সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে এবার ২৮৮টি আসনের মধ্যে ৭৬টিতেই সরাসরি কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। এমনিতে মহা রাজনীতিতে সার্বিক লড়াই ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতৃত্বাধীন মহাজুটি এবং কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন মহা বিকাশ আঘাড়ি (এমভিএ) জোটের। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে এবার নির্বাচনে কংগ্রেস-বিজেপি সরসরি লড়াইয়ের ৭৬টি আসনের ফলাফল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে চলেছে। এই আসনগুলিই রাজ্যের পরবর্তী সরকারের ভাগ্য নির্ধারণ করবে।
আগামী ২০ নভেম্বর মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচন। এই নির্বাচনে বিজেপি ১৪৮টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। মহাজুটির অন্য শরিক দলগুলির থেকে বেশি আসনে তারা প্রার্থী দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিণ্ডের নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক শিব সেনা ৮০টি কেন্দ্রে, উপ-মুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ারের নেতৃত্বে এনসিপি ৫২ অসনে প্রার্থী দিয়েছে। অঞ্চল ভিত্তিতে বিজেপি বিদর্ভে সর্বাধিক প্রার্থী দিয়েছে (৪৭), তার পরে পশ্চিম মহারাষ্ট্র (৩২), উত্তর মহারাষ্ট্র (১৭), মারাঠাওয়াড়া (১৯) এবং কোঙ্কন, থানে এবং মুম্বই (৩৩) রয়েছে।
এদিকে, এমভিএ-তে কংগ্রেস ১০২টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। জোটের শরিক শিব সেনা (উদ্ধব) ৯৬টি এবং এনসিপি (শরদ) ৮৭টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। বাকি আসনগুলিতে জোটের অন্য শরিকরা প্রার্থী দিয়েছে। যদিও বিজেপি বনাম শিব সেনা (উদ্ধব)-লড়াই ৩০টি আসনে সীমাবদ্ধ থাকবে, বিজেপি বনাম এনসিপির (শরদ) লড়াই হচ্ছে ৩৯টি আসনে। তিনটি আসন– শিরপুর, ডাহানু এবং পানভেলে বিজেপি যথাক্রমে সিপিআই, সিপিএম এবং পিডব্লুপিআই-এর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।
বিদর্ভের তুলা উৎপাদন অঞ্চল কীভাবে ভোট দেবে তার উপর কংগ্রেস ও বিজেপির ভাগ্য নির্ভর করছে। এখানে ৩৬টি আসনে সরাসরি লড়াই হবে দুই দলের মধ্যে। এই অঞ্চলে উপ-মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিস, রাজ্য বিজেপি প্রধান চন্দ্রশেখর বাওয়ানকুলে এবং রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি নানা পাটোলে-সহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক হেভিওয়েটকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেখা যাবে।
২০১৪ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ১২২টি আসন নিয়ে একক বৃহত্তম দল হিসাবে উঠে এসেছিল। সেবার তখন সর্বাধিক আসন বিদর্ভ অঞ্চল থেকে এসেছিল। যেখানে গেরুয়া শিবির বিদর্ভের ৬২টি আসনের মধ্যে ৪৪টিতে জিতেছিল। ২০১৯ সালে অবশ্য সেটা ২৯ আসনে নেমে গেছে। কিন্তু এবার আরএসএস জনগণের কাছে, বিশেষ করে বিদর্ভের মানুষের কাছে পৌঁছনোর জন্য আগ্রাসী হয়ে মাঠে নেমেছে। বিজেপি আত্মবিশ্বাসী যে তারা সেখানে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে। বিজেপি অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির ভোটারদের একত্রিত করা থেকে দলিতদের খুশি করা পর্যন্ত অবশ্যই সংশোধনের বার্তা দিচ্ছে। গত ছয় মাসে, বিজেপি ২৮৮টি আসনেই জনগণের কাছে পৌঁছনোর জন্য একটি বিশেষ দলও তৈরি করেছে। বিজেপির এক রাজ্য নেতা জানিয়েছেন, “বিদর্ভের উপর বিজেপির নির্ভরতা স্বাভাবিক। কারণ সাংগঠনিকভাবে এর একটি শক্তিশালী ভিত্তি রয়েছে। এছাড়াও, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতীন গড়করি, ফড়নবিস এবং বাওয়ানকুলে-সহ শীর্ষ রাজ্য নেতৃত্ব এই অঞ্চল থেকে এসেছেন এবং একে একটি স্বতন্ত্র পরিচয় দিয়েছেন। আমরা অবশ্যই এক নম্বর হচ্ছি। মহাজুটি সরকার গঠনের জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাব।” অপরদিকে, ইতিমধ্যে, কংগ্রেস বিদর্ভের লোকসভার ‘ম্যাজিক’ তৈরি করতে দলিত, মুসলিম এবং কুনবি ভোটে নজর রাখছে।