সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রক্ত, ঘাম ও চোখের জলে লেখা এ যেন এক নতুন মহাকাব্য! প্রথাগত যুদ্ধের সংজ্ঞা বদলে দিয়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্লেষকদের কাছে এক প্রহেলিকা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ‘গোলিয়াথ’ রুশ সেনাকে যেভাবে কিয়েভের ‘লিলিপুট’ বাহিনী রুখে দিয়েছে, তা দেখে রীতিমতো অবাক সমর বিশেষজ্ঞরা। এই প্রেক্ষাপটে এবার রুশ অধিকৃত বাখমুটের কাছে চলা লড়াইয়ে বড়সড় জয় পাওয়ার দাবি করেছে ইউক্রেনের সেনা।
গত দেড় বছর ধরে চলছে দুদেশের রক্তক্ষয়ী সংঘাত। রণক্ষেত্রের ছবি পালটে ‘কাউন্টার অফেন্সিভ’ কৌশলে আক্রমণ শানাচ্ছে জেলেনস্কি বাহিনী। রুশ সেনাকে পালটা মার দিয়ে বাখমুট শহরের দক্ষিণ ও পূর্বের কিছু অঞ্চল ইতিমধ্যে দখল করেছে ইউক্রেনের ফৌজ। রবিবার এই বিষয়ে মুখ খোলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেন, “আমি সেনার সাহসী জওয়ানদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। বাখমুট-সহ ধীরে ধীরে তাঁরা ইউক্রেনের হারানো জমি উদ্ধার করছে।”
বলে রাখা ভালো, হারানো জমি উদ্ধার করতে গত জুন মাস থেকে কাউন্টার অফেন্সিভ বা পালটা আক্রমণ শুরু করেছে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী। নকশা মোতাবেক বাখমুট উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। তবে শহরটিতে রুশ সেনার বিরাট ঘাঁটি রয়েছে। প্রবল মার আসছে সেদিক থেকেও। বাখমুটের দক্ষিণে, শহর থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে চলছে প্রবল লড়াই। কিয়েভ জানিয়েছে, ইতিমধ্যে আন্দ্রিভকা গ্রাম দখলমুক্ত করা হয়েছে। ইউক্রেন সেনার কমান্ডার ওলেকসান্দ্র সিরিস্কি একটি ভিডিও প্রকাশ করে জানিয়েছেন, ‘ক্লিশ্চিভিকা গ্রাম থেকে রুশ হানাদারদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’
[আরও পড়ুন: ক্রিমিয়ায় জেলেনস্কির সম্পত্তি বেচে দিচ্ছে রাশিয়া!]
উল্লেখ্য, প্রায় দেড় বছর ধরে যুদ্ধ চলছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউক্রেনে আসলে ছায়াযুদ্ধ চালাচ্ছে আমেরিকা, ন্যাটো ও পশ্চিমের দেশগুলো। সরাসরি ইউক্রেনে সৈন্য পাঠায়নি কোনও দেশ। তবে ইউক্রেনকে অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছে বেশ কয়েকটি দেশ। তার মধ্যে অন্যতম আমেরিকা (USA)। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, একটি রুশ ট্যাঙ্কের অনুপাতে দশটি অ্যান্টি আর্মার সিস্টেম পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও বিপুল পরিমাণে মিসাইল, গ্রেনেড লঞ্চার, হেলিকপ্টার, ড্রোন, মেশিন গান, রেডার সিস্টেম ইত্যাদি পাঠানো হয়েছে ইউক্রেনে। রুশ হামলার মোকাবিলা করতে ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠিয়েছে ব্রিটেন, চেক প্রজাতন্ত্র, জার্মানি-সহ আরও বেশ কিছু ইউরোপীয় দেশ।