সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিরোধিতার সুর উধাও। বরং ভারতে পা রেখে বন্ধুত্বের বার্তা দিলেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু। জানালেন, ভারতের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কোনও পদক্ষেপ করবে না মালদ্বীপ। পাশাপাশি ভারতীয় পর্যটকদের মালদ্বীপে আসার আবেদন জানালেন তিনি।
চারদিনের সফরে সস্ত্রীক ভারতে এসেছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু। রবিবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে চিন প্রসঙ্গে মুইজ্জু বলেন, "মালদ্বীপ এমন কোনও কাজ করবে না, যাতে ভারতের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়। মালদ্বীপ ও ভারতের সম্পর্ক পারস্পরিক সম্মান ও আগ্রহের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। আমাদের দেশের বাণিজ্য ও উন্নয়নের অন্যতম অংশীদার ভারত। প্রতিরক্ষা-সহ আরও একাধিক ক্ষেত্রে মালদ্বীপের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।" শুধু তাই নয়, সুর নরম করে মুইজ্জু আরও বলেন, "প্রতিবেশী ও বন্ধুদের সম্মান করা আমাদের ডিএনএ-তে মিশে রয়েছে। ভারতীয়রা আমাদের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব রাখে। ভারতীয় পর্যটকদের আমাদের দেশে স্বাগত জানাচ্ছি।"
যদিও কয়েকমাস আগেও এতটা নরম ছিল না মালদ্বীপ। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লাক্ষাদ্বীপ সফরের পর থেকে তাল কাটে দিল্লি-মালের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের। সংঘাত তুঙ্গে ওঠে। মোদিকে নিয়ে নানা বিতর্কিত মন্তব্য করেন যুব, তথ্য ও শিল্প মন্ত্রকের দুই মন্ত্রী মালশা শরীফ এবং মরিয়ম শিউনা-সহ আর এক মন্ত্রী আবদুল্লাহ মাহজুম মজিদ। গোটা ভারত জুড়ে শুরু হয় ‘বয়কট মালদ্বীপ’। এই পরিস্থিতিতে চাপ বাড়তে থাকে মালদ্বীপের উপরে। শুধু তাই নয়, মাঝে মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা সরিয়ে নেওয়ার জন্যও বলেছিল সে দেশের সরকার। সব মিলিয়ে দুই দেশের সম্পর্কে যথেষ্ট ফাটল তৈরি হয়।
তবে ভারত বিরোধী মনোভাবে যে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি তা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারার পর তা বেশ বুঝতে পারেন মহম্মদ মুইজ্জু। এই অবস্থায় কূটনৈতিক মহলের অনুমান, দিল্লির সঙ্গে বন্ধুত্ব পুনরায় মজবুত করতে উদ্যোগী তিনি। ৪ মাস আগে নরেন্দ্র মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে ভারতে এসেছিলেন মুইজ্জু। সম্প্রতি ভারতে এসে ফের ভারতীয়দের মালদ্বীপ ভ্রমণের আবেদন জানান সেখানকার পর্যটনমন্ত্রী ইব্রাহিম ফয়জল। পাশাপাশি জানা যায়, মোদিকে নিয়ে অপমানজনক মন্তব্য করেছিলেন যে দুই মন্ত্রী তাঁরা পদত্যাগ করেছেন।
এর পর ভারত-মাল সম্পর্কের টানাপোড়েন কাটাতে রবিবার ভারতের মাটিতে পা রাখেন মহম্মদ মুইজ্জু। সেদিনই বিদেশমন্ত্রী জয়শংকরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। সোমবার সকালে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে রাজঘাটে গান্ধীজির সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করতে যান। আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে তাঁর। তবে সেই সাক্ষাতের আগেই বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিলেন মুইজ্জু।