বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: বিজেপির অস্ত্রেই বিজেপি বধের ছক। মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনে শিবাজী মহারাজকে হাতিয়ার করতে চলেছে কংগ্রেস। শনিবার রাহুল গান্ধীই মহারাষ্ট্রে কংগ্রেসের প্রচারের সূচনা করবেন।
শনিবার হরিয়ানার ভোট, প্রচার শেষ হয়েছে দুদিন আগেই। এবার রাহুলের পাখির চোখ মহারাষ্ট্র। মারাঠা রাজ্যে ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা না হলেও প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়া সিদ্ধান্ত নিলেন সোনিয়া তনয়। শনিবার থেকেই লোকসভার বিরোধী দলনেতা মহারাষ্ট্রে প্রচার শুরু করবেন বলে কংগ্রেস সূত্রে খবর। আজ মহারাষ্ট্রের কোলহাপুরে ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের একটি মূর্তি উদ্বোধন করবেন বলে জানা গিয়েছে। শিবাজী মহারাজকে নিয়ে মারাঠিদের আবেগকে কাজে লাগাতেই রাহুলের এই কৌশল বলে রাজনৈতিক কারবারিরা। প্রচারের শুরুতেই তার এই কৌশল গেরুয়া শিবিরকে অনেকটাই ধাক্কা দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
মহারাষ্ট্রে বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট এখনও ঘোষণা করেনি নির্বাচন কমিশন। মনে করা হচ্ছে আগামী ৮ অক্টোবর জম্মু-কাশ্মীর ও হরিয়ানার বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের দিন মহারাষ্ট্র এবং ঝাড়খণ্ডের ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করবে কমিশন। মহারাষ্ট্রে শনিবার কংগ্রেসের প্রচারের আনুষ্ঠানিক সূচনা করবেন রাহুল গান্ধী। তিনি সরাসরি পৌঁছবেন কোলহাপুরে। মহারাষ্ট্রের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তের এই এলাকাটি বেছে নেওয়ার পিছনে বিরোধী দলনেতা এবং কংগ্রেসের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে। রাহুল দুদিন এই এলাকায় প্রচার চালাবেন। কোলহাপুর নিয়ে রাহুলের রণনীতি কী? কংগ্রেস সূত্রে খবর, কোলহাপুরে রাহুল ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের একটি মূর্তি উন্মোচন করবেন। ছত্রপতি শিবাজীর স্মৃতি বিজড়িত ওই শহরে স্থানীয় কংগ্রেস পুরসভা মূর্তি প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করেছে।
রাহুলের এই মূর্তি প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্তের পিছনে এক সুনিপুণ রাজনৈতিক কৌশল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। গত মাসে মহারাষ্ট্রে শিবাজী মহারাজের একটি মূর্তি ভেঙে পড়ে। সরকারি উদ্যোগে তৈরি ওই মূর্তিটির এবছরের গোড়ায় উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ওই ঘটনায় বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের মুখ পুড়েছে। রাজ্যজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। স্বভাবতই পরিস্থিতি সামলাতে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হয় প্রধানমন্ত্রীকে। রাহুল এই সুযোগে শিবাজী মহারাজের মূর্তি উদ্বোধন করে বিজেপিকে আরও বিপাকে ফেলতে চাইছেন। তবে কোলহাপুর দিয়ে ভোট প্রচার শুরুর সিদ্ধান্ত পিছনে আরও একটি কারণ আছে। রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস ওবিসি ভোট ব্যাংক ফেরাতে বিশেষভাবে তৎপর। ১৯০২ সালে কোলহাপুরেই শাহুজি মহারাজ ওবিসি সম্প্রদায়কে নিয়ে বড় সম্মেলন করেছিলেন। শাহুজি মহারাজ মহারাষ্ট্রের একজন স্বনামধন্য সমাজ সংস্কারক। রাহুল শনিবার সেখানে কংগ্রেসের ডাকে ওবিসি সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। তারপর সেখানে জনসভায় ভাষণ দেওয়ার কথা তাঁর।
জানা গিয়েছে বিজেপিও কংগ্রেস নেতার কৌশলের পাল্টা চাল দিতে প্রস্তুতি শুরু করেছে। বিজেপি সূত্রে খবর, পদ্ম শিবির খুব তাড়াতাড়ি দলিত ও ওবিসি সংগঠনগুলিকে নিয়ে এক সম্মেলনের আয়োজন করতে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দিয়ে সম্মেলন উদ্বোধনের চেষ্টা হচ্ছে। ওই সম্মেলন দিয়েই মোদিও মহারাষ্ট্র বিধানসভার ভোটের প্রচারের আনুষ্ঠানিক সূচনা করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।