সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চাঁদেরও যমজ সঙ্গী আছে? তা কি প্রতিবেশী মঙ্গলের উপগ্রহ? এসব প্রশ্ন উসকে দিচ্ছে নব আবিষ্কৃত একটি গ্রহাণু (Asteroid)। নাসার বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, মঙ্গলের আড়ালে খুঁজে পাওয়া ওই গ্রহাণুর রাসায়নিক গঠন অবিকল চাঁদের (The Moon) মতো। দর্শনেও চাঁদ বলে ভ্রম হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। সম্প্রতি নর্থ আয়ারল্যান্ডের আরমাঘ অবজারভেটরি অ্যান্ড প্ল্যানেটোরিয়ামের পর্যবেক্ষণে পাওয়া ওই গ্রহাণুর চরিত্র বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এই সংক্রান্ত গবেষণার বিস্তারিত রিপোর্ট আগামী জানুয়ারিতে এক বৈজ্ঞানিক জার্নালে প্রকাশিত হবে। তবে তার আগে তাঁরা নতুন গ্রহাণু সম্পর্কে অনেক তথ্যই প্রকাশ্যে এনেছেন।
মঙ্গলের কক্ষপথে ঘুরঘুর করা চাঁদের যমজ সঙ্গীর নাম দেওয়া হয়েছে (101429) 1998 VF31. আপাতভাবে একে মঙ্গলের উপগ্রহের মতো মনে হলেও, আসলে তার কক্ষপথের মধ্যে পড়ে যাওয়া একটি গ্রহাণু। এর রাসায়নিক চরিত্র বিশ্লেষণ করে নাসার অ্যাস্ট্রোকেমিস্ট গালিন বরিসভ বলছেন, ”গ্রহাণুটি পাইরক্সিন ও আয়রনে পরিপূর্ণ। চাঁদের যে অংশ অন্ধকারাচ্ছন্ন, অমসৃণতায় ভরা, সেদিকের রাসায়নিক গঠনও এরকম। ওই এলাকা প্রায় মৃত্যু উপত্যকার মতো।” তবে একটা বিষয়ে বিজ্ঞানীরা এখনও সন্দিহান। কোথা থেকে এল এই (101429) 1998 VF31? এটা কি চাঁদেরই ভাঙা অংশ নাকি মঙ্গল থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া কোনও খণ্ড? এর শরীর থেকে কতটা বিকিরণ ছড়ায়, তাও পরীক্ষানিরীক্ষা করে দেখতে চান বিজ্ঞানীরা।
[আরও পড়ুন: করোনা কালে প্রথমবার, সফলভাবে নয়া উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করল ইসরো]
তবে প্রাথমিকভাবে বিজ্ঞানীদের ধারণা, (101429) 1998 VF3 কোনও সাধারণ গ্রহাণু নয়, একটি Trojan asteroid. চরিত্র অনুযায়ী, এরা ছোট সৌরজাগতিক বস্তু, যা বড় এবং ভারী গ্রহ বা নক্ষত্রের কক্ষপথে ঘুরতে থাকে, যার জেরে মনে হয় যে এরা উপগ্রহ। কিন্তু তফাৎ রয়েছে উপগ্রহের সঙ্গে। বৃহস্পতি সর্ববৃহৎ গ্রহ হওয়ায়, তার কক্ষপথে এই Trojan asteroid-এর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। অনেক সময়ে এদের আকার এতই ছোট হয় যে শক্তিশালী টেলিস্কোপেও ধরা না পড়তেই পারে। (101429) 1998 VF3 অবশ্য তত ছোট নয়। এর রহস্য যাইই হোক, আপাতভাবে মঙ্গলের আড়াল থেকে আলোয় আসা চাঁদের মতো গ্রহাণুকে নিয়ে বিজ্ঞানীদের উৎসাহ এখন তুঙ্গে।