ধীমান রায়, কাটোয়া: ভোটের আগের রাতেই হারিয়েছেন স্বামীকে। রাজনৈতিক কাজ সেরে ফেরার পথে দুষ্কৃতীদের বোমাবাজিতে খুন হয়েছেন কেতুগ্রামের মেন্টু শেখ নামে এক তৃণমূল কর্মী। ভোটের ঠিক আগেই এমন ঘটনায় স্বভাবতই শোকে কাতর স্ত্রী। কিন্তু শোক সামলেও স্বামীদের মৃত্যুর নেপথ্যে দোষীদের খুঁজে বের করতে তৎপর তিনি। ঘটনার তদন্তে রবিবার রাতেই কেতুগ্রামের চেঁচুড়ি গ্রাম অর্থাৎ ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। কান্না সামলে নিজেই পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন স্ত্রী তুহিনা খাতুন। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে এই ঘটনা। স্বামীকে খুন করানো হয়েছে। সন্দেহভাজনদের নামও তিনি জানিয়েছেন। চাইছেন সিআইডি তদন্ত। তবে এমন মর্মান্তিক ঘটনার পর ভোটে আর কোনও আগ্রহ নেই তুহিনা বা পরিবারের কারও। সূত্রের খবর, সোমবার সকালে ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
চতুর্থ দফা লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabha Election 2024) বোলপুর, বীরভূম, বর্ধমানের দুই কেন্দ্র-সহ বাংলার মোট ৮ আসনে ভোটগ্রহণ। কেতুগ্রাম পূর্ব বর্ধমানে হলেও বোলপুর (Bolpur) লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। এতদিন এখানে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) নেতৃত্বে ভোট হয়ে এসেছে। এবারের ভোটে অনুব্রত জেলবন্দি। আর সেই সুযোগে এখানে তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বের বাড়বাড়ন্ত বলে মনে করছে এলাকাবাসীর একাংশ। ভোটের আগের রাতে কেতুগ্রামের তৃণমূল নেতা মেন্টু শেখের খুন তারই অঙ্গ মাত্র।
[আরও পড়ুন: ভোটের আগের রাতে কেতুগ্রামে ‘খুন’, দুষ্কৃতীদের বোমাবাজিতে মৃত্যু যুবকের]
মেন্টু শেখের স্ত্রী তুহিনার অভিযোগ, আমার স্বামীকে খুন করানো হয়েছে। ওর উপর আগেও বারবার হামলা হয়েছিল। পুলিশকে কখনও কিছু জানানো হয়নি। ব্লক সভাপতির জন্য বারবার ওকে থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছিল। এর পিছনে রয়েছে গোলাম, কালাম, আল্লারাখা, হিলাল, জহরলাল, জাফর, আরও অনেকে। কেন খুন করানো হয়েছে, জানি না।'' এটা কি বিরোধীদের কাজ? এই প্রশ্নের জবাবে তুহিনা বলেন, ''এখানে কোনও বিরোধী দল নেই। একটাই দল আছে, তৃণমূল।'' তবে কি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের দিকেই ইঙ্গিত করছেন? এর জবাব অবশ্য তুহিনা সরাসরি দেননি। তবে তাঁর সন্দেহের তালিকায় যে স্থানীয় ব্লক তৃণমূল সভাপতি, তা স্পষ্ট বুঝিয়েছেন। ভোটের দিন সকালে তিনি জানাচ্ছেন, থানার আইসি তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন, দোষীদের খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। তাতে ভরসা রেখেও সিআইডি (CID) তদন্তের দাবি করেছেন নিহত তৃণমূল কর্মীর স্ত্রী।