নন্দন দত্ত, সিউড়ি: বীরভূম কেন্দ্রে দেবাশিস ধরের বিকল্প প্রার্থী দিল বিজেপি। মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনে রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় নিজে দেবতনু ভট্টাচার্যের নামে বিকল্প প্রার্থীকে সঙ্গে করে নিয়ে এসে মনোনয়নপত্র জমা দেন। রাজ্যের কোনও কেন্দ্রে বিকল্প প্রার্থী না দিলেও সদ্য অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস দেবাশিস ধরের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেওয়ায় রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে জেলায় প্রচারে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেবাশিসের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারের তরফে বিভাগীয় তদন্তের কথা বলে কটাক্ষ করেন।
উল্লেখ্য, কোচবিহারের বিতর্কিত জেলা পুলিশ সুপার চাকরি থেকে ইস্তফা দিলেও রাজ্য সরকারের তরফ থেকে তার ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। যদিও দেবাশিস ধর জানান, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁকে ছাড়পত্র দিয়েছেন। তাঁর কাগজপত্র দিয়ে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। কিন্তু বিজেপির পক্ষ থেকে কোনও ঝুঁকি রাখতে না চেয়ে বিজেপির সর্বকালীন কার্যকর্তা দেবতনু ভট্টাচার্যকে ফের প্রার্থী করা হয়। সে প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় জানান, "বিকল্প প্রার্থী করা দলের একটা রণকৌশল।"
[আরও পড়ুন: আচমকাই অসুস্থ কাঞ্চনের স্ত্রী শ্রীময়ী, ভর্তি হাসপাতালে]
রাজ্যের আর কোনও কেন্দ্রে বিজেপি বিকল্প প্রার্থী না দিলেও বীরভূম কেন্দ্রে দিল কেন। সে প্রশ্নের উত্তরে জগন্নাথবাবু জানান, "এখনও সারা রাজ্যের সর্বত্র মনোনয়ন জমা দেওয়া শেষ হয়নি। তাছাড়া এক এক কেন্দ্রের এক-এক রকম রণকৌশল থাকে। এটা তারই অঙ্গ। এটা অন্যরকম খেলা।" তবে প্রার্থী করার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় কমিটির ছাড়পত্র পেয়েই দেবতনু ভট্টাচার্যকে প্রার্থী করা হয়েছে বলে বিজেপি সূত্রে খবর।
নব্বইয়ের দশকে দেবতনুবাবু আরএসএসের প্রচারক হিসাবে সিউড়িতে আসেন। পরে মহকুমা প্রচারক হিসাবে গোটা এলাকা তার ঘোরা। বর্তমানে তিনি বিজেপির চারটি লোকসভা নিয়ে গঠিত ক্লাস্টার ইনচার্জ হিসাবে দায়িত্বে আছেন। বীরভূম, বোলপুর, কাটোয়া ও বর্ধমান লোকসভার তিনি দলের পক্ষে পর্যবেক্ষক আছেন। স্বভাবতই তাঁকে প্রার্থী করে নিশ্চিন্তে থাকছে দল। তবে শুধু বিকল্প প্রার্থী নয় সিউড়ির বাসিন্দা আবদুল ইমরান নামে আরও এক নির্দল প্রার্থীকে জেলা বিজেপির পক্ষ থেকে প্রার্থী করা হয়েছে। কারণ, যে সব এলাকায় বিজেপি শক্তিশালী সেখানে যাতে তারা নির্দল প্রার্থীর এজেন্ট হিসাবে ভোট কেন্দ্রে নিজেদের লোক বাড়াতে পারেন।
যদিও সিউড়ি পুরাতন লাইনের বাসিন্দা আবদুল ইমরান জানান, তিনি কোনও দিন কোনও রাজনৈতিক দল করেননি। ৩৮ বছর বয়সে এসে নিয়োগ দুর্নীতি থেকে নানা অপকর্মের প্রতিবাদে প্রার্থী হয়েছেন। অন্যদিকে, শুধু জেলা নয় পাশের রাজ্য ঝাড়খণ্ড থেকে বীরভূম কেন্দ্রে এদিন মনোনয়ন পত্র জমা দিলেন অমিয় ঘোষ। বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস ধর জানান, "আমি কেন্দ্রীয় সরকারের রাষ্ট্রপতির অনুমোদিত চাকুরে ছিলাম। তিনিই আমার ইস্তফাপত্র গ্রহণ করে ছাড়পত্র দিয়েছেন। রাজ্য সরকারের এখানে কোনও ভূমিকা নেই। তবুও বিকল্প প্রার্থী দল ভাবনাচিন্তা করে করেছে। এর মধ্যে কোনও অঙ্ক নেই।" তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, "ভরসা না থাকায় তাঁরা প্রার্থী দিয়েছে। এটা তাঁদের বিষয়।"