড়ে গোর্খা ভোটদাতা মহলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
দার্জিলিং জেলা সিপিএম দপ্তরে বাম-কংগ্রেস জোটের সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেসের জাতীয় মুখপাত্র পবন খেরা। নিজস্ব চিত্র।
মঙ্গলবার সকালে শিলিগুড়িতে দার্জিলিং জেলা সিপিএম দপ্তরে বাম-কংগ্রেস জোটের সাংবাদিক বৈঠকে বিনয় তামাংকে (Binay Tamang) নিয়ে অস্বস্তিতে পড়ে কংগ্রেস। দলের জাতীয় মুখপাত্র পবন খেরা যদিও বলেন, "এসব বরদাস্ত করা হবে না।" কিন্তু কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন? প্রশ্নের মুখে পর মূহুর্তেই তিনি বলেন "এখনই এসব নিয়ে কিছু বলছি না। এসব পরে দেখা যাবে।" প্রসঙ্গ এড়িয়ে যেতে দার্জিলিং (Darjeeling) জেলা কংগ্রেস সভাপতি শংকর মালাকার দাবি করেন, "ওর মতো দশটা সাধারণ সম্পাদক প্রদেশ কংগ্রেসে আছে। কে এল, কে গেল দেখে লাভ নেই।"
[আরও পড়ুন: ‘১৫ লাখ না দিলে চাকরি পাবেন কীভাবে?’ নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে শাহের নিশানায় মমতা]
তবে কংগ্রেস (Congress) নেতৃত্ব মুখে যাই বলুন না কেন, রাজনৈতিক মহলের মতে বিনয় তামাংয়ের বিরুদ্ধে এই মূহূর্তে ব্যবস্থা নেওয়া হলে পাহাড়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, এই শঙ্কাতেই কোনও পদক্ষেপ নিতে পারছে না তারা। আসলে দলের প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই শুরু হয়েছে বিনয়ের অসহযোগিতা। মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিন হামরো পার্টি, সিপিএম, সমতলে কংগ্রেস নেতারা উপস্থিত থাকলেও পাহাড়ের বিনয় তামাং-সহ অনেক নেতাই অনুপস্থিত ছিলেন। বিনয় একদিনও প্রচারে বের হননি। সুযোগ মিলতেই অজয় এডওয়ার্ড এবং মুনিশ তামাংয়ের সমালোচনায় সরব হয়েছেন।
[আরও পড়ুন: প্রেমিকাকে লাথি-ঘুসি মেরে নৃশংস হত্যা ভারতীয় বংশোদ্ভূতর, ২০ বছরের সাজা সিঙ্গাপুর আদালতে]
সবশেষে মঙ্গলবার সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) বিজেপি প্রার্থীকে ভোটদানের আবেদন জানিয়ে দলীয় নেতৃত্বকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন। তিনি দার্জিলিং পাহাড়, শিলিগুড়ি, তরাই এবং ডুয়ার্সের মানুষের সাংবিধানিক নিরাপত্তা এবং ন্যায়বিচারের জন্য রাজু বিস্তাকে ভোট দেওয়ার কথা বলেন। যদিও তিনি সেই আবেদন রেখেছেন দার্জিলিংয়ের ভূমিপুত্র হিসেবে। এখানে দলীয় পদ ব্যবহার করেননি। এদিন কংগ্রেসের জাতীয় মুখপাত্র প্রার্থী মুনিশ তামাংয়ের পরিচিত তুলে ধরে পাহাড়ের সার্বিক উন্নয়নের জন্য ভোট প্রার্থনা করেন।