নন্দন দত্ত, সিউড়ি: মাথায় গামছা বেঁধে, সাইকেলে ঝুড়ি চাপিয়ে যিনি বীরভূমের ছোট গ্রামে গান গেয়ে বাদাম বেচতেন। মুখে থাকত 'কাঁচা বাদাম' গান। এই গানেই রাতারাতি ভাইরাল ভুবন বাদ্যকর। তার পর অনেকটা সময় কেটে গিয়েছে। নতুন জীবনকে আপন করে নতুনভাবে বাঁচার চেষ্টায় দুবরাজপুরের বাসিন্দা। লোকসভা ভোটের (Lok Sabha Election 2024) জন্য দিলেন বিশেষ বার্তা।
নিজস্ব চিত্র
সোমবার ছিল চতুর্থ দফার নির্বাচন। হলুদ পাঞ্জাবি পরে, হাতে মালা নিয়ে ভোট দিতে যান ভুবন বাদ্যকর। তার ফাঁকেই বলেন, "গণতান্ত্রিক মাধ্যমে সবাইকে সুস্থভাবে ভোট দিতে বলছি। সাধারণ মানুষ যেন আনন্দ পায় ভোট দিয়ে। যেই জিতুক, কে জিতবে সেটা বলতে পারব না। তাই সবাইকে বলছি, দাদা-দিদি, ভাই-বন্ধু-মা মিলে, সবাই মিলেমিশে থাকুক। আনন্দে থাকুক। আনন্দে গান গাক। যদি আনন্দ করে থাকতে পারে আমাদেরও ভালো লাগবে।"
[আরও পড়ুন: সলমনের বাড়িতে হামলা: গ্রেপ্তার আরও ১, কত টাকা পেয়েছিল শুটাররা? ]
২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাদাম কাকু বিখ্যাত হন। সারা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষ এই গান শুনেছিলেন। সেই সময় মোবাইলে ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক খুললেই ফেরিওয়ালার সেই বাদাম বিক্রির গান বেজে উঠত। বীরভূমের দুবরাজপুর ব্লকের লক্ষ্মীনারায়ণপুর পঞ্চায়েতের কুড়ালজুড়ি গ্রামে তখন কাঁচা বাদামের খোঁজে ভিড় জমত। কিন্তু আইনি জটিলতা এবং ভুলপথে চালিত হওয়ার কারণে নিজের তৈরি গানের স্বত্ব থেকে বঞ্চিত ছিলেন শিল্পী।
নিজস্ব চিত্র
সুযোগ বুঝে ইলামবাজারের গোপাল ঘোষ সে সময় ভুবন বাদ্যকরের কাছে তাঁর গানের কপিরাইট লিখিয়ে নেন। কেন্দ্রীয় সরকারের কপিরাইট বোর্ডের কাছে ভুবন কপিরাইট ফেরত চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন। তার হয়ে লড়াইয়ে নেমেছিল বাঁকুড়ার (Bankura) মিউজিক সংস্থা। একইসঙ্গে কপিরাইটের নাম করে যে সমস্ত টাকা গোপাল ঘোষ তুলে নিয়েছিল সেই টাকা ফেরত পাওয়ার জন্যও অভিযোগ জানানো হয় আদালতে। সেই মামলা এখনও বিচারাধীন রয়েছে। এর মধ্যেই আবার মুম্বইয়ের কেন্দ্রীয় সরকারের কপিরাইট বোর্ড থেকে ‘কাঁচা বাদাম’ গানের মালিকানার সার্টিফিকেট দেওয়া হয় বাঁকুড়ার ওই সংস্থাকে। আর তাতে হাসি ফুটেছে ভুবন বাদ্যকরের মুখে। সোমবার ভোট দেওয়ার পর আবারও 'কাঁচা বাদাম' গেয়ে শোনান তিনি।