সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক্রমশই প্রযুক্তির বিষ সভ্যতাকে বিষিয়ে তুলছে। মোবাইল (Moblile) কিংবা টিভির আসক্তি নষ্ট করে দিচ্ছে মানুষে মানুষে সম্পর্ক, ধ্বংস করছে মানুষের মনঃসংযোগ। সমাজবিদরা বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও যেন হুঁশ ফিরছে না মানুষের। এই অবস্থায় সকলকে যেন পথ দেখাচ্ছে মহারাষ্ট্রের এক গ্রাম। সেখানে সন্ধে ৭টা থেকে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত টিভি কিংবা মোবাইল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পঞ্চায়েত। আপাতত বিষয়টা ঐচ্ছিক। কিন্তু শিগগিরি তা বাধ্যতামূলক করা হবে। না মানলে দিতে হবে জরিমানাও।
মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) কোলাপুর জেলার মনগাঁও এক ঐতিহাসিক গ্রাম। ১৯২০ সালের মার্চে এই গ্রামেই শুরু হয়েছিল অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে আন্দোলন, যার পুরোভাগে ছিলেন স্বয়ং আম্বেদকর। এছাড়াও বিধবা বিবাহ নিয়েও সরব হয়েছিল এই গ্রাম। কয়েক দশক পেরিয়ে সেই মনগাঁওই এক নতুন লড়াই শুরু করতে চলেছে। গত ২৬ জানুয়ারি পঞ্চায়েতের বৈঠকে বিষয়টি আলোচনা হয়। আগামী ৮ মার্চ, নারী দিবস।
[আরও পড়ুন: বিশ্বকাপ জেতার ঠিক পরেই এমবাপেকে কী বলেছিলেন মার্টিনেজ? নিজেই জানালেন আর্জেন্টাইন গোলকিপার]
সেই দিনই শুরু হতে চলেছে এই নয়া নিয়ম। সময়মতো বাজানো হবে সাইরেন। তখনই বন্ধ করে দেওয়া হবে সমস্ত ফোনও টিভি। ওই সময়টায় বই পড়া কিংবা পরিবারের সদস্যদের মধ্যে গল্প করারই পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। গ্রামের সরপঞ্চ রাজু ম্যাগডাম বলছেন, ”আমরা সকলেই সেলফোন ও টেলিভিশনে আসক্ত। যার ফলে মনঃসংযোগ নষ্ট হচ্ছে। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কথাবার্তা কমে আসছে। ফলে পরবর্তী সময়ে সৃষ্টি হচ্ছে পারিবারিক সমস্যা।”
আপাতত বিষয়টি ঐচ্ছিক। কিন্তু এরপর তা বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হবে বলেই জানাচ্ছেন সরপঞ্চ। এরপর লক্ষ রাখা হবে। যদি ১৫ হাজার জনসংখ্যার ওই গ্রামের কোনও পরিবার পাঁচবার এই নিয়ম ভাঙে, তাহলে ষষ্ঠ বার থেকেই সেই পরিবারের উপরে সম্পত্তি করের হার বাড়িয়ে দেওয়া হবে। কেবল অপারেটরদের ইতিমধ্যেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ওই সময় সম্প্রচার বন্ধ রাখার জন্য। সব মিলিয়ে এক নয়া সূচনার স্বপ্ন দেখাচ্ছে মহারাষ্ট্রের গ্রামটি। বাকি দেশও একদিন অনুসরণ করবে তাদের, আশা ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের।