দীপঙ্কর মণ্ডল এবং কলহার মুখোপাধ্যায়: করোনার কোপে বাতিল হয়েছে মাধ্যমিক (Madhyamik)। পড়ুয়াদের মূল্যায়ণের বিকল্প পথও বলে দিয়েছে পর্ষদ। সেই মূল্যায়নের জন্য নবম শ্রেণিতে পড়ুয়াদের প্রাপ্ত নম্বর নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হবে স্কুলগুলিকে। আর সেই কাজে সামান্য গরমিল বা অস্বচ্ছতা থাকলে স্কুলগুলির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শনিবার এই মর্মেই হুঁশিয়ারি দিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলন করে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ মাধ্যমিক পরীক্ষার মূল্যায়ণ পদ্ধতি ঘোষণা করে। স্কুলগুলোকে আগামী ২৪ই জুনের মধ্যে মাধ্যমিক ছাত্রছাত্রীদের নবম শ্রেণিতে প্রাপ্ত নম্বর পাঠাতে বলা হয়েছে। মাধ্যমিক মূল্যায়ণ নবম শ্রেণিতে প্রাপ্ত নম্বরের ৫০% এবং দশম শ্রেণির ফরমেটিভ ইভালুয়েশন (১০) -এর প্রাপ্ত নম্বরের পাঁচগুণ করে রেজাল্ট প্রকাশ করা হবে। তাই https://www.wbbsedata.com নামে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। এখানে স্কুল প্রধানরা নিজস্ব তথ্য দিয়ে ওয়েবসাইটে কাজ করতে পারবে।
[আরও পড়ুন: সুস্থ হচ্ছে বাংলা! আড়াই হাজারের নিচে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা]
পর্ষদের নির্দেশমতো স্কুলগুলি আগামী ২১ জুন সকাল ১১টা থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত চারদিনের মধ্যে মাধ্যমিকের সকল ছাত্রছাত্রীদের নবম শ্রেণির নম্বর আপলোড করবে। এই তথ্য আপলোডের সময় ছাত্রছাত্রীদের নাম ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর অনুসারে প্রাপ্ত নম্বর দু’বার করে পরীক্ষা করে নিতে বলা হয়েছে। নম্বর আপলোডের সময় সমস্তরকম সতর্কতা অবলম্বন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও টেব্যুলেশন রেজিস্টারও স্কুলগুলিকে রেডি রাখতে হবে।
পর্ষদ জানিয়েছে, রেজিস্টারে নম্বরের সাথে ওয়েবসাইটে সাবমিট করা নম্বরে যেন কোনওরকম অস্বচ্ছতা না থাকে। সেই রেজিস্টারে নম্বর যাতে পরিবর্তন না করা হয় সে বিষয়েও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এই অল্প সময়ের মধ্যে নম্বর জমা দিতে সমস্যা হতে পারে, তাই শিক্ষক মহলে সময় বৃদ্ধির দাবি উঠেছে। লকডাউন ও স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের অপ্রতুলতা নম্বর পাঠানোয় সমস্যা তৈরি করবে বলে মনে করছেন স্কুল প্রধানরা।
[আরও পড়ুন: তৃণমূলের পালটা! অল্প ব্যবধানে হারা আসনে পুনর্গণনা চেয়ে আদালতে যাবে বিজেপিও]
অন্যদিকে, উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ এদিন বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে ২৩ জুনের মধ্যে একাদশের নম্বর পাঠাতে হবে। সংসদের আঞ্চলিক কার্যালয়ে গিয়ে স্কুলগুলিকে একাদশ-এর নম্বরশিট দিয়ে আসতে হবে। নিয়ম অনুযায়ী একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বর অনেক আগে জমা পড়ে যাওয়ার কথা। সংসদ আগেই ঘোষণা করেছিল ১২ থেকে ২১ মার্চের মধ্যে একাদশের নম্বর জমা দিতে হবে। কিন্তু এদিন প্রায় দু’হাজারের কাছাকাছি স্কুলের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এই স্কুলগুলির হার্ডকপি-সহ নম্বরের তালিকা জমা পড়েনি। মার্চের পর সংসদে এনরোলমেন্ট ফর্ম জমা, প্রজেক্টের নম্বর জমা, প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা নম্বর জমা পড়েছে। তার স্ক্রুটিনিও হয়েছে। এতোগুলো ধাপের পর এতদিন সংসদ কেন চুপ করে ছিল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
শিক্ষক শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, “যেসব স্কুল ইতিমধ্যে তাদের নম্বর জমা দিয়ে দিয়েছে আর যারা এখনও জমা দেয়নি তাদের নম্বরদানের ফারাক বেশি হয়ে গেলে ছাত্র-ছাত্রীদের মূল্যায়ন সমভাবে হবেনা।”