ধীমান রায়, কাটোয়া: সরকারি হাসপাতালে মহিলা রোগীদের পরিচর্যায় পুরুষ কর্মী! এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কাটোয়ায়। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের (Katwa Hospital) হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) রোগিনীদের ক্যাথিটার পরানো থেকে শৌচকর্ম-সহ যাবতীয় পরিচর্যা মূলত পুরুষদেরই করতে হয়। অভিযোগ, হাসপাতালে মহিলার কর্মীর অভাব রয়েছে।
মহিলা রোগীদের দেখভালের দায়িত্বে পুরুষ কর্মীরা, এ নিয়ে প্রশ্ন তুলে জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরে নালিশ জানিয়েছেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক প্রৌঢ়ার ছেলে। অভিযোগে তিনি জানিয়েছেন, একজন পুরুষ কর্মবন্ধু দিয়ে মহিলা রোগিনীর পরিচর্যা ‘মর্যাদাহানিকর’। এর ফলে তাঁর মা সুস্থ হওয়ার পরিবর্তে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলে দাবি করেছেন কাটোয়া শহরের বাগানে পাড়ার বাসিন্দা কাজী মঞ্জুয়ারা বেগম নামে ওই রোগিনীর ছেলে কাজী রুহুল আমিন। তিনি হাসপাতালের এইচডিইউতে (HDU) মহিলা কর্মবন্ধু নিয়োগের দাবি তুলেছেন।
[আরও পড়ুন: ছোটপর্দায় ফিরছেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, কোন ভূমিকায় দেখা যাবে তারকাকে?]
হাসপাতাল সূত্রে খবর, একটি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে ৬ জন মহিলা-সহ মোট ১৯ জন কর্মবন্ধুকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়োগ করা হয়েছে ৷ প্রসূতি ও শিশু বিভাগের পাশাপাশি এইচডিইউ বিভাগে একজন মহিলা কর্মবন্ধুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি মাস খানেক আগে এইচডিইউ বিভাগের ওই মহিলা কর্মবন্ধু চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে যাওয়ার পর থেকে তাঁর পরিবর্তে একজন পুরুষ কর্মবন্ধুকে দিয়ে রোগিনীর পরিচর্যার কাজ করানো হচ্ছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর ছেলে কাজী রুহুল আমিন জানান,তাঁর মায়ের রক্তে উচ্চ শর্করা,ফুসফুসে সংক্রমণ, থায়রয়েড-সহ একাধিক সমস্যা রয়েছে। শারীরিক সমস্যা দেখা দেওয়ায় গত ২২ এপ্রিল মাকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করেন। কিন্তু তিনি ওই ইউনিটে কোনও মহিলা কর্মবন্ধু না থাকায় ক্যাথিটার পরানো থেকে বাথরুম করানো-সহ যাবতীয় কাজ পুরুষ কর্মবন্ধুদের দিয়েই করানো হয়। এতে অস্বস্তিতে পড়ছেন তাঁর মা। এর জেরে সুস্থ হওয়ার পরিবর্তে তার মায়ের সুগার ও প্রেসার ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে। কাজী রুহুল আমিন বলেন, “একজন রোগিনীর পরিচর্যা পুরুষ কর্মবন্ধুকে দিয়ে করানো যে কোনও মহিলার কাছে মর্যাদাহানিকর। তাই আমি হাসপাতালের এইচডিইউ বিভাগে মহিলা কর্মবন্ধু নিয়োগের জন্য হাসপাতালের সুপারিন্টেন্ডেন্ট ও মেডিক্যাল অফিসারকে ইমেল করেছি। হাসপাতালের সুপার ও অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারের নজরেও আনি বিষয়টি। কিন্তু কারওর কাছ থেকে কোনও সদুত্তর পাইনি। তাই বাধ্য হয়ে আমি জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি।”
[আরও পড়ুন: ‘বিহার থেকে লোক এনে কালিয়াগঞ্জে তাণ্ডব’, পুলিশের ‘ভুল’ মেনেও বিজেপিকে তোপ মুখ্যমন্ত্রীর]
এই বিষয়ে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার সুশান্তবরণ দত্ত বলেন, “আমাদের হাসপাতালে এইচডিইউ বিভাগ চালু হওয়ার সময় থেকেই পুরুষ কর্মবন্ধুরাই মূলত রোগিনীদের যাবতীয় পরিচর্যা করে আসছেন। মহিলা কর্মবন্ধু নিয়োগের কোনওরকম নির্দেশিকা নেই। তবু এই বিষয়ে অভিযোগ ওঠায় বিষয়টি আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।”