অর্ণব দাস ও রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: ডিসেম্বরে সরকার ফেলে দেওয়ার হুঁশিয়ারিতে বারবার সুর চড়িয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি দিলীপ ঘোষ, রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়দের গলায় শোনা গিয়েছিল একই কথা। তার পালটা জবাবও দিয়েছে তৃণমূল। এবার কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের গলাতেও শোনা গেল ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য। ‘কালীপুজোর পর বাংলা ভয়ানক ষড়যন্ত্র দেখবে’, বলেই দাবি তাঁর।
রবিবার উত্তর ২৪ পরগনার বেলঘরিয়ায় বিটি রোডে বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করে তৃণমূল। ওই অনুষ্ঠানেই ছিলেন কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র (Madan Mitra)। তিনি বলেন, “আমি যেখানে যেখানে যাচ্ছি সেখানে সিপিএমের পক্ষ থেকে পতাকা লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পতাকা যদি কম পড়ে তাহলে আমাকে বলবেন আমি পাঠিয়ে দেব। আমি তৃণমূলের বিধায়ক নই। বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম সকলে জেনে রাখবেন মদন মিত্র শুধু তৃণমূলের বিধায়ক নন। মদন মিত্র বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেসেরও বিধায়ক। শুধু আগাম বলে রাখি কালীপুজোর পরে গভীর ষড়যন্ত্র এগিয়ে আসছে। আমাদের সেই ষড়যন্ত্রের মোকাবিলা একসঙ্গে করতে হবে। মোকাবিলা আমরা করব। লড়ব আমরা।”
[আরও পড়ুন: কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচন: ‘খাড়গেকে ভোট দিন’, দলবদলের পরেও টুইট করে বিতর্কে প্রণবপুত্র অভিজিৎ]
গত কয়েকমাস ধরে নিয়োগ দুর্নীতি, গরু এবং কয়লা পাচার মামলায় তৎপর ইডি ও সিবিআই। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডলের মতো রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীদের ঠাঁই হয়েছে জেলে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ‘অতি তৎপরতা’ নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। বলেন, “যে দোষী তাকে ধরুন। তবে নির্দোষ শাস্তি যেন না পায়। যদি নির্দোষকে হেনস্তা করার চেষ্টা করেন তাতে আগুন জ্বলবে। আর যে আগুন জ্বলবে তা যমুনার জল দিয়েও নেভানো যাবে না।” তবে মদন মিত্রের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই বিভিন্ন মহলে চলছে জোর আলোচনা। কালীপুজোর পরে কোন ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করেছেন বিধায়ক মদন মিত্র, তা নিয়ে চলছে আলোচনা।
মদন মিত্রের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্যকে হাতিয়ার করে কার্যত রাজ্যের শাসকদলকে তোপ দাগেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “উনি জ্যোতিষচর্চা করছেন বোধহয়। কীসের ষড়যন্ত্র? ওদের পার্টির মধ্যে এতরকম ষড়যন্ত্র হচ্ছে পরস্পরের বিরুদ্ধে, আর বাইরের ষড়যন্ত্র দরকার নেই।” রাজ্য বিজেপি সুকান্ত মজুমদার তৃণমূল বিধায়কের কথায় গুরুত্ব দিতেই চান না। তিনি বলেন, “মদনদার বিভিন্ন কথার উত্তর দেওয়া খুব কঠিন। উনি কখন বলেছেন এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। রাত আটটার পর মদন মিত্র বললে আমরা গ্রাহ্য করি না।” মদন মিত্রের বক্তব্য প্রসঙ্গে রাজ্যের শাসকশিবিরের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি।