রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: রাজ্য সরকারের পুজোর কার্নিভাল বয়কটের ডাক দিয়ে 'নাগরিক সমাজে'র ব্যানারে মিছিল। সেই মিছিল থেকে ডাক্তারদের দাবিদাওয়া বিধানসভায় তোলার চ্যালেঞ্জ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। তিনি বলছেন, ডাক্তারদের দশ দফা দাবি নিয়ে এ বার বিধানসভায় বিশেষ অধিবেশন ডেকে আলোচনা হোক। একই সঙ্গে সিপিএমকে কটাক্ষ করে শুভেন্দুর বার্তা, "মাকু-সেকুরা পারবে না। ওরা তৃণমূলের বি টিম।"
পুজো কার্নিভালের প্রতিবাদ করে শুভেন্দু অধিকারী নাগরিক মিছিলের ডাক দিয়েছিলেন। 'অরাজনৈতিক' সেই মিছিলে এদিন আরও একবার বোঝা গেল বঙ্গ বিজেপির বিভাজন। শুভেন্দুর ডাকে পতাকা ছাড়া মিছিলে রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতারা কার্যত অনুপস্থিতই থাকলেন। গেরুয়াপন্থী বিশিষ্ঠজনেদেরও অবশ্য সেরকম কাউকে দেখা যায়নি মিছিলে। একমাত্র দলের সাংস্কৃতিক শাখার আহ্বায়ক অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ ছাড়া। আর ছিলেন শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ বিধায়কদের কয়েকজন। মিছিলে দেখা গিয়েছে প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিং, প্রাক্তন বিধায়ক তাপস রায়, উত্তর কলকাতা জেলা বিজেপির সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষদের। কিন্তু রাজ্য বিজেপির ক্ষমতাসীন শিবিরের প্রথমসারির কোনও নেতা বা দলের সাংসদরা ছিলেন না।
রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আফ্রিকা সফরে রয়েছেন। কিন্তু মিছিলে দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিনহাদেরও দেখা যায়নি। ফলে দলের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে, পতাকা ছাড়া মঙ্গলবার কলেজ স্কোয়ার থেকে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার পর্যন্ত শুভেন্দুর ডাকে এই মিছিলে রাজ্য বিজেপি কার্যত সাড়াই দিল না। দুই মেদিনীপুর, হুগলি, হাওড়া—সহ কয়েকটি জায়গা থেকে লোক আনা হয়েছিল। এদিন বিকেলে হাতে জাতীয় পতাকা নিয়ে ও মশাল জ্বালিয়ে, ‘দফা এক দাবি এক’ স্লোগান তুলে মিছিল শুরু হয় কলেজ স্কোয়ার থেকে। বিজেপির পতাকা ছাড়া নাগরিক সমাজকে নিয়ে মিছিলের ডাক দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা। মিছিলের পুরোভাগে নেতৃত্ব দেন শুভেন্দুই। ছিলেন বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর, বঙ্কিম ঘোষ, পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়, অশোক দিন্দা ছাড়াও শঙ্কুদেব পণ্ডা-রা। এঁরা প্রত্যেকেই শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। মিছিল শেষে শুভেন্দু এদিন দাবি করেন, বিধানসভার অধিবেশন ডেকে জুনিয়র ডাক্তারদের দশ দফা দাবি পূরণ করতে হবে মুখ্যমন্ত্রীকে। ডাক্তাদের লড়াইয়ে পাশে থাকার বার্তা দিয়ে সিপিএমকে আক্রমণ করেন তিনি। শুভেন্দুর বক্তব্য, ‘‘মাকু—সেকুরা পারবে না। ওরা তৃণমূলের বি টিম। মাকু-সেকুরা ভোট কেটেছে বলেই অর্জুন সিং, তাপস রায়কে হারতে হয়েছে।’’
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে পুরোভাগে ঢুকে পড়েছে বাম ও অতি বামেরা। সিপিএমের নেতারাও পুরোভাগে রয়েছে। আরজিকর ইস্যুতে আন্দোলনে বামেদের থেকে ব্যাকফুটে চলে গিয়েছে বিজেপি। তাই এদিন সিপিএম সম্পর্কে সাবধান হতে বলে বিজেপিই প্রকৃত বিরোধী, এটাই শুভেন্দু বার্তা দিতে চেয়েছেন সাধারণ নাগরিক ও আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের।